- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

আইরিশ ভাষা কর্মী কেভিন স্ক্যানেলের সাথে প্রশ্নোত্তর পর্ব

বিষয়বস্তু: নাগরিক মাধ্যম, রাইজিং ভয়েসেস
[1]

কেভিন স্ক্যানেলের ছবি তুলেছেন ম্যাডি স্ক্যানেল এবং উইকিমিডিয়া সাধারণে [1] সিসি বাই-এসএ ৪.০ এর অধীনে ব্যবহার করা হয়েছে

আমাদের চলমান ধারাবাহিকের অংশ হিসেবে ডিজিটাল স্থানে ইউরোপীয় সংখ্যালঘু এবং আঞ্চলিক ভাষার প্রচারের জন্যে সক্রিয় কর্মীদের কাজকে তুলে ধরতে গিয়ে আমরা আইরিশ ভাষাভাষীদের ব্যবহারের জন্যে সফ্টওয়্যার তৈরির মাধ্যমে আইরিশ ভাষা [2] (বা গেলিক নামেও পরিচিত) প্রচারের জন্যে কর্মরত কেভিন স্ক্যানেল (@কেস্ক্যানে [3]) কে দেখাতে চাই। কেভিনের অংশ নেওয়া যৌথ কর্মের একটি দীর্ঘ তালিকাও রয়েছে, যা অনলাইনে এবং ডিজিটাল গণমাধ্যমে আইরিশ ভাষাকে উন্নত করতে সাহায্য করছে। রাইজিং ভয়েসেস পরিচালিত নিচের ই-মেইল সাক্ষাৎকারটিতে এই উদ্যোগগুলি সম্পর্কে আরো জানুন।

রাইজিং ভয়েস (আরভি): আমাদেরকে আপনার নিজের এবং আপনার ভাষা-সম্পর্কিত কাজ সম্পর্কে বলুন।

কেভিন স্ক্যানেল (কেএস): আমি মূলত আইরিশ ভাষা নিয়ে কর্মরত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট লুইস বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানের অধ্যাপক। আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শক্তিশালী শিকড়বিশিষ্ট একটি আইরিশ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি এবং ১৯৯০ এর দশকে আন্তরিকভাবে ভাষা শিখতে শুরু করি। বিগত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে আমি অনলাইনে আইরিশ ভাষাভাষীদের তাদের ভাষা ব্যবহারে সাহায্য করার জন্যে সফ্টওয়্যার তৈরি করছি। আমি বানান ও ব্যাকরণ পরীক্ষক, অভিধান ও শব্দসম্ভার, অনুবাদ যন্ত্র তৈরি করেছি এবং জিমেইল, টুইটার, ফায়ারফক্স, লিবরঅফিস, হোয়াটসঅ্যাপ এবং আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট ও সফ্টওয়্যার প্যাকেজ আইরিশ ভাষায় অনুবাদ করার জন্যে নিবেদিত একটি স্বেচ্ছাসেবক দলের সাথে কাজ করেছি। আমি ২০১১ সালে ১৫০টিরও বেশি আদিবাসী ও সংখ্যালঘু ভাষাভাষীদের টুইটারে পরস্পরের সাথে যোগাযোগে সহায়তাকারী আদিবাসী টুইট সাইটটি তৈরি করেছি।

আরভি: অনলাইন ও অফলাইন উভয় ক্ষেত্রেই আপনার ভাষার বর্তমান অবস্থা কী?

কেএস: একটি বিশ্বায়িত বিশ্বে অন্যান্য সংখ্যালঘু ভাষাগুলি যেমন প্রভাবশালী প্রচলিত ভাষা হিসেবে ইংরেজির মুখোমুখি হয় আইরিশরা ঠিক তেমনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও অনেক আশাবাদ রয়েছে! (সকল বিষয় আইরিশ ভাষায় পড়ানো) আইরিশ-মাঝারি স্কুলের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে – আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্র এবং উত্তর আয়ারল্যান্ড উভয় স্থানেই ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী সেবা পাচ্ছে। ভাষাটি এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নে পূর্ণ দাপ্তরিক এবং কাজের মর্যাদা পেয়েছে। আয়ারল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশে শীর্ষস্থানীয় রেডিও অনুষ্ঠান (রেডিও না গ্যালটাক্টা), টেলিভিশন (টিজি৪) এবং সংবাদে (টুয়েইরিস্ক.আইই [4], নস.আইই [5] ইত্যাদি) আইরিশ ভাষাভাষীদের প্রবেশাধিকার রয়েছে। সমস্ত প্রধান সামাজিক গণমাধ্যম ওয়েবসাইটে বক্তাদের খুব সক্রিয় একটি সম্প্রদায় রয়েছে; অর্থাৎ আমি বলতে চাই এই ভাষার ইতিহাসে এযাবৎ কালের মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি আইরিশ লেখা হচ্ছে।

আরভি: ডিজিটাল স্থানে আপনার ভাষার উপস্থিতি দেখার জন্যে আপনার অনুপ্রেরণাগুলো কী কী?

