৩ মে পালিত বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা দিবস স্মরণে সাংবাদিকরা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে বাধা দিতে পারে এমন আইন তৈরির নিন্দা এবং সাংবাদিকদের সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে তথ্যের অধিকারকে সম্মান করার এবং স্বাধীনভাবে অবহিত হওয়ার প্রয়োজনীয়তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ ^[1] করেছেন। আফ্রিকার একটি আঞ্চলিক গণমাধ্যম সুরক্ষা সংস্থা মিসা-মোজাম্বিকের সভাপতি যেমন বলেছেন ^[2]:

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের অবসান ঘটানোর একমাত্র উপায় হলো দায়মুক্তির মাধ্যমে এইসব অপরাধকারীরা যেন পুরস্কৃত না হয় তা নিশ্চিত করা। নিখোঁজ হওয়ার ১৯ মাস পরেও ম্বারুকো মামলা স্পষ্ট করার জন্যে ইতোমধ্যে জাতীয় কর্তৃপক্ষের গৃহীত পদক্ষেপগুলো দেখানোর ব্যর্থতা বোধগম্য নয়।

সীমান্তবিহীন প্রতিবেদকের ২০২২ সালের মূল্যায়নে ১৮০টি দেশের এর মধ্যে মোজাম্বিকের অবস্থান ^[3] ১১৬। এটি ২০২১ সালের তুলনায় আটটি স্থান পিছিয়েছে। সংস্থাটি উল্লেখ করেছে ^[3] যে সংবিধান ও সংবাদমাধ্যমের আইন এবং তথ্যের অধিকার দ্বারা মুক্ত ও স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিত হওয়ার কথা হলেও ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদ ও তথ্যে জটিলতর প্রবেশাধিকারের একটি পরিবেশ বিরাজ করার কারণে আইনটি খুব কমই প্রয়োগ করা হয়।

মোজাম্বিকে স্বাধীনতা ক্রমশই বন্ধ হচ্ছে

মোজাম্বিক দেশের গণমাধ্যম পেশাদারদের সম্মান জানাতে অভ্যন্তরীণভাবে তৈরি করা একটি তারিখ ২০২২ সালের ১১ এপ্রিলে সাংবাদিক দিবস উদযাপন করেছে ^[4]। উৎসবের বার্তা এবং সাংবাদিকদের কাজের স্বীকৃতি স্বত্ত্বেও উত্তর মোজাম্বিকের সশস্ত্র সংঘাতের কারণে দিনটি উৎকণ্ঠা ^[5]তেই কেটেছে।

কাবো দেলগাদোতে ২০১৭ সালে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ায় ^[6] সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে সাংবাদিকদের নিখোঁজ হওয়া ^[7] বা কথিত জনস্বার্থের কারণে তথ্য সরবরাহ করতে অস্বীকার করার মতো সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং তথ্যে প্রবেশাধিকার লঙ্ঘনের বেশ কয়েকটি ঘটনা ^[8] দেশে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন করা হয়েছে।

উত্তর মোজাম্বিকের সংঘাতময় অঞ্চলের কাছাকাছি কোথাও ২০২০ সালে কাজ করার সময় নিখোঁজ সাংবাদিক ইব্রাহিমো ম্বারুকোর প্রতিনিধিত্বমূলক ^[9] মামলাটি এখনো অজানা অবস্থানে রয়ে গেছে। ঐ বছরের ৭ এপ্রিল তারিখে ঐ সাংবাদিক তার পরিবারকে সেনাবাহিনীর দ্বারা ঘেরাও হওয়ারকথা বলার পর নিখোঁজ হন। এদিকে দুই বছর পেরিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ নীরব। মিসা-মোজাম্বিক অনুসারে ^[10]:

Muito pouco se sabe sobre o que aconteceu e muito menos sobre as investigações. Apesar de todas as iniciativas que nós tivémos de contacto com as autoridades governamentais, com as autoridades da investigação criminal, com a Procuradoria da República, não obtivemos qualquer informação até este momento.

কী ঘটেছে সে সম্পর্কে খুব কমই জানা যায় এবং তদন্ত সম্পর্কে আরো কম। সরকারি কর্তৃপক্ষ, ফৌজদারি তদন্ত কর্তৃপক্ষ এবং পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসের সাথে যোগাযোগ করার সমস্ত উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও আমরা আজ পর্যন্ত কোনো তথ্য পাইনি।

“Surrounded by soldiers…”

These are the last words heard from Mozambican journalist Ibraimo Abú Mbaruco before he went missing in Cabo Delgado, two years ago today.

We continue to ask: #WhereIsIbraimo ^[11]?

#IbraimoMbaruco ^[12]https://t.co/gHY1Ow9ize ^[13] pic.twitter.com/JlASAIHczL ^[14]

— Committee to Protect Journalists (@pressfreedom) April 7, 2022 ^[15]

“সৈন্যরা ঘিরে রেখেছে …”

আজ থেকে দুই বছর আগে কাবো দেলগাদোতে নিখোঁজ হওয়ার আগে মোজাম্বিকের সাংবাদিক ইব্রাইমো আবু ম্বাবারুকোর কাছ থেকে শোনা শেষ কথাগুলো।

আমরা এখনো প্রশ্ন করি: #ইব্রাইমো_কোথায়?

#ইব্রাইমো_ম্বারুকো

এই প্রসঙ্গে ইব্রাহিমো ম্বারুকোর ঘটনা উল্লেখ না করেই প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি দেশে চলমান সংঘাতে সাংবাদিকের ভূমিকার কথা বলেন ^[16]:

Os nosso profissionais de Comunicação Social, com a devida responsabilidade e sentido patriótico têm feito conhecer à nação moçambicana e ao mundo e com elevado nível de objectividade as notícias sobre as acções das nossas briosas Forças de Defesa e Segurança (FDS), contra o terrorismo e extremismo violento em alguns distritos da província de Cabo Delgado.

যথাযথ দায়িত্ব ও দেশাত্ববোধের সাথে আমাদের গণমাধ্যমের পেশাদাররা মোজাম্বিক জাতি ও বিশ্বের কাছে উচ্চ স্তরের বস্তুনিষ্ঠতার সাথে কাবো দেলগাদো প্রদেশের জেলাগুলিতে সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে আমাদের সাহসী প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাহিনীর (এফডিএস) কর্মকাণ্ডের সংবাদ প্রকাশ করছে।

সাংবাদিকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি বর্তমান সংবাদমাধ্যম আইন সংস্কারের জন্যে সাম্প্রতিক ^[17] আইন প্রণয়নের প্রস্তাব নিয়ে আরেক শ্রেণীর সংগ্রাম চলছে। বিশেষ করে উত্তর মোজাম্বিকের সংঘাতে ^[18]র প্রেক্ষাপটে কারণ আইনটিকে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিত করার একটি উপায় হিসাবে দেখা হয় বলে এটি এক প্রকার হুমকি। সাংবাদিকরা বাস্তবেই এই প্রস্তাবণা ^[19]টিকে তথ্য অধিকারের জন্যে হুমকি হিসেবে দেখছে।

সাংবাদিকদের কাজে বাধা দেওয়ার জন্যে সরকারের অপচেষ্টা এটি। সংসদ নাগরিক সমাজের প্রস্তাবিত সংশোধনী ছাড়াই দুটি আইন অনুমোদন করলে তা হবে মোজাম্বিকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের জন্যে একটি বড় অবমাননা।

মোজাম্বিকের গণমাধ্যম পেশাদারদের মুখোমুখি হওয়া আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি নিয়ে। এই প্রসঙ্গে কিছু কিছু সাংবাদিক বলেছে যে এই অভ্যাসটি নারীদের পেশাকে বিপন্ন করছে। সাংবাদিক ক্লাউসিয়া সিরিংডিজা ^[20]র মতে “(…) কিছু সংবাদ প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকদের, বিশেষ করে যারা কেবল কর্মজীবন শুরু করছেন তাদের, যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয় না।”

---

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা দিবসের উদযাপন প্রতিফলিত করার জন্যে এই নিবন্ধের প্রথম অংশটি লেখক হালনাগাদ করেছেন।