- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

কোভিড -১৯ মহামারীর কারণে অনাহারী মানুষের মুখে আহার তুলে দিচ্ছে কতিপয় উদ্যোগ

বিষয়বস্তু: দক্ষিণ এশিয়া, বাংলাদেশ, অ্যাক্টিভিজম, খাদ্য, দুর্যোগ, নাগরিক মাধ্যম, ভাল খবর, মানবতামূলক কার্যক্রম, সরকার
লকডাউনের জন্যে ক্ষতিগ্রস্ত রিক্সাওয়ালা ও অন্যান্য নিন্ম আয়ের মানুষের জন্যে থরে থরে সাজিয়ে রাখা ইফতার। [1]

এতিম শিশু, রিকশাচালক, হকার, এবং অন্য সকল প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নাগরিক যারা লকডাউনের সময় কর্মহীন হয়ে পড়েছে তাদের জন্য সাজিয়ে রাখা ইফতার। ছবি তুলেছেন লিজা আসমা আক্তার। মেহমানখানা ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।

বিশ্বের অনেক দেশের মত বাংলাদেশেও গত এপ্রিল ২০২১ থেকে কোভিড-১৯ নামের মহামারীর দ্বিতীয় ওয়েভ [2] চলছে এবং আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার দুটোই বেড়ে গেছে। তবে জুন ২০২১ মাসে বাংলাদেশে এই পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি ঘটা [3] শুরু করেছে। এই মহামারীর কারণে দেশে বেকারত্বের হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়ে গেছে। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় চলমান লকডাউনের কারণে অনেকে অফিস ও ব্যবসা বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে। তাই বিশেষ করে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে যারা দিন আনে দিন খায় এবং অন্য সকল নিম্ন আয়ের মানুষ যারা আয় করতে পারছেন না, তাদের জন্য পরিস্থিতি অবর্ণনীয় হয়ে উঠেছে।

সরকারের কার্যকর ও পর্যাপ্ত সামাজিক নিরাপত্তা বলয় [4] না থাকায় নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং অন্য নিম্ন আয়ের অনেক পরিবারের পক্ষে দিনে একবেলা পরিবারের মুখে আহার যোগানো অসম্ভব হয়ে পড়ছে। তবে সরকার ও সুশীল সমাজের বেশ কিছু উদ্যোগ এই সকল অনাহারী মানুষের মুখে আহার তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এইসব উদ্যোগে অর্থ যোগান দাতাদের মধ্যে রয়েছেন সাধারণ নাগরিক, সামাজিক দায়ববদ্ধতা থেকে আসা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য দাতব্য প্রতিষ্ঠান।

বাংলাদেশে ২০২০ সালের মার্চ মাসে ঢাকায় প্রথম কোভিড-১৯ এর রোগী আবিস্কার হওয়ার পর সরকার ২৬ মার্চ, ২০২০ [5] তারিখে সাধারণ ছুটির (লকডাউন) আওতায় সেবাধর্মী খাত ও জরুরী সেবা ছাড়া সকল ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। এই ঘটনায় হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে পরে আর তাদের পক্ষে নগরে বসবাসের খরচ মেটানো সম্ভব ছিল না। ফলে তারা রাজধানী ঢাকা বা বড় শহর ছেড়ে নিজ নিজ গ্রামে পাড়ি জমায় [6] যেখানে তাদের কাজের তেমন কোন সুযোগ ছিল না। ২০২০ এর জুন মাস থেকে লকডাউন শিথিল করা হয় এবং অর্থনীতির চাকা আবার গতিশীল হওয়া শুরু করে। তবে লকডাউনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব নিম্ন আয়ের মানুষদের উপর তখনও ছিল।

২০২১ এর মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়, যার ফলে ৫ এপ্রিল ২০২১ থেকে সারা দেশে আবার লকডাউন দেওয়া হয়। এই ঢেউ ভারতের মত বিপর্যয়কর [7] না হলেও দিন আনা দিন খাওয়া কর্মজীবী মানুষদের ক্ষেত্রে সেটি আবার চরম হতাশার সৃষ্টি করে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সেটি শিথিল করা হলেও [8] ভারত সীমান্তবর্তী জেলায় আবার নতুন করে লকডাউন দেওয়া শুরু হয়েছে।

তবে গত বছরের লকডাউন এর শুরু থেকে বাংলাদেশ সরকার ও বেসরকারি অনেক সংগঠন অসহায় ও ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করে। আমরা এ সকল উদ্যোগের কয়েকটি এখানে তুলে ধরছি।

