মালয়েশিয়ার শিক্ষার্থীরা আদিবাসী ভাষার প্রচার বাড়াতে নিজেদের পড়াশোনার কাজে ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করছে

মালয়েশিয়ার সারাওয়াকে ঐতিহ্যবাহী নৃত্য অনুষ্ঠানের ছবি। ছবি তুলেছেন ল্যান রাসো ভায়া ফ্লিকার (সিসি বাই-এনসি-এনডি ২.০)

ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি পেট্রোনস ইন পেরাক এর একদল শিক্ষার্থী মালয়েশিয়ার আদিবাসী ভাষার প্রচার বাড়াতে সম্প্রতি একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করেছে। গ্লোবাল ভয়েসেসের পক্ষ থেকে তাদের ইন্টারভিউ নেয়া হয়েছে এবং কিভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দেশটির আধিবাসী ভাষার প্রচারণা সচেতনতার বিষয়ে সবাইকে জানানোর উদ্যোগ নিয়েছেন উদ্যোক্তারা সেটি জানার চেষ্টা করা হয়েছে।

মালয়েশিয়ার মোট জনসংখ্যার ১৩.৮ শতাংশ আধিবাসী মানুষ। দেশটিতে ১৩৭টি আদিবাসী ভাষা রয়েছে। পূর্ব মালয়েশিয়া এলাকায় অবস্থিত অংশে সবচেয়ে বেশি আদিবাসী মানুষের অবস্থান যার মধ্যে বেশির ভাগেই সারাওয়াক এবং সাবাহ। এর মধ্যে পূর্ব  মালয়েশিয়া অংশে সবচেয়ে প্রচলিত আদিবাসীদের ভাষা হচ্ছে কাদাযানদুসান (সাবাহ) এবং ইবান (সারাওয়াক)।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক মালয়েশিয়ানই আধিবাসী ভাষা শিখতে চান:

দীর্ঘ একটি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, অনেক আদিবাসী গ্রুপ বিশেষ করে তরুণদের বড় একটি অংশই নিজেদের এলাকা বা জন্মস্থান (মালয়ের কামপুং) ছেড়ে তুলনামূলক শহর এলাকায় চলে যাচ্ছে যেখানে আরো বেশি সুযোগ, সুবিধা রয়েছে। তারা মূলত বেশি ব্যবহৃত চায়না, মালয়েশিয়ার বাধ্যতামূলক মালয় ভাষা এবং ইংরেজি ভাষাই শিখছে নিজেদের বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে। তবে কিছুটা পরিবর্তনও এসেছে। কিছু মালয়েশিয়ান, চায়ান বা ভারতের মানুষেরা বিভিন্ন পর্যায়ে কিছুটা আদিবাসী ভাষা শিখছে।

করোনা মহামারীর সময়ে বিভিন্ন গ্রুপ আদিবাসী ভাষা প্রচার করার বিষয়ে বলেছে:

কোভিড-১৯ মহামারীর মালয়েশিয়াতে আদিবাসী ভাষা প্রচার করার কাজটি ব্যহত করেছে অনেকখানি। এর অন্যতম কারণ ছিল তাদের সরাসরি আয়োজন করা অনেক আয়োজন বাদ হয়েছে, তাদের আয়ের পরিমান কমে গেছে এবং তারা ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করার মাধ্যমে ইন্টারনেট ‍দুনিয়ায় নিজেদের কাজগুলো করার চেষ্টা করে গেছে।

শিক্ষার্থীদের দলটি আশা করছে ‘মালয়েশিয়ায় আদিবাসী ভাষার প্রচার’ বা পিআইএলএম শীর্ষক ওয়েবিনারের মাধ্যমে তারা বড় সংখ্যক শিক্ষার্থীদের মধ্যে আদিবাসী ভাষার গুরুত্ব তুলে ধরতে পারবেন।

ওয়েবিনারটি অনুষ্টিত হয় ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর যেখানে ছিল ফিচার্ড টক, শিক্ষা বিষয়ক আলাদা পর্ব, স্টোরিটেলিং কর্মশালা এবং আলাদা আয়োজন। এ আয়োজনে ‘ইন্ডিজেনাস ল্যাংগুয়েজ ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম অ্যান্ড দ্য আপকামিং ইন্টারন্যাশনাল ডিকেড অব ইন্ডিজেনাস ল্যাংগুয়েজেস ২০২২-২০৩২’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আলোচনা করেছেন রাইজিং ভয়েসের পরিচালক এডি অ্যাভিলা।

পিআইএলএম আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দলটি নিজেদের আয়োজন নিয়ে করেছে বিশেষ পোস্টার এবং গানের প্রতিযোগিতার বিষয়টিও বিশেষ ভাবে তুলে ধরেছে। আয়োজনটি হওয়ার আগে তারা প্রায় ২৯টি আবেদন পেয়েছে।

তারা ব্যাখ্যা করে জানিয়েছে পোস্টার প্রতিযোগিতাটি কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল আদিবাসী ভাষায় দেশের সংস্কৃতি এবং ইতিহাস তুলে ধরার ক্ষেত্রে:

আদিবাসী কমিউনিটির মধ্যে আদিবাসী ভাষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সুযোগ থাকবে নতুন কিছু করার, প্রতিফলন ঘটানো। উদাহরণস্বরূপ, বিভিন্ন নকশায়, শিক্ষার্থীরা দেশীয় ভাষার গুরুত্ব তুলে ধরতে সফল হয়েছিল। এবং বুঝতে পেরেছিল এ আদিবাসী ভাষাগুলো যতদ্রুত সম্ভব সংরক্ষণ করার প্রয়োজন।

আয়োজকেরা বিভিন্ন অদিবাসী নন এমন শিক্ষার্থীদের গানের প্রতিযোগিতারও বেশ প্রশংসা করেছে:

এটা খুবই মজার বিষয় ছিল যে, এ আয়োজনের গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া বেশির ভাগই ছিল আদিবাসী নন এমন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু আদিবাসী সংগীত ও ভাষা নিয়ে তাদের কার্যক্রম ছিল প্রশংসনীয়। আর তাদের এ আদিবাসী সংগীত আদিবাসী বক্তাদের কাছে যেমন প্রংশসা পেয়েছে তেমনি আদিবাসী নন এমনদের কাছেও প্রশংসিত হয়েছে।

অংশগ্রহণকারীরাও এ উদ্যোগের মাধ্যমে বুঝতে পেরেছে কিভাবে আদিবাসী ভাষাগুলোকে আরো তুলে ধরা যায় সবার মাঝে:

আয়োজনের প্রস্তুতিতে, আমরা শিখেছি যে আমরা যে তথ্যগুলি প্রকাশ করেছি তা যতটা সম্ভব নির্ভুল তা নিশ্চিত করার জন্য অনেক গবেষণা করতে হবে। এর মধ্যে আরো গভীর ভাবে গবেষণা জার্নালে মনযোগী হওয়া এবং এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সঙ্গে আরো বেশি যুক্ত থেকে তথ্য খোঁজার বিষয়টি উল্লেখযাগ্য।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .