১১ জুন তারিখে খেলা শুরুর পর থেকে ইউরোপ হলো বিশ্বকাপের পরে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্লাব প্রতিযোগিতা ই ইউ এফ এ ইউরো’র আবাসস্থল।
কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ২০২০ সালে স্থগিত এই বছরের ইউরো ইউরোপের বিভিন্ন শহরে ১১ জুলাই পর্যন্ত চলবে। প্রায় ক্ষেত্রেই এই প্রতিযোগিতাটি বিশ্বজুড়ে জাতিগুলোকে একত্রিত করারশক্তিশালী হাতিয়ার হিসাবে কাজ করেছে এবং শিল্প, সক্রিয়তা এবং অ্যাথলেটিক্সকে একত্রিত করে এই বহু-জাতীয় প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে এই বছরটিও তার থেকে আলাদা নয়।
সেরা অবস্থান ধরে রাখার জন্যে প্রতিযোগিতায় ফিরেছে পর্তুগাল। তারা ২০১৬ সালে ফ্রান্সের বিপক্ষে জেতা সেই সাফল্যের পুনরাবৃত্তি করতে চায়।
প্রতিযোগিতা আবার শুরু হওয়া উপলক্ষ্যে পর্তুগালের শিল্পী ডেভিড ক্যারেইরা পর্তুগাল, ব্রাজিল এবং অ্যাঙ্গোলার শিল্পীদের নিয়ে ‘ভামোস কম টিউডো’ (সবার সাথে চলো) শিরোনামের একটি গান রেকর্ড করেছেন। ভিডিওটি ইতোমধ্যে ইউটিউবে ৩২ লক্ষের বেশিবার দেখা হয়েছে।
গানটিতে ব্রাজিলের লুডমিলা ও জিউলিয়া বি এবং অ্যাঙ্গোলার প্রেটো শো’কে সাথে নিয়ে ক্যারেইরা এই বছর পর্তুগালের ইউরো শিরোপা জয়ের পক্ষে তার সমর্থন জানিয়েছে।
গানটিতে পর্তুগাল জিতলে প্রচুর পর্তুগিজ ভাষী বিভিন্ন দেশে প্রত্যাশিত উদযাপনের মধ্যে গভীর সংযোগ তুলে ধরা হয়েছে:
Deixa o mundo saber que agora somos só um…
Que não existe impossível debaixo desse céu azul…
Tá no sangue, na língua, na pele, no coração…
বিশ্ব জানুক এখন আমরা শুধুই এক…
এই নীল আকাশের নীচে সেই অসম্ভাবনাটি আর নেই …
এটা আমাদের রক্তে, জিহ্বায়, ত্বকে, হৃদয়ে…
একমাত্র পর্তুগিজভাষী আফ্রিকীয় শিল্পী হিসাবে গানে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়ে তিনি কতটা গর্বিত শো তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি ব্যবহার করে দেখিয়েছেন:
Voir cette publication sur Instagram
এই ভিডিওটি এমনি এমনিই হাজির হয়নি, কারণ পর্তুগিজভাষী আফ্রিকীয় অনেক দেশই পর্তুগিজ ফুটবল ব্যাপকভাবে অনুসরণ করে থাকে।
উদাহরণস্বরূপ, ২০২১ সালের জাতীয় প্রতিযোগিতায় লিসবন ক্লাব স্পোর্টিংয়ের বিজয় মাপুতোতে (মোজাম্বিক) সমর্থকরা উৎসাহের সাথে উদযাপন করেছে।
এর জবাবে, স্পোর্টিং ক্লাবটি উত্তর মোজাম্বিকের কাবো দেলগাদোতে সশস্ত্র সংঘাতে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের সমর্থনে সংহতি প্রচারণার আয়োজন করে।
Hoje entramos em campo com ‘???? ???????’ inscrito nas costas das camisolas dos jogadores em vez dos seus nomes.
O objectivo é alertar e sensibilizar todos para os graves acontecimentos que têm afectado essa região de Moçambique. ? #DiaDeSporting pic.twitter.com/00ogjvk3Am
— Sporting Clube de Portugal ? (@Sporting_CP) May 15, 2021
আজকে আমরা শার্টের পিছনে খেলোয়াড়দের নামের পরিবর্তে ‘কাবো দেলগাদো’ লেখা নিয়ে মাঠে গিয়েছিলাম।
এর লক্ষ্য হলো মোজাম্বিকের এই অঞ্চলটিকে প্রভাবিত করা গুরুতর ঘটনাগুলো সম্পর্কে সতর্ক এবং সচেতন করা।
লুসোফোন অঞ্চলের শিল্পীদের গানটি স্পষ্টভাবেই সংস্কৃতি এবং খেলাধুলার মাধ্যমে অ্যাঙ্গোলা, ব্রাজিল এবং পর্তুগালের মধ্যে সম্পর্কের জোরদারের প্রতিনিধিত্ব করে। ২০০১ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে ব্রাজিলীয় কোচ লুইজ ফিলিপ স্কোলারি পর্তুগিজ ক্লাবটিকে প্রশিক্ষণ দেওয়াতে ২০০৪ সালে ইউরোতে রানার-আপ এবং ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে চতুর্থ হয়।
একইভাবে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পর্তুগিজ প্রশিক্ষকরা যে ব্রাজিলীয় ফুটবলে বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে সেটা লক্ষণীয়। লিসবনের স্থানীয় জর্জি জেসুস যেমন তার একটি প্রধান উদাহরণ। ফ্লেমেঙ্গোর কোচ হিসেবে জিসুস শুধু ২০১৯ সালে লিবার্তাদোরেস কাপই নয় ব্রাজিলীয় শিরোপাও জিতিয়েছেন।
ইউরোতে একটি পর্তুগিজ জয়ের মানে হলো এই পর্তুগিজ ভাষী দেশগুলির জন্যে একটি জয় – জাতিগুলোর মধ্যে একটি ঐক্যের চিহ্ন। শিল্পীরা গানটিতে যেমন গেয়েছে: ” একসাথে, একটা গানের সাথে চলো”।
মোট হিসেব করলে, অনুমান করা যায় সারা বিশ্বে ২৮ কোটিরও বেশি পর্তুগিজ ভাষায় কথাবলা লোক রয়েছে। পর্তুগিজভাষী দেশগুলির এই গোষ্ঠীটিকে পর্তুগিজ ভাষার দেশসমূহের সম্প্রদায় (সিপিএলপি) বলা হয় যার মধ্যে অ্যাঙ্গোলা, ব্রাজিল, কেপ ভার্দে, গিনি-বিসাউ, মোজাম্বিক, পর্তুগাল এবং সাও টোমে ও প্রিন্সিপে রয়েছে।