আদিবাসী বুনুন এর শিকড়ে ফেরার পথ খুঁজে ফেরা এক শহুরে বালি নাঙ্গাভুলানের সাথে সাক্ষাৎকার

বালি নাঙ্গাভুলান (বালি নাঙ্গাভুলান প্রদত্ত ছবি/ অনুমতিসহ ব্যবহৃত)

@এশীয়অনলাইনভাষা চতুর্থ ঋতুতে প্রবেশ করার সাথে সাথে আমরা এই ঘুর্ণায়মান টুইটার প্রচারাভিযানে আরেক সপ্তাহের জন্যে ফিরে আসা হোস্ট — বালি নাঙ্গাভুলান (@বালিসুবালিয়ান)-কে স্বাগত জানাই।

একটি স্নাতক স্কুলের মাঠ-সমীক্ষা তাকে তাইওয়ানের বুনুনে নিজ সম্প্রদায়ে ফিরিয়ে না নেওয়া পর্যন্ত শহরে বেড়ে ওঠা বালি তার নিজের শিকড়ের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। বালি ভাষা থেকে শুরু করে সংস্কৃতির সাথে নিজেকে পুনরায় পরিচিত করার জন্যে তখন থেকেই সচেতন প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। সামাজিক গণমাধ্যম ব্যবহার করে বালি পথে সমমনা লোকদের জড়ো করে শেষ পর্যন্ত তার ভাষার জন্যে অনলাইনে একটি স্থান তৈরি করতে পেরেছিলেন।

রাইজিং ভয়েস বালির যাত্রা সম্পর্কে জানতে ইমেইলে সাক্ষাৎকার নিয়েছে। স্পষ্টতার জন্যে বালি এবং লেখক যৌথভাবে সাক্ষাৎকারটি সম্পাদনা করেছেন।

রাইজিং ভয়েস (আরভি): অনুগ্রহ করে আপনার নিজের এবং আপনার ভাষা-সম্পর্কিত কাজ সম্পর্কে আমাদেরকে বলুন।

স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়গুলি পরিদর্শনের সময় প্রবীণদেরকে তাদের স্থানীয় ভাষায় পরস্পরের সাথে কথা বলতে দেখাটা খুবই স্বাভাবিক। তবে আমার মাস্টার্স থিসিসের জন্যে মাঠ-সমীক্ষা পরিচালনা করার জন্যে আমি আমার সম্প্রদায় বা ধরে নিন উপজাতিতে ফিরে না আসা পর্যন্ত আমি তাইওয়ানের আদিবাসী ভাষা এবং/অথবা আমার মাতৃভাষা নিয়ে খুব বেশি কাজ করিনি। সম্প্রদায়ের প্রবীণদের সাথে অনেক সময় কাটানোর পরে আমি আমার ভাষা ব্যবহার করে তাইওয়ানের আদিবাসী সম্প্রদায়ের বর্তমান ও প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলিতে আলোচনা উৎসাহিত করার জন্যে আমার মাতৃভাষাকে ফেসবুক এবং ইন্সটাগ্রামে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিই।

আরভি: অনলাইন ও অফলাইন উভয় ক্ষেত্রেই আপনার ভাষার বর্তমান অবস্থা কী?

আমাদের সরকার ধীরে ধীরে জাতীয় ভাষা উন্নয়ন আইন চালু করেছে বলে তাইওয়ানের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী্র ব্যবহৃত সমস্ত প্রাকৃতিক ভাষা (সাংকেতিক ভাষাসহ) এখন “জাতীয় ভাষা” হিসেবে বিবেচিত। তবে বাস্তবে আদর্শ ম্যান্ডারিনই মূলধারার ভাষা থেকে যায়। আদিবাসী ভাষাগুলি আগের থেকে অনেক বেশি স্বীকৃতি পেলেও অনলাইন বা অফলাইনে তারা সংখ্যালঘু ভাষা হিসেবেই থেকে যাচ্ছে।

আরভি: ডিজিটাল স্থানে আপনার ভাষার উপস্থিতি দেখার জন্যে আপনার অনুপ্রেরণাগুলো কী?

আমার পিতামাতা আরো ভালো সুযোগের জন্যে তাদের সম্প্রদায় ছেড়ে শহরে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে আমি একজন শহুরে আদিবাসী হিসেবে বড় হয়েছি। ক্ষেত্র সমীক্ষার জন্যে আমি আমার সম্প্রদায়ে ফিরে আসার পূর্ব পর্যন্ত শহরে বসবাসের কারণে আমি খুব কমই আমার মাতৃভাষা ব্যবহার করার সুযোগ পেয়েছি। তখনই আমি আমার ভাষাটা একটু একটু করে গ্রহণ করতে শুরু করি।

বাস্তব জীবনে আদিবাসী ভাষার সংখ্যালঘু অবস্থা এবং আমাদের প্রতিদিন ইন্টারনেটের ব্যাপক ব্যবহার বিবেচনা করে আমি ভেবেছিলাম আমার ভাষাকে ডিজিটাল বিশ্বে নিয়ে আসার ধারণাটা ভালো। এটি আমাকে বুনুন শিখতে বা ব্যবহার করতে আগ্রহী নানা স্তরের বিস্তৃত লোকেদের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ দেওয়া ছাড়াও ভাষাকে স্বাগত জানানো একটি ভার্চুয়াল সম্প্রদায় তৈরি করতে সাহায্য করে যা বাস্তবে আমার ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরো অনেক সুযোগের দিকে নিয়ে যায়। দীর্ঘমেয়াদে আমি আমার উপজাতিতে গিয়ে বয়স্ক সদস্যদের সাথে বুনুনে অবাধে কথাবার্তা বলতে পারার মতো দক্ষতার উন্নতি করার আশা করি।

আরভি: আপনার ভাষাকে অনলাইনে পরিপূর্ণভাবে ব্যবহৃত হতে বাধা দেয় এমন কিছু চ্যালেঞ্জ বর্ণনা করুন।

বুনুন একটি রোমান বানান পদ্ধতি গ্রহণ করায় নিজস্ব স্বতন্ত্র আকারে লেখা অন্যান্য ভাষার তুলনায় আমার ভাষায় টাইপ করা তুলনামূলকভাবে সহজ। সেল ফোনের স্বয়ংক্রিয়-পূরণ বৈশিষ্ট্যের জন্যে অধিকাংশ সময়ই আমাকে বেশি ব্যবহৃত শব্দগুলো পুরো টাইপ করতে হয় না। এটা অনলাইন চ্যাটিংকে বাতাসের মতো করে তুলেছে।

তবে প্রথম পাতাগুলি শুরু করার সময় আমার মাঝে মাঝে মনে হতো যে আমি নিজের সাথে কথা বলছি কারণ ভাষাতে দক্ষ লোক সত্যিই ততোটা নেই। তবুও যেভাবেই হোক আমি চালিয়ে গিয়েছিলাম – আর কিছু না হোক অন্তত আমি আমার ভাষাটা চর্চা করতে পারতাম। ধীরে ধীরে একটি সম্প্রদায় তৈরি হয়ে অর্থপূর্ণ কথোপকথন হতে থাকে।

আমি সত্য সত্যই মনে করি আমার ভাষাটি বর্তমানের চেয়ে বেশি দৃশ্যমানতার যোগ্য। এবং সমস্ত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ইন্টারনেট আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে যাওয়ায় এর নির্মাণ শুরু করার জন্যে ডিজিটাল স্থান একটি দুর্দান্ত জায়গা বলে মনে হয়; প্রতিবার আপনার ভাষা ব্যবহারের সময় এটি একটি চিহ্ন রেখে যায়। আমি আশা করি কোন একদিন অনলাইনে আমার ভাষার ব্যবহার শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।

আরভি: অল্পবয়সীদের তাদের নিজেদের ভাষা শেখা শুরু বা তাদের নিজেদের ভাষা ব্যবহার চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করতে কোন কোন দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে বলে আপনি মনে করেন?

বিশেষ করে কোন উদ্দেশ্য খুঁজে না পেলে মাতৃভাষা শেখাটা আপনার জন্যে চাপের হয়ে যাবে। তবে সম্প্রদায়ের প্রবীণদের সাথে অবাধে বা আপনার শেকড়ের সাথে আরো ভালভাবে যোগাযোগ করা, একজন আদিবাসী সদস্য হিসেবে বা উল্লিখিত সংস্কৃতি সম্পর্কে আরো শেখা বা কেবল ভাষা বলা পর্যন্ত আপনার নিজের একটা লক্ষ্য থাকলে তা  অ-সদস্য হিসেবে জিনিসগুলিকে আরো অনেক সহজ করে তুলবে। আপনার মতো আগ্রহী আরো বন্ধু থাকাটাও এক্ষেত্রে সহায়ক। তবে আমি বলবো: ভাষাটি শুধু অফলাইনে বলতে বা অনলাইনে লিখতে শুরু করলেই দেখবেন যে আপনার প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে গেছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .