- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

অ্যান্টনি জোসেফ তিন বছরের মধ্যে কবিতায় টিএস এলিয়ট পুরষ্কার বিজয়ী ত্রিনিদাদের দ্বিতীয় নাগরিক

বিষয়বস্তু: ক্যারিবিয়ান, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, নাগরিক মাধ্যম, শিল্প ও সংস্কৃতি, সাহিত্য
[1]

কবিতার জন্যে ২০২২ সালের টিএস এলিয়ট পুরষ্কার বিজয়ী ত্রিনিদাদ বংশোদ্ভূত-ব্রিটিশ লেখক অ্যান্টনি জোসেফের পর্দাছবি। ‘ইংল্যান্ডের ঘরে ফেরার ডাক – নতুন বিকন বই অধিবেশন’ ইউটিউব ভিডিও [1] থেকে নেওয়া। পোস্ট করেছেন হেভেনলি সুইটনেস।

যৌক্তিকভাবেই কবিতা্র জগতের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ টিএস এলিয়ট পুরষ্কার “যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্রে প্রথম প্রকাশিত ইংরেজি নতুন পদ্যের সেরা সংগ্রহকে সম্মান জানায় [2]।” ত্রিনিদাদ বংশোদ্ভূত-ব্রিটিশ কবি রজার রবিনসন তার কবিতা সংগ্রহ “একটি বহনযোগ্য স্বর্গ” এর জন্যে ২০২০ সালে এই পুরষ্কারটি জিতেছিলেন [3]। মাত্র তিন বছর পরে, ১৬ জানুয়ারি তার স্বদেশী ত্রিনিদাদের অ্যান্টনি জোসেফ [4] “অ্যালবার্টের জন্যে চতুর্দশপদী” দিয়ে তার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন [5] যাকে বিচারকরা “সমস্ত দ্বন্দ্বের মধ্যে মানবতাকে উদযাপনকারী এবং এই স্থায়িত্বের সাথে নতুন জীবনের শ্বাস নেয়া একটি আলোকিত সংগ্রহ বলে অভিহিত করেছে।”

জোসেফ নিজেই বলেছেন বইটি “ক্ষতি এবং প্রেম সম্পর্কিত।” নিজের পিতাকে “বাবা হিসেবে খুব মহান ছিলেন না” স্বীকার করে জোসেফ ব্যাখ্যা করেন [6] যে সংকলনটি তাকে “তার পিতার “এবং তার অনুপস্থিতির প্রভাবকে” “উপলব্ধি করতে” সাহায্য করেছিল [7]

অ্যালবার্টের জন্যে চতুর্দশপদী ২০২২ সালের ১৩ অক্টোবর প্রাথমিকভাবে পুরষ্কারের ছোট তালিকাভুক্ত ঘোষণা করা হলে জোসেফ তার ফেসবুক পৃষ্ঠায় বলেন [8]:

আমার পিতা অ্যালবার্টের ভাষাগত ব্যবধান থাকলেও তার অনুপস্থিতি এবং নীরবতা আমাকে আজকের এই কবি হতে সাহায্য করেছিল।

শেষ পর্যন্ত তার জয়ের বিষয়ে তিনি বলেন [8]:

গত রাতে এটি ঘোষণা করার সময়ের তুলনায় আজ আমি কিছুটা কম অস্পষ্ট। তবে সেটা মিইয়ে যেতে শুরু করেছে এবং অনেকটা বাস্তব বোধ হচ্ছে। মূল্যবান সঙ্গের জন্যে ছোট তালিকার সবার প্রতি অনেক ভালবাসা।

ত্রিনিদাদ এবং টোবাগো নিউজডে সংবাদপত্রের জন্যে তার জয়ের কথা লিখতে গিয়ে ২০২১ সালে “সম্পূর্ণ আসল” কালো শঙ্খের মৎস্যকন্যার জন্যে কোস্টা বর্ষসেরা বই জেতা [9] তার বন্ধু ও সহকর্মী ত্রিনিদাদ বংশোদ্ভূত-ব্রিটিশ লেখিকা মনিক রফি উল্লেখ করেন [10] “জোসেফের অ্যালবার্টের জন্যে চতুর্দশপদী একটি মহৎ কীর্তি এবং সমসাময়িক ক্যারিবীয় সাহিত্যে একটি বড় অবদান”:

ত্রিনিদাদের আঞ্চলিক ভাষায় রচিত চতুর্দশপদী সংকলনের কবিতাগুলি ক্যারিবীয় পুরুষতন্ত্রের একটি পরীক্ষা এবং অনেকটা অনুপস্থিত পিতার যৌগিক প্রতিকৃতি; এগুলি এমন একটি কাজ যা তার বিষয়টিকে জবাদিহিতা ও নিষ্পৃহতা উভয়ের মাধ্যমেই বোঝে।

এই ধরনের সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে কাজ করার সময় কাজটি নিজেই হারিয়ে গিয়ে আকর্ষণহীন ও পানসে হয়ে যেতে পারে। তবে রোফি “আবেগ প্রবণতার দিকে গড়িয়ে” না যাওয়ার জন্যে সংকলনটির প্রশংসা করেন।

মজার বিষয় হলো জোসেফ ২০১৯ সালের বিজয়ীর সাথে সুরের প্রতি ভালবাসা ভাগাভাগি করেছেন। যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকা বর্ণিত [11]স্বভাব [12] কবি” রবিনসনের ব্যান্ডদল রাজা মাইডাসের শব্দ [13] কয়েকটি অ্যালবাম তৈরি করে; জোসেফেরও একটি ব্যান্ডদল আছে [14]। কবি হিসেবে জোসেফ অনেকটাই স্বশিক্ষিত উল্লেখ করে রোফি বলেন [10] “প্রথম থেকেই [তিনি] ভাষা, ক্রেওল উপভাষা এবং সাহিত্যের সমস্ত রূপের সাথে একাত্ম হয়ে গেছেন”:

শব্দ নিয়ে খেলতে গিয়ে তিনি জানেন কারা তার দেবদেবী (ওয়ালকট [15], ব্রেথওয়েইট [16], কার্টার [17] এবং অড্রে লর্ড [18]) এবং তার বাড়ি যে ত্রিনিদাদে।

ঘটনাচক্রে নোবেলজয়ী ডেরেক ওয়ালকটকে সাদা বক [19] এর জন্যে ২০১১ সালে টিএস এলিয়ট পুরস্কার দেওয়া হয় [20]

একজন টুইটার ব্যবহারকারী সবসময় ত্রিনিদাদ ও টোবাগো সংস্কৃতিকে তার কাজে অন্তর্ভুক্ত করার জন্যে জোসেফকে সেলাম জানান:

#টিএস এলিয়ট #কবিতা পুরষ্কার বিজয়ী #অ্যান্টনি জোসেফ কথ্য শব্দ ও #ত্রিনিদাদের শব্দ মিশিয়ে #সুর তৈরি করে চলেছেন …. #ক্যালিপ্সো গায়ক #লর্ডকিচেনারের কাল্পনিক জীবনী #কিচ এর মতো উপন্যাসও লিখেছেন
তার @স্পটিফাই পৃষ্ঠা https://t.co/YqEfZcv6ge

সৃজনশীল লেখার উপর জোসেফের বক্তৃতা দেওয়া লন্ডনের কিংস কলেজের একটি ফেসবুক বার্তা [32]সহ বিভিন্ন [33] সামাজিক গণমাধ্যম চ্যানেলগুলিতে অভিনন্দন উপচে পড়ছে [34]

গ্যাব্রিয়েলা গে গর্বের সাথে লেখা পোস্ট করেন [35]:

অভিনন্দন যথাযোগ্য। আর ত্রিনি ত্রিনি ত্রিনি।

ফেসবুক ব্যবহারকারী থম ক্রস জোসেফের সংকলনকেএক কথায় [36] “ক্যালিপসো চতর্দশপদী কবিতা” হিসেবে অভিহিত করেন। এদিকে জন আর লি এটিকে প্রধান বিচারকের সাহিত্যিক সম্প্রদায়কে একটি বই তৈরির জন্যে গ্রহণ করার বিষয়ে মন্তব্যের তাৎপর্য উল্লেখ করে বলেন [37]:

আগে থেকেই যতোটা থাকুক না কেন আমি বিশেষ করে ক্যারিবীয় লেখক এবং “সাহিত্য সংস্থাগুলি”র সাথে এটি ভাগাভাগি করে নেওয়া দরকারী এবং সহায়ক বলে মনে করি।

ত্রিনিদাদের অনেক লেখকের কাঁধে জোসেফ যে দাঁড়িয়ে আছেন সেটা মেনে নিয়ে [10] রোফি ক্যারিবীয় সাহিত্যিক ভ্রাতৃত্বের জন্যে জোসেফের জয়ের তাৎপর্যকেও স্বীকৃতি দিয়েছেন:

তার প্রায় সমস্ত কাজই তার জন্মভূমি ত্রিনিদাদ থেকে উৎসারিত এবং এর প্রতি উৎসর্গীকৃত হলেও আজ ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে অ্যান্টনি জোসেফ ত্রিনিদাদীয় লেখকগোষ্ঠীরই একজন, কারণ ১৯৫০ এর দশক থেকে কতজন ত্রিনি লেখক এই জায়গা থেকে বাদ পড়েছে তা উপেক্ষা করা সম্ভব নয়।

অভিনন্দন, অ্যান্টনি। ত্রিনি গর্বিত।

জোসেফের পুরস্কার গ্রহণের বক্তৃতাটি এখানে [38]