- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

#নি_উনা_মেনোস (একজনও কম নয়) এর অর্ধ যুগপুর্তি: আর্জেন্টিনীয় নারীবাদী আন্দোলনের বিজয় ও নতুন দাবি

বিষয়বস্তু: ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম, নাগরিক মাধ্যম, মানবাধিকার, লিঙ্গ ও নারী, সমকামী অধিকার, Pride 2021: Growing visibility, increasing attacks

৩ জুন তারিখে নি_উনা_মেনোস-এর বার্ষিকীতে পোস্ট করা দাবির তালিকা [1]র প্রচ্ছদ, অনুমোদন নিয়ে ব্যবহৃত।

৩ জুন ছিল আর্জেন্টিনায় শুরু হয়ে দ্রুত লাতিন আমেরিকার বাকী অংশে এবং তার বাইরেও ছড়িয়ে পড়া একটি নারীবাদী আন্দোলন [2] নি_উনা_মেনোস (“একজন [নারী]ও কম নয়”) প্রচারণার ৬ষ্ঠ বার্ষিকী।

৩ জুন, ২০১৫ তারিখে ২০০টিরও বেশি আর্জেন্টিনীয় নারীবাদী সংগঠন “আমরা মুক্ত ও স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই” স্লোগানের আওতায় নতুন একগুচ্ছ দাবিতে সম্মত হয়। আন্দোলনটি এখন এই মুহুর্তে একটি এলজিবিটিআই+ দৃষ্টিভঙ্গি ঘিরে নারীদের অর্থনৈতিক ও আইনি অধিকারগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার দিকে মনোনিবেশ করেছে।

আর্জেন্টিনার ৮০টিরও বেশি শহরে লিঙ্গ সহিংসতা ও নারী হত্যার প্রতিবাদে নারীদের জড়ো হওয়া জুনের সেই প্রথম দিনের পর থেকে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ চালু করা হয়েছে। নি_উনা_মেনোস স্লোগানের জাতীয় বিক্ষোভ [3]টি আজ দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে একাধারে একটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।

ছেলেবন্ধু  বয়ফ্রেন্ড মানুয়েল মান্সিইয়ার হাতে নিহত ১৪ বছরের কিশোরী কিয়ারা পায় হত্যাকাণ্ডে [4]র নিন্দা জানানো বিক্ষোভটি আর্জেন্টিনার রাস্তায় ছড়িয়ে যাওয়ার আগে প্রথমে শুরু হয় সামাজিক গণযোগাযোগ মাধ্যমে। তারপর থেকে নি_উনা_মেনোস আন্দোলন বেশ কয়েকটি উদ্যোগের ভিত্তি স্থাপন করেছে।

এর মধ্যে রয়েছে প্রথম বিক্ষোভের ঠিক একদিন পরেই আর্জেন্টিনীয় সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক একটি নারীহত্যা সম্পর্কিত নিবন্ধন [5] তৈরি। অন্যান্য উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে মানবাধিকারের জন্যে আর্জেন্টিনীয় সচিবালয়ের চালু করা নারীহত্যা নিবন্ধন, ব্যবস্থিতকরণ ও পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র [6]। এই কেন্দ্রটির উদ্দেশ্য হলো সমাধানের প্রস্তাব দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে এই বিষয় সংক্রান্ত পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষণ জড়ো করার জন্যে লিঙ্গ সহিংস ঘটনাবলীর পরিমাণগত রেকর্ড সংরক্ষণ।

২০১৫ সালের ৩ জুন তারিখে আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে নারি হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে মিছিল এল সিগ্লো (শতাব্দী) [7] থেকে নেওয়া পর্দাছবি।

২০১৫ সালের নভেম্বরে নি_উনা_মেনোস আন্দোলনের দাবির ফলে লিঙ্গ সহিংসতার শিকারদের জন্যে আইনজীবী ব্যুরো [8] প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্যুরোটি এমন নারী অধিকার বিশেষজ্ঞ আইনজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত। তারা বিনা খরচে গার্হস্থ্য সহিংসতা ও যৌন নির্যাতনের শিকারদের আইনি প্রতিনিধিত্ব করে।

প্রতি ৩৫ ঘন্টায় একজন নারী নিহত হওয়া আর্জেন্টিনার পরিসংখ্যানগুলি [9] এখনো অত্যন্ত উদ্বেগজনক হলেও সহিংসতা ও লিঙ্গ-ভিত্তিক গৃহস্থালী হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বাড়তি সচেতনতা অন্যান্য আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করেছে, যার ফলস্বরূপ আরো সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে আমলাতন্ত্রে কর্মরত সমস্ত ব্যক্তির জন্যে  লিঙ্গ সংক্রান্ত ইস্যু এবং নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার বিষয়ে বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠা করা মাইকেলা আইন কার্যকর [10] অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও, সরকার জননীতির ক্ষেত্রে নারী ও সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় [11] প্রতিষ্ঠা করে। এরপর, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনার আইন প্রণেতারা নি_উনা_মেনোস আন্দোলনের একটি বড় দাবি গর্ভপাত বৈধকরণে [12]র পক্ষে ভোট দেয়।

#নি_উনা_মেনোস পোস্টার। ছবির সৌজন্যে এস্তেলা ফারেস [13]

আজকে ২০২১ সালে এসে, এই আন্দোলনের দাবিগুলির [14] মধ্যে কর্মসংস্থানের কোটা এবং পরিবর্তিত লিঙ্গ জনগণকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্যে একটি জাতীয় আইন, দেশের স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলার জন্যে নারী শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি ও ভর্তুকি, এবং জাতীয় নীতি এবং নারী ও এলজিবিটিআই+ জনগণের বাস্তবতার মধ্যে ব্যবধান পূরণ করার জন্যে লিঙ্গ ও নারীবাদ ভিত্তিক আইনি সংস্কার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এছাড়াও, নি_উনা_মেনোস সম্মিলন কোভিড -১৯ এর বিধিনিষেধ ভঙ্গ না করে একদিনের সক্রিয়তার জন্যে দেশজুড়ে পোস্টার [15] প্রদর্শন এবং সামাজিক বিভিন্ন নেটওয়ার্কে ভাগাভাগি করা বা ছাপিয়ে দরজা-জানালায় ঝুলিয়ে দেওয়া জন্যে স্লোগানের আহ্বান জানিয়েছে।

“আমরা নারীবাদী এই ঢেউয়ে চেপে আছি, আমাদের এই সম্মিলিত নির্মাণ ছয় বছর ধরে আমাদের জীবনকে বদলে দিয়েছে”, আন্দোলনটি তার ইনস্টাগ্রাম [16] পাতায় লিখেছে। “নারীবাদী এই সংগ্রামটি আমাদের একত্রিত করেছে, খুঁজে পেয়েছে এবং ধরে রেখেছে। আমরা সবাই আরো মুক্ত, আরো উজ্জীবিত এবং আরো স্বাধীন হতে চাই।”

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Ni Una Menos (@_niunamenos_) [17]