“৩৩৩” – নাগরিক সেবা ও তথ্য হেল্পলাইন

বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এর আইসিটি ডিভিশন [9] এর এটুআই কর্মসূচীর [10] আওতায় নাগরিক পরিষেবা ও তথ্য বিষয়ক কল সেন্টার ‘৩৩৩’ [11] চালু হয় ২০১৮ সালে [12]। ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে এই নাম্বারে কোভিড -১৯ সংক্রান্ত তথ্য ও টেলিমেডিসিন [13] সেবা দেয়া হচ্ছে এবং যে সমস্ত নাগরিক অনাহারে রয়েছে তাদের জন্য জরুরী খাদ্য সহায়তা হিসেবে এই নাম্বার যুক্ত করা হয়। বাংলাদেশের অনেক নিন্ম-মধ্যবিত্ত পরিবার মহামারীর এই কঠিন সময়ে অসহায় অবস্থায় রয়েছে যাদের অনেকে খাবারের জন্য প্রতিবেশী বা আত্মীয়-​স্বজন কারো কাছে হাত পাতাকে নিজের জন্য এক অসন্মান হিসেবে বিবেচনা করে।

‘৩৩৩’ কী ভাবে কাজ করে সেটি এর ফেসবুকের পাতার এক স্ট্যাটাসে [14] তুলে ধরা হয়েছেঃ

খাদ্য সহায়তা পাওয়ার জন্য ৩৩৩ তে ফোন করুন। ৩৩৩ তে ফোন দেওয়ার পর ৩ চাপুন প্রকৃত সেবাপ্রার্থীরা যেন তাদের সেবাটি সঠিকভাবে পেতে পারেন, সেজন্য আইভিআর সিস্টেমের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে একটি স্ক্রিনিং প্রক্রিয়ার পরে কলটি এজেন্টের কাছে পাঠানো হয়। তারপর আপনার সমস্যার কথা বলুন আমাদের এজেন্টের কাছে। আমাদের এজেন্ট সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাছে আপনার তথ্যটি পাঠিয়ে দিবেন। সরেজমিনে যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত অভাবী মানুষের বাড়িতে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের জরুরি সাড়াদান কেন্দ্র মাঠ প্রশাসন থেকে জরুরী খাদ্য সহায়তার চাহিদার তথ্য সংগ্রহ করে। পরে এই কেন্দ্র থেকে খাদ্য বরাদ্দ মাঠ প্রশাসন এর মাধ্যমে অভাবীদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। শুধুমাত্র ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে, খাদ্য সহায়তার জন্য ৪৬,৬০০টিরও বেশি পরিবার এই হেল্পলাইনটিতে কল করেছে। ক্ষুধার্তদের জন্য জরুরি খাদ্য সহায়তা এই সেবা সেকেন্ড ওয়েভের লকডাউনের সময়ও চলমান, যদিও কিছু অভিযোগ এসেছে [15] এ সেবা নিয়ে।

উদাহরণস্বরূপ, নারায়ণগঞ্জের এক ব্যক্তি এ বছর মে মাসে জরুরি খাদ্য সহায়তার জন্য ‘৩৩৩’ ফোন করেছিলেন। সরেজমিনে যাচাই করার সময় কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছিল [16] যে ব্যক্তিটির একটি বাড়ি এবং ব্যবসা রয়েছে এবং এই সেবার অপব্যবহারের জন্যে জরিমানা হিসাবে তাকে ১০০ জন নিম্ন-আয়ের মানুষকে খাবার সরবরাহ করতে বলা হয়েছে। তবে পরে জানা গেছে যে [15] একটি বাড়ি মালিক হওয়া সত্ত্বেও আংশিক শারীরিক অক্ষমতার কারণে তিনি পূর্ণ কাজ করতে সক্ষম নন এবং ব্যবসা হারিয়েছেন। সত্যি তার খাদ্য সহায়তার দরকার ছিল।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এর ত্রাণ প্রচেষ্টা। ছবি বিদ্যানন্দ ফেসবুকের পাতা থেকে নেওয়া হয়েছে। [17]

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এর ত্রাণ প্রচেষ্টা। ছবি বিদ্যানন্দ ফেসবুকের পাতা থেকে নেয়া হয়েছে এবং অনুমতিক্রমে ব্যবহার করা হয়েছে।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এর এক টাকায় আহার

