- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

অতি-ডান হিন্দু গোষ্ঠীগুলির উস্কানিতে ভারত জুড়ে মুসলমান-বিরোধী মনোভাব বাড়ছে

বিষয়বস্তু: দক্ষিণ এশিয়া, ভারত, আইন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ধর্ম, নাগরিক মাধ্যম, প্রচার মাধ্যম ও সাংবাদিকতা, প্রতিবাদ, বাক স্বাধীনতা, মানবাধিকার, যুদ্ধ এবং সংঘর্ষ, সরকার, দ্যা ব্রিজ (সেতুবন্ধন)
Rama Navami rally in Howrah, West Bengla, India. Image via Wikipedia by Biswarup Ganguly. [1]

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায় রাম নবমীর একটি সমাবেশ। উইকিমিডিয়া সাধারণে বিশ্বরূপ গাঙ্গুলি [1]র ছবি। (সিসি বাই-এসএ ৪.০ [2]।)

এক সপ্তাহের মধ্যে সাম্প্রতিক দুটি হিন্দু উৎসবে ভারত জুড়ে ডানপন্থী হিন্দু আধিপত্যবাদী গোষ্ঠী এবং সংখ্যালঘু মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।

রাম নবমী উপলক্ষে ১০ এপ্রিল তারিখে প্রথমবার বাংলা,ঝাড়খণ্ড, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ [3], কর্ণাটক [4] এবং বিহারে [5] সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়। ১৬ এপ্রিল তারিখ শনিবার হনুমান জয়ন্তীতে কুর্নুল [6], হরিদ্বার [7]  থেকে এবং ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির জাহাঙ্গীরপুরী [8] এলাকায় আরো সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়।

রাম নবমী [9] হলো ঐতিহ্যগতভাবে উপবাসের মাধ্যমে পালন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু উৎসব যা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হিন্দু দেবতাদের মধ্যে একজন, ভগবান রামের জন্ম নবম দিনে শেষ হয়। ভক্তরা মন্দিরে প্রার্থনা ও আচার অনুষ্ঠান করে, ভক্তিমূলক গান গায় এবং বাড়িতে এবং সম্প্রদায়ের স্তরে আচার অনুষ্ঠান ও রথ শোভাযাত্রা পরিচালনা করে। তবে এই হিন্দু ধর্মীয় উপলক্ষ্যগুলিকে হিন্দুদের জাগানো, ঘৃণা উস্কে দেওয়া এবং হিন্দু আধিপত্য জাহির করা [10]র সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে সহিংস মিছিলের শতাব্দী প্রাচীন ইতিহাস [11] রয়েছে।

বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে সাম্প্রতিকতম সংঘর্ষগুলির সময় [12] মুসলমানদের বাড়িঘর ও মসজিদের বাইরে উস্কানিমূলক মুসলমান বিরোধী গান বাজানো লাঠি ও তলোয়ার বহনকারী জাফরান পোশাক পরা একদল হিন্দু পুরুষের সরব রাম নবমী মিছিলগুলি মুসলমান পাড়ার মধ্য দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সামাজিক গণমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওগুলি [13] এমন খবর নিশ্চিত করেছে।

উল্লেখ্য যে  বাড়িওয়ালা বা সম্পত্তি ব্যবসায়ীরা মুসলমানদের কাছে বাড়ি ভাড়া না দেওয়া বা বিক্রি না করার ফলে বসবাস করতে বাধ্য হওয়া ভারতের কিছু কিছু ঘিঞ্জি এলাকাকে “মুসলমান এলাকা” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কয়েক দশক ধরে গোপনে বিচ্ছিন্নতার চর্চা করা হলেও নরেন্দ্র মোদি [14]ভারতীয় জনতা পার্টি [15] (বিজেপি) ক্ষমতায় আসার পর বিজেপি নেতারা [16] মুসলমানদের কথিত “ভূমি জিহাদ [17]” (জমি বিক্রির জন্যে সংখ্যালঘু জনগণের উপর বলপ্রয়োগ) চালানোর অভিযোগে মুসলমানদের একঘরে [18] করার প্রকাশ্য আহ্বান জানায়। অন্যদিকে গুজরাট [19] এবং উত্তর প্রদেশ [20] রাজ্যে মুসলমানদের তাদের বাড়িঘর বিক্রি করে অন্যত্র স্থানান্তর হতে বাধ্য করা এবং মুম্বাইসহ অন্যান্য শহরে একটি না ভাড়া, না বিক্রয় নীতি [21] চর্চার বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

ডানপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি ২০১৪ সাল থেকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার হিসেবে ক্ষমতায় রয়েছে।

অনেক ক্ষেত্রেই বিজেপি নেতা ও বিধায়কদের ব্যক্তিগতভাবে মুসলমান বিরোধী বক্তৃতা দিতে বা গান গাইতে দেখা গেছে। হায়দরাবাদে, বিধানসভার বিজেপি সদস্য টি রাজা সিং হিন্দু আধিপত্য প্রচারের স্লোগান দিয়ে একটি গান গেয়েছেন [22]। ১০ এপ্রিল তারিখে বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রকে একটি ভাইরাল ভিডিওতে [23] মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের খারগোনে সহিংসতার সময় মুসলমান বিরোধী বিদ্বেষমূলক বক্তৃতা করতে শোনা যায়। খারগোনে সহিংসতার সবচেয়ে খারাপ ঘটনাগুলির একটিতে অন্তত এক ব্যক্তি মারা যায় [24]

হনুমান জয়ন্তী [25]তে হিন্দু দেবতা ভগবান হনুমানের জন্ম উদযাপন করা হয়। রাম নবমীর মতো এটি ঐতিহ্যগতভাবে সম্প্রদায়গত ভোজন, বাড়িতে বা সম্প্রদায়ে প্রার্থনা ও স্তোত্র পাঠের মতো বিভিন্ন অনুষ্ঠানসহ মন্দিরে মন্দিরে গিয়ে নৈবেদ্য ও প্রার্থনার মাধ্যমে উদযাপন করা হয়। তবে এই বছর কোন কোন অঞ্চলে উৎপত্তি সম্পর্কে পাবলিক ডোমেনে খুবই কম ঐতিহাসিক প্রমাণাসম্পন্ন আপাতদৃষ্টিতে নতুন একটি ঘটনা “হনুমান জয়ন্তী শোভা যাত্রা” সংঘটিত হয়েছে।

হিন্দু চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলি মুসলমানদের প্রার্থনার আহ্বান আজানের সময় যাত্রাকে মসজিদের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার পরে তিনটি স্থান থেকেই  যাত্রাগুলিতে মুসলমান সম্প্রদায়ের পাথর নিক্ষেপের কথিত সংবাদ পাওয়া গেছে। দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরী এলাকায় সারাদিন ধরে এই ধরনের তিনটি যাত্রা অনুষ্টিত হলে তৃতীয়টিতে সহিংসতা শুরু হয় [26]। পুলিশ জানিয়েছে অনুমতি ছাড়াই তৃতীয় যাত্রাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

জাহাঙ্গীরপুরী এলাকায় সহিংসতার জন্যে হিন্দু ও মুসলমান গোষ্ঠীগুলি একে অপরকে দোষারোপ [27] করেছে। দিল্লি পুলিশ এখন পর্যন্ত হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে [28] এবং হিন্দু চরমপন্থী গোষ্ঠী বিশ্ব হিন্দু পরিষদ [29] (ভিএইচপি) এবং বজরং দলের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করেছে [30]। ভিএইচপি এবং বজরং দল উভয়ই তাদের অতীত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্যে পরিচিত এবং সিআইএ তাদের “ধর্মীয় জঙ্গি সংগঠন” বলে অভিহিত করেছে [31]

রাম নবমী এবং হনুমান জয়ন্তীতে সহিংসতার ধারাটি রাষ্ট্রীয় এবং অ-রাষ্ট্রীয় উভয় পক্ষের একাধিক পদক্ষেপের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল, যার লক্ষ্য ছিল ভারতে ধর্মীয় বিভাজন আরো গভীরে নিয়ে মুসলমান সম্প্রদায়কে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকের মর্যাদা দেওয়া। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক [32] (আরএসএস) মতাদর্শী এবং প্রতিষ্ঠাতা এমএস গোলওয়ালকর প্রথম এই দৃষ্টিভঙ্গিটি উত্থাপন করেন। আরএসএস হলো ক্ষমতাসীন দল বিজেপির আদর্শিক পিতা।

