
২০১৯ সালের ২৪ মে তারিখে বাহরুজ বুশানি টিইডিএক্সসিডনির কথা বলেন। এরিক ফোনাসিয়ার/ ভিশনএয়ার মিডিয়ার ছবি। সূত্র: টিইডিএক্সসিডনির ফ্লিকার অ্যাকাউন্ট (সৃজনী সাধারণ অবাণিজ্যিক অপরিবর্তনযোগ্য অনুমোদন ২.০)
ইরানি লেখক বাহরুজ বুশানি ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় চাওয়ার পর পাপুয়া নিউ গিনির একটি দ্বীপান্তরিত আটক ক্যাম্পে ছয় বছর বন্দি থাকার পর দ্বীপান্তরিত আটক কেন্দ্রের শরণার্থীদের মুক্তির আহ্বান জানানো একটি খসড়া আইন সমর্থন করতে রাজধানী ক্যানবেরায় পৌঁছান।
রাজনৈতিক সক্রিয়তার জন্যে কারাদণ্ডের হুমকির মুখে বুশানি ২০১৩ সালে ইরান ত্যাগ করেন। অন্যান্য শরণার্থীদের সাথে একটি নৌকায় থাকা অবস্থায় অস্ট্রেলীয় সীমান্ত রক্ষীরা গ্রেপ্তার করে তাদের পাপুয়া নিউ গিনির মানুস দ্বীপে পাঠিয়ে দেয়।
তিনি হোয়াটসঅ্যাপে তার অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করে অস্ট্রেলীয় সাংবাদিক ও অনুবাদকদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। পরে তিনি “পাহাড় ছাড়া কোন বন্ধু নেই: মানুস কারাগার থেকে লেখা” শিরোনামে একটি স্মৃতিকথা প্রকাশ করলে সেটা ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে সাহিত্যের জন্যে ভিক্টোরীয় পুরস্কার এবং প্রবন্ধের জন্যে ভিক্টোরীয় প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার জেতে।
২০১৯ সালের আগস্টে গ্লোবাল ভয়েসেসের লেখক ফ্রেড পেট্রোসিয়ানের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে বুশানি অস্ট্রেলিয়ার দ্বীপান্তরিত আটক কেন্দ্রগুলিতে শরণার্থীদের দুর্দশার কথা বলেন:
এটা জোর দিয়ে বলা খুবই জরুরি যে এইসব শিবিরে কোন মানবাধিকার ছিল না। কারাগারে অপরাধীরা এমনকি সবচেয়ে খারাপ ব্যবস্থাতেও ফোন কল করার মতো কিছু মৌলিক অধিকার ভোগ করলেও এই শিবিরগুলিতে শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীরা সেইসব মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল।
মুক্তির জন্যে বিশ্বব্যাপী একটি ধারাবাহিক প্রচারণা চলার পর ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে বুশানি নিউজিল্যান্ডে প্রবেশ করেন এবং পরের বছর তার আশ্রয় অনুমোদিত হয়।
তার নতুন বই “স্বাধীনতা, শুধু স্বাধীনতা, বাহরুজ বুশানির জেলখানায় লেখা” প্রচার করতে তিনি এই মাসের শুরুতে অস্ট্রেলিয়া সফর করেন।
তিনি নাউরু দ্বীপ এবং পাপুয়া নিউ গিনির অবশিষ্ট ১৫০ জন শরণার্থীকে অবিলম্বে সরিয়ে নিয়ে তাদের অস্ট্রেলিয়ার অস্থায়ী ভিসা দেওয়ার গ্রিনস পার্টি প্রস্তাবিত একটি খসড়া আইনকে সমর্থন করতে ক্যানবেরাস্থ সংসদে যান।
বুশানি সংসদ ভবনে প্রবেশ করার সময় তার অনুভূতি সম্পর্কে টুইট করেন:
I was in the Australian parliament almost all day yesterday and met with many politicians, journalists and political advisors after the speech there. It was very surreal for me to be in a place that for years I criticised from the offshore prisons pic.twitter.com/FYfAFq8QKu
— Behrouz Boochani (@BehrouzBoochani) February 8, 2023
আমি গতকাল প্রায় সারাদিন অস্ট্রেলিয়ার সংসদে ছিলাম। বক্তৃতা শেষে সেখানে অনেক রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক উপদেষ্টাদের সাথে দেখা করেছি। বছরের পর বছর ধরে দ্বীপান্তরিত কারাগার থেকে সমালোচনা করার পর সেই জায়গাতেই অবস্থান করাটা আমার জন্যে খুবই পরাবাস্তব ছিল।
মানবাধিকার প্রচারকরাও তার সফরের প্রভাব তুলে ধরে:
The power of @BehrouzBoochani in Parliament yesterday cannot be underestimated.
Not only because he was told he would never come to Australia but because of what he has exposed. He spoke truth to power that comes from resistance, advocacy, determination and bravery.
A thread 🧵 pic.twitter.com/0BI3aNygiI— Jana Favero 🇮🇹⚽️ (@janafavero) February 7, 2023
গতকাল সংসদে @বাহরুজবুশানির ক্ষমতাকে অবমূল্যায়ন করা যাবে না।
কারণ শুধু এটা নয় যে তিনি যা প্রকাশ করেছেন তার কারণে তাকে কখনোই অস্ট্রেলিয়ায় আসতে বারণ করা হয়। তিনি প্রতিরোধ, সমর্থন, সংকল্প ও সাহসিকতা থেকে উদ্ভূত সত্যের শক্তির কথা বলেন।
একটি আলোচনাসূত্র
এর আগে তাকে দশ বছর আগে প্রবেশ করতে বাধা দেয়া একটি দেশে যাওয়ার বিষয়ে তিনি কী মনে করেন সেটা জিজ্ঞেস করা হয়:
.@frankelly08 asks @BehrouzBoochani how he felt ahead of his trip to Australia: “I cannot ignore my connection to this country, there is still so much to do. But the best thing about my trip is that I’m free to go back to New Zealand whenever I want, so it’s not like before”
— UNSW Kaldor Centre (@KaldorCentre) February 9, 2023
অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে @বারহুজবুশানিকে @ফ্রাংকেলি০৮ তিনি কেমন অনুভব করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন: “আমি এই দেশের সাথে আমার সংযোগ উপেক্ষা করতে পারি না, এখনো অনেক কিছু করার আছে। তবে আমার ভ্রমণের সবচেয়ে ভালো বিষয় হলো আমি চাইলেই নিউজিল্যান্ডে ফিরে যেতে পারি, তাই ব্যাপারটি আর আগের মতো নেই”
সংসদে অনুষ্ঠিত একটি ফোরাম চলাকালীন এবিসির একটি প্রতিবেদনে বুশানি উল্লেখ করেন যে সরকারের পরিবর্তন সত্ত্বেও এখনো সংস্কার হয়নি:
বহু বছর ধরে আমি অস্ট্রেলিয়া দেখছিলাম, বিশেষ করে আমি এই সংসদ পর্যবেক্ষণ করছিলাম এবং কখনোই এই সংসদ বাস্তব কোন সমাধান আসেনি।
এবং পুরোটা দশক পরেও এখনো সেই ট্র্যাজেডি অব্যাহত রয়েছে।
আল জাজিরার সাথে একটি সাক্ষাৎকারে বুশানি শরণার্থীদের তাদের চিন্তাভাবনা প্রকাশ করতে উৎসাহিত করেন:
অনেক উদ্বাস্তু ক্ষমতায়িত বোধ করে, অনেক উদ্বাস্তু অনুপ্রাণিত হয় এবং অনুভব করে যে তারা তাদের নিজস্ব গল্প বলতে পারে, তারা লিখতে পারে, তারা লড়াই করতে পারে।
শুধু মানুস দ্বীপেই নয়, নাউরু এবং সারা বিশ্বের কাছে আপনি কি লেখেন, এমনকি যদি আপনি একটি প্রেমপত্রও লেখেন সত্যিই তা বিবেচ্য না হলেও নয়, শুধু আপনার মর্যাদা প্রদর্শন করার মতো কোন লেখা ছাড়া।