কেএস: আমি প্রবাসীদের একজন বক্তা হিসাবে অত্যন্ত অনুপ্রাণিত, কারণ এই ভাষায় আমার প্রায় সমস্ত কথাবার্তা ডিজিটাল স্থানেই হয়ে থাকে! বিশেষ করে ভাষাভাষীরা ক্রমবর্ধমানভাবে ভাষার ঐতিহ্যবাহী “মাতৃভূমি”র বাইরে বসবাস করে বলে এমন সংখ্যালঘু ভাষার প্রচারের জন্যে সামাজিক গণমাধ্যম একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে। আমি আইরিশ ভাষায় সফ্টওয়্যার, অ্যাপস এবং ওয়েবসাইট অনুবাদ করার কথা উল্লেখ করেছি; তাই “বাস্তব জগতে” বেশিরভাগ ডোমেনে আইরিশের সুযোগ নেই বলে আমি মনে করি আইরিশের মাধ্যমে লোকেদের তাদের অনলাইন জীবনে বিচরণ করার সুযোগ দেওয়া দরকার। আমি ইংরেজি ভাষার কাছে ডিজিটাল ডোমেন ছেড়ে দিতে প্রস্তুত নই!

আরভি: আপনার ভাষাকে অনলাইনে পরিপূর্ণভাবে ব্যবহৃত হতে বাধা দেওয়া কিছু চ্যালেঞ্জ বর্ণনা করুন।

কেএস: অনলাইনে ভাষা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ খুবই কম। আইরিশ ভাষায় দীর্ঘ স্বরবর্ণ (“সিন্তি ফাদা”) ভিন্নভাবে উচ্চারণের চিহ্ন থাকলেও এগুলো তৈরি করার জন্যে নিজের কম্পিউটার বা মোবাইল সেট আপ করা কঠিন নয়। নিখুঁত না হলেও বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এই ভাষা সবচেয়ে শক্তিশালী বলে সেখানে উচ্চ-গতির ইন্টারনেটের পরিস্থিতি ১০ বছর আগের চেয়ে ভাল হলেঅ এখনো যথার্থ নয়। আমদের অনলাইন জীবন পরিচালনাকারী সামাজিক গণমাধ্যম, গুগল, মোবাইল যন্ত্রের মতো বেশিরভাগ মঞ্চের উপর কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণ একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা।

আমাদের দল প্রায় ১০ বছর আগে জিমেইলকে আইরিশ ভাষায় অনুবাদ করার পর স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ইউটিউব, গুগল ডক্স, ক্যালেন্ডার, ইত্যাদি্র মতো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ গুগল পণ্য অনুবাদ করার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে “অনুমতি দেওয়া হয়নি।”

টুইটারের ক্ষেত্রে আমরা এর আইরিশ অনুবাদ সম্পূর্ণ করে সম্প্রদায়ের কাছে উপলব্ধ করতে পারলেও একটি বিশাল স্বেচ্ছাসেবক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও অন্যান্য সংখ্যালঘু ভাষা গোষ্ঠীগুলি (যেমন ওয়েলশ) তাদের নিজস্ব অনুবাদে এতোটা “ভাগ্যবান” ছিল না।

আরভি: অল্পবয়সীদের তাদের নিজেদের ভাষা শেখা শুরু বা তাদের নিজেদের ভাষা ব্যবহার চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করতে কোন কোন দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে বলে আপনি মনে করেন?

কেএস:  ভাগ্যবশত নতুন এবং সৃজনশীল উপায়ে ভাষা ব্যবহারকারী আইরিশ শিল্পী এবং সঙ্গীতজ্ঞদের একটি নতুন প্রজন্ম রয়েছে যারা তরুণ আইরিশ ভাষাভাষীদের মধ্যে একটি বিশাল সংখ্যক অনুসরণ্কারী তৈরি করেছে। বেলফাস্টের নিক্যাপ [6] দলের ইউটিউবে লক্ষ লক্ষ ভিউ, টিকটকে সাহান ও সুইয়াবোন [7] এর ১ লক্ষ ৮০ হাজার অনুসরণকারী রয়েছে। সিমাস বারা ও সুইয়াবোন [8], কিয়ারা নি এ [9] … আমি এরকম আরো নাম বলতে পারি।

আমি মনে করি অল্পবয়সীদের ভাষাটি যে কেবল একটি সাংঘাতিক স্কু্লের পাঠ্য বিষয় নয় সেটা দেখানো দরকার! ৫২ বছর বয়সী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভাষাটিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে কী করতে পারেন সেটা পরিষ্কার নয়। আমি আইরিশ ভাষায় আরো বেশি কম্পিউটার গেম তৈরিতে আগ্রহী।

আমি কয়েক বছর আগে মিহো ও মিচার সাথে একটি দুর্দান্ত মোবাইল গেমের (গানম্যান টাকো ট্রাক [10]) এবং বছর দুয়েক আগে উনা-মিন কাভানার নেতৃত্বে চমৎকার একটি গেম আমাদের মধ্যে অনুবাদের কাজ করলেও আমি চাই তরুণদের জন্যে আরো অনেক পছন্দ থাকুক।