ভারতের জনসংখ্যার [33] প্রায় ১৪ শতাংশ মুসলমান হওয়ায় এটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলমান জনগোষ্ঠী [34]তে পরিণত হয়েছে। প্রায় ৮০ শতাংশ জনসংখ্যা নিয়ে হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী। প্রায় ১,০০০ বছর ধরে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের মধ্যেও দু’টি সম্প্রদায় মিলেমিশে বসবাস করছে। ভারত প্রায়শই বিশ্ব মঞ্চে তার সমৃদ্ধ সমন্বিত সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য নিয়ে যে গর্ব করে তা ক্ষমতাসীন দল, আরএসএস এবং হাজার হাজার অনুষঙ্গী হিন্দু আধিপত্যবাদী গোষ্ঠীর দ্বারা ক্রমবর্ধমান ডানপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদের কারণে বিপন্ন।

এই মাসের শুরুর দিকে উত্তরপ্রদেশের মিরাটে রাম নবমীর উপবাসের সময় মাংস বিক্রির অভিযোগ তুলে “সঙ্গীত সোম সেনা” (বিজেপি নেতা সঙ্গীত সোমে [35]র সেনাবাহিনী) নামে একটি গোষ্ঠী একজন মুসলমান ব্যক্তির মালিকানাধীন খাবারের গাড়ি ভাংচুর করে [36]। ভুক্তভোগী অবশ্য নিরামিষ বিরিয়ানি বিক্রি করার কথা জানান। ২০২১ সালের অক্টোবরে দিল্লির নাজফগড় এলাকায় “হিন্দু সেনা” (হিন্দুদের বাহিনী) নামের একটি ডানপন্থী হিন্দু সংগঠন জোর করে মাংসের দোকান বন্ধ করে দেয় [37]

দিল্লির একজন মেয়র দেশের কোন আইনে সমর্থন না থাকা স্বত্ত্বেও এই মাসে “হিন্দু অনুভূতি” পূরণের উদ্দেশ্যে রাম নবমীর নয় দিন মাংসের দোকান বন্ধ রাখার জন্যে [39] একটি মৌখিক আদেশ পাস করেন। কিন্তু অনলাইন খাদ্য বিতরণ মঞ্চ, রেস্তোরাঁ এবং বারগুলিকে মাংস বিক্রি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এবং তারা সেটা করেছিল। উল্লিখিত নিষেধাজ্ঞাটি লিখিতভাবে পাস করা হয়নি এবং কেউ আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ না দেখলেও দক্ষিণ দিল্লিতে মাংসের দোকানগুলি ভয় ও বিভ্রান্তির কারণে বন্ধ ছিল [40]

২০২১ সালের ডিসেম্বরে উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে অনুষ্ঠিত একটি নিজস্ব ধরনের “ধর্ম সংসদ” (ধর্মীয় সংসদ)-এ হিন্দু ধর্মীয় নেতা যাতি নরসিংহানন্দ [41] মুসলমান গণহত্যার জন্যে উন্মুক্ত আহ্বান জানান। হরিদ্বার ঘৃণাত্মক বক্তব্য [42] নামে পরিচিত এই মামলার একটি প্রাথমিক তথ্য প্রতিবেদনে (এফআইআর) আরো চারজন হিন্দু ধর্মীয় নেতার নাম ছিল [43]। সহিংসতার নির্লজ্জ আহ্বান জাতিকে নাড়া দিলে নরসিংহানন্দকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তিনি এক মাসের মধ্যে উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের কাছাকাছি সময়ে জামিন পেয়ে তার জামিনের শর্ত ভঙ্গ করে একই বছরের নভেম্বরে নির্বাচনে যাওয়া আরেকটি রাজ্য হিমাচল প্রদেশের উনাতে সেই ঘৃণাত্মক বক্তব্যটি আবার উচ্চারণ করেন [44]। নির্বাচনী প্রচারণার সময় মুসলমান-বিরোধী বিদ্বেষমূলক বক্তব্য বিজেপির অতি-ডান হিন্দু জাতীয়তাবাদী কার্ডকে সাহায্য করে।

২ এপ্রিল তারিখে আরেক হিন্দু ধর্মীয় নেতা বজরং মুনি মুসলমান নারীদের ধর্ষনের হুমকি দিয়ে [45] গ্রেপ্তার হন৷

