
বৃদ্ধি পাওয়া সমুদ্রতলের উচ্চতা পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পার্থের কোটেসলো সমুদ্র সৈকতের যেখানে এসে শেষ হবে তার একটি পূর্বাভাস – ছবির সৌজন্যে ফ্লিকার ব্যবহারকারী সবুজ_হয়ে_যাও_ওজেড (সিসি বাই-এনডি ২.০)
১৩ জানুয়ারি, ২০২২ তারিখে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার উপকূলীয় অনস্লো শহরের রেকর্ড তৈরি করা ৫০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২৩.৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রা প্রকাশিত হতে থাকা জলবায়ু সংকটের আরেকটি দিন মাত্র। এটা দক্ষিণ গোলার্ধের সর্বোচ্চ ১৯৬০ সালের উদনাদত্তের ভূ-ভাগের রেকর্ড তাপমাত্রার সাথে মিলে যায়।
NEW Western Australian maximum temperature record and equal National temperature record*! Onslow reached an unprecedented – 50.7°C which is a WA record and equals Australia's hottest day set 62 years ago in Oodnadatta SA. *Data not official until quality controlled. pic.twitter.com/VfAg0SPuez
— Bureau of Meteorology, Western Australia (@BOM_WA) January 13, 2022
সর্বোচ্চ পশ্চিম অস্ট্রেলীয় তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড এবং জাতীয় তাপমাত্রার রেকর্ড* এক সমান! অনস্লো অভূতপূর্ব – ৫০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে যা একটি পশ্চিম অস্ট্রেলীয় রেকর্ড যা ৬২ বছর আগেকার উদনাদত্ততে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে উষ্ণতম দিনের সমান। *মান নিয়ন্ত্রিত না হওয়া পর্যন্ত উপাত্তটি আনুষ্ঠানিক নয়।
2022 is the year we expect Carbon Dioxide levels to reach 50% above pre-industrial levels 📈
In other (very much related) news, Australia hit 50.7C today which is the joint #hottest temperature ever recorded in the southern hemisphere 🌡️ pic.twitter.com/1VhKsA710q
— Holly Green (@HollyJGreen) January 13, 2022
আমরা আশা করি ২০২২ সালে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা প্রাক-শিল্প স্তরের ৫০% বেশি হবে 📈
(খুব বেশি সম্পর্কিত) অন্য খবরে অস্ট্রেলিয়া আজ ৫০.৭ °সেলসিয়াসে পৌঁছেছে যা দক্ষিণ গোলার্ধে রেকর্ডকৃত যৌথ #উষ্ণতম তাপমাত্রা 🌡️
কথোপকথন-এ লেখা একটি নিবন্ধে মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিজ্ঞানের জ্যেষ্ঠ্য প্রভাষক অ্যান্ড্রু কিং এর প্রভাবগুলি খুঁজে দেখেছেন:
দুর্ভাগ্যবশত পৃথিবী উত্তপ্ত হওয়ার সাথে সাথে এই চরম উষ্ণতা আরো সাধারণ হয়ে উঠছে। ১৯৮০-এর দশক থেকে ৫০° সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রার দিনের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এই বিপজ্জনক তাপমাত্রাগুলি এখন শুধু অস্ট্রেলিয়ায় নয়, পাকিস্তান, ভারত এবং পারস্য উপসাগরের শহরগুলিতেও প্রায়ই রেকর্ড করা হচ্ছে। এটা ভুক্তভোগী জনগণের স্বাস্থ্যের জন্যেও সত্যিকারের হুমকি।
এই তাপমাত্রাটি কি আশ্চর্যজনক? দুঃখজনকভাবে তা নয়। ১৯১০ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়া প্রায় ১.৪°সেলসিয়াস হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী গড় ১.১ °সেলসিয়াস বেশি।
আপনি ভাবতে পারেন অস্ট্রেলীয়রা তাপ থেকে ভালভাবে বাঁচতে পারে। কিন্তু আপনি যে জলবায়ুতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তা আর নেই। দুঃখজনকভাবে, আমাদের খামার, বন্যপ্রাণী এবং শহরতলীগুলো আগামী কয়েক দশক ধরে সম্ভাব্য চরম তাপ মোকাবেলা করতে হিমশিম খাবে।
রোবোর্নের কাছাকাছি একটি প্রতিষ্ঠান এই চরম তাপমাত্রায় তার লোকজন নিয়ে ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হয়েছিল। রোবোর্ন কারাগারে বন্দীদের অধিকাংশই আদিবাসী। এনআইটিভি (জাতীয় আদিবাসী টেলিভিশন) এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয় কারাগারের বন্দীদের “পর্যাপ্ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ছাড়াই রেকর্ড তাপমাত্রায় সেদ্ধ হওয়ার জন্যে ফেলে রাখা হয়েছিল”:
Inmates had to swelter through 50-degree heat without air-conditioning on January 14, the second hottest day recorded in national history.@rachaelknowles_ reports.https://t.co/y7zuSTBs8y
— NITV (@NITV) January 19, 2022
জাতীয় ইতিহাসে রেকর্ড করা দ্বিতীয় উষ্ণতম দিন ১৪ জানুয়ারি (২০২২) তারিখে বন্দীদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ছাড়াই ৫০° তাপমাত্রায় সেদ্ধ হওয়ার জন্যে ফেলে রাখা হয়েছিল। @র্যাচেলনোয়েলস_প্রতিবেদন।
প্রচন্ড তাপ রাজকীয় উড়ন্ত চিকিৎসক পরিষেবা (আরএফডিএস)-কেও মাটিতে নামিয়ে এনেছে:
Temperatures were so hot in Onslow today, the RFDS plane couldn’t take off 😯 @abcnews @stjohn_wa #StJohnOnslow pic.twitter.com/lhDsRjaOhM
— Laura Birch (@laurabirch25) January 13, 2022
আজ অনস্লোতে তাপমাত্রা এত উত্তপ্ত ছিল যে আরএফডিএস এর বিমানও উড়তে পারেনি 😯 @এবিসিসংবাদ @সেন্টজন_পঅ #সেন্টজনঅনস্লো
অ্যান্ড্রু কিং মনে করেন অদূর ভবিষ্যতে অস্ট্রেলিয়ার বড় বড় শহর সিডনি এবং মেলবোর্নও ৫০° সেলসিয়াসে আঘাত হানবে। মেলবোর্নের সর্বোচ্চ আনুষ্ঠানিক তাপমাত্রা ৪৬.৪° সেলসিয়াস (১১৫.৫° ফারেনহাইট) ২০০৯ সালের কৃষ্ণ শনিবার, ৭ ফেব্রুয়ারি তারিখে রেকর্ড করা হয়েছিল। এই দিন ভিক্টোরিয়ার ধ্বংসাত্মক দাবানলে ১০৮ জন মারা যায় এবং ৭৫০টিরও বেশি বাড়ি পুড়ে গিয়েছিল।
এদিকে বৈশ্বিক স্তরে ২০২২ সালে আবহাওয়া বিজ্ঞানের অগ্রগতির একটি গবেষণায় পৃথিবীর মহাসাগরগুলি এযাবৎকালে রেকর্ডকৃত সবচেয়ে উষ্ণ বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। আরেকটি রেকর্ড অনুসারে: লা নিনা (ছোট খুকি) পরিস্থিতি স্বত্ত্বেও ২০২১ সাল জুড়ে মহাসাগরের উষ্ণতা অব্যহত থাকে বলে লেখকবৃন্দ সতর্ক করেছেন:
মহাসাগর উষ্ণ হওয়ার সাথে সাথে জল প্রসারিত হয়ে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং উপকূলীয় সম্প্রদায়ের উপর এর প্রভাবের জন্যে প্রস্তুতি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়াও উষ্ণ মহাসাগরগুলি আবহাওয়া ব্যবস্থাকে সাংঘাতিকভাবে উত্তেজিত করার মাধ্যমে আরো শক্তিশালী ঝড় ও হারিকেন তৈরি করে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি করে। উষ্ণতর মহাসাগরগুলি একটি উষ্ণ এবং আর্দ্র বায়ুমণ্ডলের দিকে ধাবিত হলে তা সমস্ত ঝড়, বিশেষ করে হারিকেনে আরো তীব্র বৃষ্টিপাত বেড়ে গিয়ে বন্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। উষ্ণ মহাসাগরের জল উদাহরণস্বরূপ, প্রবাল প্রাচীর ও মৎস্যসম্পদের মতো সামুদ্রিক প্রতিবেশ ও মানুষের জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়।
ঔপন্যাসিক এবং অ্যাক্টিভিস্ট এলিজা টডের কাছে মনে হয়েছে যেন তিনি একটা পৃথিবী ধ্বংস করা চলচ্চিত্রের প্লট পেয়ে গেছেন:
🌎A disaster film occurring daily in real time, 2021 world ocean temperatures are the *hottest ever recorded.
Rising ocean temps are inextricably linked to massive extreme weather/climate events, destabilization of Antarctic ice shelves and massive sea level rise.🌏 ax. pic.twitter.com/AUWjFXYX5u
— Eliza Todd (@Smilynntodd) January 12, 2022
বাস্তব সময়ে প্রতিদিন ঘটে যাওয়া বিপর্যয়ের একটি চলচ্চিত্র, ২০২১ সালে পৃথিবীর মহাসাগরের তাপমাত্রা *এখন পর্যন্ত রেকর্ডকৃত উষ্ণতম।
সমুদ্রের ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ব্যাপকমাত্রার চরম আবহাওয়া/ জলবায়ুজনিত ঘটনা যা অ্যান্টার্কটিকার বরফের তাকগুলির অস্থিতিশীলতা ও সমুদ্রতলের ব্যাপক বৃদ্ধির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
নয়া বৈজ্ঞানিকের প্রতিবেদন অনুসারে, গত সাত বছর ছিল এখন পর্যন্ত উষ্ণতম। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডাব্লিউএমও) এর বিশ্লেষণের জন্যে ব্যবহৃত আন্তর্জাতিক ডেটাসেটে গত বছরের অবস্থান পঞ্চম, ষষ্ঠ বা সপ্তম। রেকর্ডে ২০২১ সাল উষ্ণতম বছর নয় বলে এটা নিয়ে অত্যুৎসাহের কোন কারণ নেই:
২০২১ সালে লা নিনা (ছোট খুকি) আবহাওয়া পরিস্থিতির শীতল প্রভাব সত্ত্বেও জলবায়ু পরিবর্তন দ্রুত অব্যাহত থাকায় গত সাত বছর রেকর্ডে সবচেয়ে উষ্ণ ছিল।
…২০২১ সাল জলবায়ু বিজ্ঞানীদের কানাডার লিটনে প্রায় ৫০ ডিগ্রি রেকর্ড করার মতো কিছু কিছু স্থানে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বড় ব্যবধানে তাপমাত্রার রেকর্ডের ভাঙ্গনে হতবাক হতে দেখেছে। পূর্ববর্তী গবেষণা অনুসারে জলবায়ু পরিবর্তন ছাড়া এই ঘটনাটি “কার্যত অসম্ভব” হতো।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা অনুসারে, লা নিনা (ছোট খুকি) বলতে “মধ্য ও পূর্ব নিরক্ষীয় প্রশান্ত মহাসাগরে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রার বড় আকারের শীতলতাকে বোঝায়”।
এই ডব্লিউএমও ইউটিউব অ্যানিমেশনে নিচের সতর্কতাটি রয়েছে: “বায়ুমণ্ডলে রেকর্ড মাত্রার তাপ আটকে রাখা গ্রিনহাউস গ্যাসের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এবং অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী জলবায়ু পরিবর্তন প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে মনে হচ্ছে”।
ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা ১৮৮০ সাল থেকে তাপমাত্রার বৈচিত্র্যের একটি অ্যানিমেশন তৈরি করেছে যা টুইটার ব্যবহারকারী নিউক্লীয় প্রকৌশল ভাগাভাগি করেছে:
Wanna see something really scary?🔥
“Today, our planet revolves at its hottest levels on record — 1.1°C higher than at the beginning of the Industrial Revolution. The drumbeat has been steady; the past seven years have been the hottest on record.” https://t.co/eZVZn6NwRD pic.twitter.com/lkxFtIEIMx
— Nuclear Engineering (@NuclearEngnrng) January 20, 2022
সত্যিই ভীতিকর কিছু দেখতে চান?🔥
“আজকে আমাদের গ্রহ তার এযাবৎকালের উষ্ণতম – শিল্পবিপ্লব শুরুর সময় থেকে ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি – স্তরে আবর্তন করছে। দামামা বেজেই চলছে; রেকর্ডে গত সাত বছর সবচেয়ে উষ্ণ ছিল।”
নতুন নতুন রেকর্ডের আঘা্তের কথা বাদ দিলেও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকারি প্যানেল (আইপিসিসি) কপ২৬ এর লাল সংকেত নিয়ে নতুন করে ভাবনা-চিন্তার এখনই সময়।