- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

পার্বত্য ইহুদি: আজারবাইজানের একটি সংখ্যালঘু জীবনের এক ঝলক

বিষয়বস্তু: মধ্য এশিয়া-ককেশাস, আজারবাইযান, ইজরায়েল, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, জাতি-বর্ণ, দেশান্তর ও অভিবাসন, ধর্ম, নাগরিক মাধ্যম, ভাষা, শিল্প ও সংস্কৃতি

উত্তর আজারবাইজানে সম্প্রদায়ের কেন্দ্র কিরমিজি কাসাবার (লাল শহরের) পার্বত্য ইহুদিদের উদযাপন করা কার্পেট। ফিলিপ নুবেলের ছবি, অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।

আজারবাইজানি ভাষায় “জুহুরো” বা “দাগ ইহুদিলারি” নামে পরিচিত আজারবাইজানের অন্যতম একটি জাতিগোষ্ঠী পার্বত্য ইহুদিরা এসেছে পারস্য থেকে। বেশিরভাগ ইসরায়েল এবং অন্যত্র স্থানান্তরিত হলেও আজারবাইজানে তাদের কেউ কেউ থেকে গেছে [1] এবং সম্প্রদায়টি এই দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পারসিক ইহুদিদের থেকে আসা יהודי קוקז (এহুদি কাভকাজ) বা ককেশাস ইহুদি নামেও পরিচিত এই সম্প্রদায়টি ছোট ছোট গোষ্ঠী আকারে রাশিয়া এবং উত্তর ককেশাসসহ প্রধানত আজারবাইজানে বসবাস করে। তাদের সংখ্যা আনুমানিক ২০ থেকে ৫০ হাজার [2] এর মধ্যে এবং তাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হলো পুরোপুরি পার্বত্য ইহুদি অধ্যুষিত একটি শহর আজারবাইজানের উত্তর দিকের প্রশাসনিক এলাকা গুবার কিরমিজি কাসাবা [3]  (লাল গ্রাম বা ক্রাস্নাইয়া স্লোবাদা [3]) এবং অন্যান্যরা দেশটির রাজধানী বাকু এবং অন্যান্য শহরে বাস করে। কিছু কিছু সূত্র [4] অনুসারে গ্রামটি “ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বিশ্বের একমাত্র ইহুদি শহর।”

পারসিক উৎপত্তির কারণে তাদের ঐতিহ্যবাহী ভাষা হলো জুদিও-তাত [5] যাকে স্থানীয়ভাবে জুহুরিও বলা হয় যা ফার্সি, হিব্রু এবং তুর্কি শব্দ মিশ্রিত একটি ফার্সি ভাষা। এর ইতিহাস হিব্রু, ল্যাটিন এবং সিরিলিক বর্ণমালায় লিখিত। পার্বত্য ইহুদিরা আশকেনাজিম এবং সেফার্ডিম সম্প্রদায় থেকে ভিন্ন তাদের নিজস্ব ইহুদি ধর্মের ঐতিহ্য [6] বজায় রেখেছে।

এই তথ্যচিত্রটির ব্যাখ্যা অনুসারে, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের সাথে সাথে উত্তর এবং দক্ষিণ ককেশাসে একাধিক সংঘাতের ফলে একটি কঠিন অর্থনৈতিক পরিবর্তনের কারণে সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশ ইস্রায়েলে চলে যায় যেখানে তাদের সংখ্যা এখন আনুমানিক এক থেকে দেড় লক্ষ [2]:

কিউ গ্যালারিতে নিজের বোনা একটি কার্পেট প্রদর্শনকারী একজন পার্বত্য ইহুদি নারী। ফিলিপ নুবেলের ছবি, অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।

তবুও অনেকেই আজারবাইজানের সাথে দৃঢ় সংযোগ বজায় রেখেছে, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে [7] বেড়াতে আসার জন্যে কিরমিজি কাসাবায় তারা বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে। বর্তমানে বার্লিনের কিউ গ্যালারি [8]তে একটি প্রদর্শনীতে এমনই “একটি জনগোষ্ঠীর ইতিহাস” প্রদর্শিত হচ্ছে।

আসলে ১৯ শতকের গোড়ার দিকে রুশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত পার্বত্য ইহুদিদেরকে জমির মালিকানার অনুমতি দেওয়া হলে তারা রেশম ও কার্পেট তৈরির পাশাপাশি তাদের তামাক ও মদ তৈরির নিজস্ব স্থানীয় শিল্প গড়ে তোলে। প্রদর্শনীটি প্রধানত নারীদের কর্মকাণ্ড নির্ভর কার্পেট তৈরির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে – যা গ্যালারিতে কার্পেট, ছবি ও চিত্রকর্মের মাধ্যমে প্রদর্শিত হয়েছে।

এখানে কার্পেট বুননকারী নারীদের উদযাপন করা হয়েছে যাদের কাছে একটি কার্পেট পারিবারিক গৌরব ও প্রতিটি গৃহের সাজসজ্জার মূল উপাদান:

এখানে নারী কার্পেট নির্মাতাদের একটি চিত্র একটি বাস্তব কার্পেট হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ফিলিপ নুবেলের ছবি, অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।

পুরানো ১৯৩৭ সালের এই ছবিটি কিরমিজি কাসাবার একদল নারী কার্পেট বুননকারীদের দেখাচ্ছে:

১৯৩৭ সালের এই ছবিটি কিরমিজি কাসাবার একদল নারী কার্পেট বুননকারীদের দেখাচ্ছে। ফিলিপ নুবেলের ছবি, অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।

এখানে আরেকজন নারী কার্পেট বুননকারী তার কার্পেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন:

ফ্রিদা ইউসুফোয়ার পারিবারিক সংরক্ষণাগার থেকে পাওয়া ছবি। ফিলিপ নুবেলের ছবি, অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।

এখানে রামি মেইরের আঁকা কিরমিজি কাসাবা এলাকার পুরানো সিনাগগের একটি চিত্র:

রামি মেইরের আঁকা চিত্রটি কিরমিজি কাসাবা এলাকার পুরানো সিনাগগের প্রতিনিধিত্ব করে। ফিলিপ নুবেলের ছবি, অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।