আইটির পেশা ছেড়ে একটিভিস্ট এ পরিণত হওয়ার কিশোর কুমার দাশ এর স্বেচ্ছাসেবী এক উদ্যোগ এর নাম বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন [18] যার যাত্রা শুরু হয় ২০১৩ সালে। এই সংগঠন শুরুর দিকে অসহায় পথশিশুদের লেখাপড়া করানোর মহান দায়িত্ব নিয়েছিল কিন্তু দেখা গেল খাদ্যের সন্ধানে ঘুরে অনেক পথশিশু লেখাপড়া করতে পারে না। ২০১৬ সালে বিদ্যানন্দ এইসব পথশিশুদের এক টাকায় আহার [19] প্রদান করা শুরু করে এবং ক্রমশঃ এই সেবা অন্যান্য ক্ষুধার্ত ও দুঃস্থ মানুষদের মুখে খাবার যোগানোর এক মাধ্যম হয়। বাজার মূল্য হিসেবে এই খাবারের দাম এক টাকার অনেক অনেক বেশী। তবে সেটি এক টাকায় দেওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে ক্ষুধার্তরা যেন না ভাবে যে এটি এক ধরনের ভিক্ষা। মূলত এক টাকা দিয়ে খাবার কিনে খাওয়ার মধ্যে দিয়ে ক্ষুধার্তরা যেন নিজেদের সম্মান বজায় রেখে খেতে পারে তার জন্য এই উদ্যোগ।

গতবছর এবং এবছর লকডাউনের সময়কালে, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন কেবল রাজধানী ঢাকয়ই নয়, সারা বাংলাদেশ জুড়ে বিপুল পরিমাণে খাদ্য এবং অন্যান্য সহায়তা [21] প্রদান শুরু করে।

বিদ্যানন্দের এক স্বেচ্ছাসেবীর বয়ে আনা এক খাবারের বাক্স এক আনাহারী বৃদ্ধার মুখে হাসি ফোটায়। [22]

বিদ্যানন্দের এক স্বেচ্ছাসেবীর বয়ে আনা এক খাবারের বাক্স এক আনাহারী বৃদ্ধার মুখে হাসি ফোটায়। ছবি বিদ্যানন্দ ফেসবুকের পাতা থেকে নেওয়া হয়েছে এবং অনুমতিক্রমে ব্যবহার করা হয়েছে।

ফেসবুকের নিজস্ব পাতায় বিদ্যানন্দের করা এই পোস্ট [23] তুলে ধরছে আনাহারে থাকা মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে তাদের স্বেচ্ছাসেবীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টার কথাঃ

তীব্র গরমও যেন থামাতে পারেনা তাঁদের। এভাবে সুপার ম্যানের মতো প্রতিটি স্বেচ্ছাসেবক এগিয়ে যায় হাত ভর্তি খাবার নিয়ে, আর নিশ্চিত করে শত শত পরিবারের মুখের হাসি।

বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে খাবার সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যানন্দ সরকারী সংস্থা যেমন, সামরিক বাহিনী, পুলিশ, ও বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড এর সাহায্য গ্রহণ করে থাকে। বিদ্যানন্দের ফেসবুক পাতায় [24] প্রদান করা এক সংবাদে [25] জানা যাচ্ছে ১ মে, ২০২০ তারিখে সীমান্তবর্তী কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলায় প্রায় এক হাজার কর্মহীন পরিবারের কাছে বিদ্যানন্দের খাবার পৌঁছে দেয় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বাহিনী।

মেহেমান খানা ও অভুক্তদের ইফতারি

এবছর মুসলমানদের পবিত্র মাস রমজান মাস [26] শুরু হয় এপ্রিল মাসে। ঢাকা শহরের অন্যতম বাসিন্দারা হচ্ছে এখানকার শ্রমজীবী মানুষ যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ঢাকার রিকশাওয়ালা। এবার লকডাউনের কারণে বাসায় বসে থাকা ঢাকা শহরে অনেক রিকশাওয়ালা ও সাধারণ মানুষের পক্ষে দুইবেলা আহার জোটানো যখন কঠিন হয়ে পড়েছিল, ঠিক সেই সময় এই সব রিকশাওয়ালার জন্য থিয়েটার কর্মী লিজা আসমা আকতার [27] ও তার বন্ধুদের উদ্যোগে মেহমানখানা [28] নামের একটি সংগঠন এগিয়ে আসে। গত এপ্রিল ২০২০ থেকে তারা ঢাকা শহরের এতিম, রিক্সাওয়ালা, হকার ইত্যাদি কিছু প্রান্তিক নাগরিকদের জন্য ইফতার এর ব্যবস্থা করা শুরু করে। এ বছর রমজান মাসে মেহমানখানা প্রতিদিন আনুমানিক ১,৫০০ নাগরিকদের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করতে পেরেছে।

সাংবাদিক আয়েশা আক্তার খেয়া ফেসবুকে লিখেছেন [29] (ছবিসহ):

এই রমজানে প্রতিদিন সন্ধ্যায় লিজা আপুর বাসা থেকে পাশের রাস্তাগুলোতে দু সারিতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা রিকশার এক মনোরম দৃশ্য আপনার দৃষ্টি কাড়বে অনায়াসেই। [..] স্বেচ্ছাসেবকগন ব্যস্ত, খাবারের প্লেটগুলো ভ্যানে উঠিয়ে যতদ্রুত সম্ভব মেহমানদের হাতে পৌঁছে দিতে। অসাধারন এ দৃশ্য যে কাউকে আন্দোলিত করতে পারে অমোঘ মানবপ্রেমে।

বাংলাদেশ ফুড রিভিউ এই উদ্যোগের বিষয়ে ইউটিউবে একটি পোস্ট [30] করেছেঃ

মেহেমানখানার অর্থায়নে কোন বিশেষ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসেনি বরঞ্চ সাধারণ মানুষের অনুদানে পরিচালিত হয় এই তথ্য জানান সমাজ কর্মী ও মেহমানখানার স্বেচ্ছাসেবী সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন [31] । আর সংগঠনটি ছোট বলে তারা এইটুকই করতে পারেঃ

সকাল বেলা ফুটপাতের চেয়ারর উপর কেউ চাল, ডাল, চিনি, চিড়া, খেজুর রেখে যান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ব্যক্তিগত যোগাযোগ, আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব সবাই মিলে দিন শেষ এ সংগ্রহের উপর ভিত্তি করেই, আমরা বিনয়ের সাথে অনেকের বড় বড় অনুদান ফিরিয়ে দেই।

শোভনের স্বপ্ন একদিন সাড়া শহর জুড়ে এ রকম অজস্র মেহমানখানা গড়ে উঠবে।

নাফিসা আনজুম খান ও একজন বাংলাদেশ

নাফিসা আনজুম খান [32] একজন ব্র্যান্ড বিশেষজ্ঞ যিনি বাংলাদেশের এক মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে কর্মরত আছেন। তিনি চল সবাই [33] নামের স্থানীয় এক এনজিওর এক প্রচারণার সাথে যুক্ত হন যার উদ্দেশ্য ছিল কোভিড-১৯ এর এই দুঃসময়ে ক্ষুধার্ত নাগরিকদের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়া। নাফিসার কাছে খাদ্য সহায়তা চেয়ে যারা ফোন বা মেসেজ করছেন তাদের কাছে তিনি একটি সিএনজিতে করে পৌঁছে খাবার দিয়ে আসছেন। তিনি ক্রিকেট খেলোয়াড় তামিম ইকবাল এর মত তারকাদের সমর্থন লাভ করেছেন [34] যা তার এই প্রচেষ্টায় আরো সাহায্য ও সমর্থন যোগাতে সাহায্য করেছে।

কোভিড-১৯ মহামারীর সময় নাফিসা খান তার অটোরিকশা নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। [35]

কোভিড-১৯ মহামারীর সময় নাফিসা খান তার অটোরিকশা নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। ছবি নাফিসা খান এর ফেসবুক পাতা থেকে নেওয়া এবং অনুমতিক্রমে প্রকাশিত।

শুধু ঢাকাই নয়, তিনি নারায়ণগঞ্জ [36], নেত্রকোনা [37]জামালপুরে [38] এর মত অন্য অনেক জেলায় খাবার নিয়ে গিয়েছেন যাতে অভুক্ত আরো অনেকের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে পারেন। এই উদ্যোগ সম্পর্কিত তথ্য তিনি প্রতিনিয়ত তার ফেসবুক পেজে তুলে ধরেছেন, যেমন এপ্রিল ১১, ২০২১ তারিখের [39] এই লেখাটিঃ

ইতিমধ্যেই ঢাকার ৬টি এলাকা থেকে ২১১টি পরিবারের ফোন কল, মেসেজ পেয়েছি যাদের খাদ্য সহযোগিতা প্রয়োজন। যার ঘরে যা আছে – চাল, ডাল, আলু, পেয়াজ আমাকে দিতে পারেন আমি সঠিক পরিবারকে পৌঁছে দিব। আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

বাংলাদেশ এক জনবহুল দেশ [40] আর কোভিড-১৯ এর এই মহামারীতে সাধারণ অভুক্ত মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে কেবল সরকারী প্রচেষ্টা যথেষ্ট ও কার্যকরী নয়। তবে এই সকল প্রশংসনীয় উদ্যোগ অভুক্ত মানুষকে প্রয়োজনীয় মুহূর্তে জোগাচ্ছে খাদ্য আর মানবতাকে জোগাচ্ছে আশা।