কয়েক মাস ধরে মুসলমানদের প্রচলিত ব্যবসা-বাণিজ্য [46], জীবিকা অন্বেষণ [47], খাদ্যাভ্যাস [48], কর্মের সুযোগ [49], মুসলমান নারীদের ধর্মীয় পোশাক [50], প্রার্থনা করার অধিকার [50] অথবা একজন রোমান্টিক সঙ্গী বেছে নেওয়া [51]র মতো জীবনের প্রায় প্রতিটি দিককে লক্ষ্য করে মুসলমান-বিরোধী প্রচারণা চালানো হয়েছে। মুসলমান জনসাধারণের মাধ্যমে উৎপত্তি হয়েছে এমন ধারণার কারণে এমনকি উর্দু ভাষাও আক্রমণের শিকার হয়েছে [52]। মূলধারার গণমাধ্যম টিভি চ্যানেল, সামাজিক গণমাধ্যম এবং রাজপথে বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রীয় নির্ধারকদের স্পষ্ট বা প্রকাশ্য সমর্থন নিয়ে এই মুসলমান-বিরোধী প্রচারের বেশিরভাগই করেছে দক্ষিণপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা।

মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুসলমান বিরোধী বিদ্বেষ, হিন্দু ধর্মীয় প্রতীক, চর্চা ও খাদ্যতালিকাগত বিধিনিষেধ জোরপূর্বক ভারতের বাকি অংশে আরোপ করার পাশাপাশি মুসলমান রীতি ও প্রতীকের বিরোধিতা করা এবং দলবদ্ধভাবে মুসলমান হত্যা [53]র মতো হিংসাত্মক আক্রমণ ভারতে নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে উঠেছে।

অন্যান্য সম্প্রদায়, বিশেষ করে মুসলমান এবং খ্রিস্টানদের গৌণ অধিকার দিয়ে  ভারতকে হিন্দুদের জন্যে একটি জাতি হিসেবে কল্পনাকারী আরএসএস-এর হিন্দু জাতীয়তাবাদ প্রকল্প মুসলমান বিরোধী এই অনুভূতিগুলি তৈরি করেছে। ব্রিটেন থেকে ভারতের স্বাধীনতার সময় জওহরলাল নেহেরু [54] এবং মহাত্মা গান্ধি [55]র মতো ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস [56] নেতাদের গৃহীত ধর্মনিরপেক্ষতা আরএসএসের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর একটি “হিন্দু জাতি” তৈরিতে যেমন জনসংখ্যা ও সাংস্কৃতিক কারণে কাশ্মীরের মুসলমান অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ৩৭০ ধারা [57] বাতিল এবং দেশব্যাপী গরুর মাংস নিষিদ্ধ [58] করার মতো আরএসএসপুষ্ট বেশ কয়েকটি প্রকল্প ফলপ্রসূ হয়। এছাড়াও রয়েছে ভারতীয় নাগরিকত্বে প্রথমবারের মতো ধর্মীয় কারণ যোগ করে সুবিধাজনক পথের মাধ্যমে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্যে ভারতে প্রবেশ করা বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের (শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ) হিন্দুদের তাৎক্ষণিকভাবে নাগরিকত্ব দেওয়া হলেও মুসলমানদের নিষিদ্ধ করা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন [59] (সিএএ)।

এদিকে সমন্বিত ভারতীয় সংস্কৃতিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করার জন্যে এমনকি টেলিভিশন বিজ্ঞাপন ও সিনেমায় হিন্দু-মুসলমান প্রেমে [60]র চিত্রণকে পর্যন্ত আক্রমণ করা হয়েছে। ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় টেলিভিশন সংবাদ চ্যানেলগুলির মধ্যে একটি, জি নিউজকে একজন মুসলমানের প্রতিটি কার্যকলাপকে কোন না কোনভাবে একটি জিহাদ (পবিত্র যুদ্ধ) তকমা দিয়ে একটি “জিহাদ সারণি [61]” ফেরি করছে — যেই প্রচারণাটি সামাজিক গণমাধ্যমের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়ছে৷

ভারত ১৯৩০-এর দশকে গঠিত এবং সরাসরি নাৎসি দল অনুপ্রাণিত হিন্দু আধিপত্যবাদী সংগঠন আরএসএস এবং তার রাজনৈতিক হাত বর্তমানে টানা অষ্টম বছরের জন্যে ভারত শাসন করা বিজেপির সাহায্যপ্রাপ্ত এবং প্ররোচিত প্রভাবশালী গোষ্ঠী এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে অব্যহত সশস্ত্র সংঘাতের মধ্যে রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।