- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

দশ নারী ফুটবল তারকার প্রতিভা ও সক্রিয়তা খেলাটিকে বদলে দিচ্ছে

বিষয়বস্তু: খেলাধুলা, নাগরিক মাধ্যম, লিঙ্গ ও নারী, টেকনলজি ফর ট্রান্সপারেন্সী নেটওয়ার্ক

ভায়োলেটা ক্যামেরাসার সৌজন্যে পাওয়া প্রাপ্ত কোলাজ।

আরব আমিরাত থেকে থাইল্যান্ড, চিলি বা নাইজেরিয়া পর্যন্ত পুরুষ ও নারীদের কাছে আমাদের গ্রহের সবচেয়ে জনপ্রিয় [1] খেলা ফুটবল।

বিশ্ব ফুটবলের ইউনিয়ন ফিফপ্রোর একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে [2] বলা হয়েছে ১৯৯১ সালে চীনে প্রথম নারী বিশ্বকাপ [3] অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রায় ৩০ বছর পরেও ফুটবল খেলা নারীদের প্রতি কুসংস্কার “বিশ্বের অনেক অঞ্চল জুড়েই বিদ্যমান”। নারীরা শ্রমের প্রতিকূল শর্ত, বৈষম্য, যৌন হয়রানি এবং অসম বেতনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।

এতোসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে নারীদের ফুটবলকে গুরুত্বের সাথে নেওয়া শুরু হয়েছিল শুধু যে মাঠের প্রতিভার কারণে তা নয়। নারীরা তাদের পেশায় যৌনতা সম্পর্কে কথা বলতে শুরু করেছে [4], সংবাদমাধ্যমের গল্পগুলিতে [5]  নারীদের ফুটবল সম্পর্কিত গল্পগুলি বহুগুণে বেড়েছে এবং কর্পোরেট পৃষ্ঠপোষকেরা [6] মনোযোগ দিতে শুরু করেছে। বিলাসবহুল ম্যাগাজিন বিজিনেস ডেসটিনেশন্স (ব্যবসায়িক গন্তব্য) লিখেছে [7]:

২০১৯ সালের ফিফা নারী বিশ্বকাপ পেশাজীবিতার নতুন যুগের ইঙ্গিত দিয়ে নারীদের ফুটবলকে অন্য স্তরে নিয়ে গেছে।

এখানে বিশ্বব্যাপী নারী ফুটবলারদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা দেওয়া হয়েছে যারা তাদের প্রতিভা ও সক্রিয়তা দিয়ে খেলাটির গুণগত পরিবর্তন করে যাচ্ছেন:

১) পলা দাপেনা

গত নভেম্বরে বিশ্ব যখন প্রয়াত ফুটবল কিংবদন্তি দিয়েগো মারাদোনা [8]কে শ্রদ্ধা জানানোর সময় স্পেনীয় এক ফুটবলার তরুণী কিছুটা ভ্রু কুঁচকেছিলেন। চব্বিশ বছর বয়সি পলা দাপেনা স্পেনের পন্টেভেদ্রায় একটি ম্যাচের আগে আর্জেন্টিনার আরাধ্য খেলোয়াড়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন [9] এই যুক্তিতে যে ফুটবলার হিসেবে তার দক্ষতা নারীদের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও সহিংসতার একাধিক অভিযোগ [10] মুছে ফেলার জন্যে যথেষ্ট নয়। তার এই দৃষ্টিভঙ্গির জন্যে তিনি স্পেনে পন্টেভেদ্রা নগর ২০২০ [11] পুরষ্কার লাভের পর নারীবাদের একটি নতুন প্রতীকে [12] হয়ে উঠলেও মৃত্যুর হুমকি [13]সহ তিনি এখন তীব্র অনলাইন হয়রানির লক্ষ্যবস্তুতে [14] পরিণত।

বিশ্বজুড়ে যেকোন ক্রীড়াতে দাঁড়িয়ে যাওয়া নারীরা প্রায়ই অনলাইন হয়রানি ও আক্রমণের [15] শিকার হন।

View this post on Instagram

A post shared by Paula Dapena (@paulads14) [16]

২) খালিদা পোপাল

দুর্ভাগ্যজনকভাবে শুধু অনলাইন হয়রানি ফুটবল খেলোয়াড়ের মুখোমুখি হওয়া একমাত্র দুর্ব্যবহার নয়। যৌন হয়রানিরও যথেষ্ট উদাহরণ রয়েছে। আফগান জাতীয় নারী দলের খেলোয়াড় হিসেবে খালিদা পোপাল [17] ২০১৯ সালে আফগান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কেরামুদ্দিন করিম [18] বিরুদ্ধে অজ্ঞাতনামাভাবে যৌন হয়রানির অভিযোগ [19] করে তার আওয়াজ তুলেছিলেন। ফিফা [20] করিমকে আজীবন এই খেলা থেকে বিরত করলেও এই কেলেঙ্কারির কারণে দলটিকে প্রশিক্ষণ বন্ধ করে দিতে হয়েছিল।

ক্যারিয়ার বিধ্বংসী একটি আঘাতের পর পোপাল খেলাধুলা ব্যবহার করে ইউরোপের সংখ্যালঘুদের অনুপ্রেরণা দান ও ক্ষমতায়নে সহায়তা করতে কন্যাশক্তি [21] নামের একটি সংগঠন তৈরি করেছেন। এছাড়া আফগানিস্তান জাতীয় নারী ফুটবল দলে [22]র অনুষ্ঠান পরিচালকের পাশাপাশি তিনি পথশিশু বিশ্বকাপে [23]রও একজন শুভেচ্ছাদূত।

View this post on Instagram

A post shared by Khalida Popal (@khalidagirlpower) [24]

৩) মেগান রাপিনো

২০১৯ সালের নারী ব্যালন ডি’অর [25] এবং সেরা ফিফা নারী খেলোয়াড় [26] বিজেতা মেগান র‍্যাপিনো [27] মার্কিন জাতীয় সকার (ফুটবল) দলে [28] ফুটবলের মাঠে তার কেরিয়ার এবং তার বর্ণবাদবিরোধী, নারীবাদী এবং খেলাধুলায় এলজিবিটিকিউ [29]+ সক্রিয়তা [29]র জন্যে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি লাভ করেছেন। তিনি টাইম ম্যাগাজিনে ২০২০ সালের সেরা ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তি [30]দের একজন।

মার্কিন দলটির সাথে একাত্ম হয়ে ২০১৯ সালে সমান বেতনের দাবিগুলিতে রাপিনো যোগ দিয়েছিলেন এবং এসবের ফলে তাদের ফেডারেশনের বিরুদ্ধে একটি মামলা চলমান [31]। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে [29] এই খেলোয়াড় তার বার্তাটি অন্য নারীদের কাছে ভাগাভাগি করেছেন:

“কম কোন কিছুতে রাজি হবেন না – সমান অথবা বেশি কিছু চান।”

চিলি, কলম্বিয়া, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এবং আর্জেন্টিনাতে নারী ও পুরুষ ফুটবল খেলোয়াড়দের মধ্যে পারিশ্রমিকের পার্থক্য অধ্যয়ন [32] করে দেখা গেছে অপেশাদার হিসেবে খেলার কারণে সেখানকার অনেক নারী ফুটবলারদের মোটেও বেতন দেওয়া হয় না। খেলোয়াড়রা তাদের পেশাদার স্বার্থের প্রতিনিধিত্বকারী ইউনিয়নে যুক্ত থাকার ফলে অস্ট্রেলিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো জায়গাগুলিতে কাজের ক্ষেত্রগুলি অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় যৌক্তিকভাবেই ভাল। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রাজিল নারী ও পুরুষদের ফুটবল দলকে সমান বেতন দেওয়া কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি হয়ে উঠবে বলে ঘোষণা করেছিল [33]

View this post on Instagram

A post shared by Megan Rapinoe She/Her ?️‍? (@mrapinoe) [34]

৪) ইউকি নাগাসাতো

২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ২০১১ সালের বিশ্বকাপ [35]জয়ী এবং জাতীয় নারী সকার লিগে (এনডাব্লুএসএল) শিকাগো রেড স্টারসে [36]র বিশিষ্ট ফরোয়ার্ড ৩৩ বছর বয়সী জাপানি ইউকি নাগাসাতো [37] পুরুষদের অপেশাদার দল হায়াবুসা ইলেভেনে [38] অস্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত [39] হওয়ার ঘোষণা দিয়ে  জাপানি সমাজে [40] একটি উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিলেন।

ফিফার সাথে এক সাক্ষাৎকারে [41] নাগাসাতো বলেছেন দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতার মাধ্যমে তিনি শারীরিক পার্থক্যের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে পারেন। তিনি আরো বলেন, “আমি চাই নারীরা সম্মান এবং গুরুত্ব পাক প্রথমতঃ তাদের প্রতিভার জন্যে, লিঙ্গের জন্যে নয়।”

জাপান ফুটবল সমিতি ২০২১ সালের শরৎকালে জাপানে নারী ফুটবলের বিকাশ ও নারী অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা ছাড়াও জাপানি সমাজে সাধারণভাবে বৈচিত্র্য বাড়ানোর লক্ষ্যে [42] জাপানে নারী ক্ষমতায়ন লীগ [43] নামে প্রথমবারের মতো নারীদের পেশাদার লিগ চালু করতে প্রস্তুত।

View this post on Instagram

A post shared by YuKi Nagasato 永里優季 (@yuki_nagasato) [44]

৫) কাতাউন খোসরোয়ার

ইরানি-মার্কিন বংশোদ্ভুত কাতাউন “ক্যাট” খোসরোয়ার [45] ইরানি জাতীয় নারী লীগের প্রথম নারী প্রশিক্ষক [46]। এই ৩৩ বছর বয়সী জাতীয় ফুটবল দলে যোগ দিতে ১৭ বছর বয়সে তার জন্মস্থান ওকলাহোমার তুলাসা থেকে ইরানে চলে এসেছিলেন। ধারাবাহিকভাবে তিনি ১৪ বছরের দল এবং শেষ পর্যন্ত ১৯ বছরের দলের কোচ হন।

যে দেশে নারীরা অবাধে চলাচল, পোশাক পরতে এবং প্রশিক্ষণ পেতে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয় সেখানে খোসরোয়ার গ্রামাঞ্চলের মেয়েদের জড়ো করে তাদের দলকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে দিয়েছেন।

২০১১ সালে তার দল অলিম্পিক বাছাইপর্বের দ্বিতীয় দফার একটি ম্যাচ থেকে অযোগ্য ঘোষিত হয় [47] প্রতিযোগিতায় হিজাব নিষিদ্ধের কারণে, যেহেতু ইরানের নারীদের মাথার ওপর ওড়না বা হিজাব পরার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর আগে ফিফা মস্তক আচ্ছাদনের বিষয়টি অনুমোদন দিলেও হিজাব ঘাড়কেও ঢেকে ফেলায় সেটাকে অনিরাপদ মনে করা হয়, যদিও এই স্বাস্থ্যসমস্যার কোন প্রমাণ [48] নেই। তিন বছর প্রচারণার পর ফিফা নারীদের “ধর্মীয় কারণে মস্তক আচ্ছাদন” পরিধানের অনুমতি দেয় এবং অবশেষে “ক্যাট” ও তার দল আবারো আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতার অনুমতি লাভ করে।

View this post on Instagram

A post shared by Kat Khosrowyar (@kat.khosro) [49]

 ৬) সবিত্র “সাম্বা” ভান্ডারি

“আমার কখনোই ঠিকঠাক খেলার সরঞ্জাম বা বুটজুতা বা এমনকি একটা বলও ছিল না। মোজা থেকে তৈরি একটি বল দিয়ে ফুটবল খেলতে খেলতে আমি বড় হয়েছি,” কাঠমুন্ডু পোস্ট পত্রিকাকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে [50] বলেছেন নেপালের সর্বোচ্চ গোলদাতা নারী ফুটবলার [50] সবিত্র ভান্ডারি। “তবে সেই মোজার বল আমাকে যা শিখিয়েছিল তার কারণেই আমি আজ যেখানে সেখানে এসেছি,” তিনি বলেন। “আমার বাবা-মা আমাকে ছেলেদের সাথে খেলতে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করেলেও আমি তাদের বোঝাতে পেরেছিলাম।” আজ ভান্ডারি হলেন ভারতীয় নারী লিগের সর্বাধিক গোলদাতা ফুটবলার। তিনি এবং অনিতা বাসনেট হলেন  ভারতীয় নারী লিগে খেলা প্রথম নেপালি নারী [51]

View this post on Instagram

A post shared by Routine of Nepal (RONB) (@routineofnepalbanda) [52]

৭) নাদিয়া নিঘাত

জম্মু ও কাশ্মিরের [53] প্রথম নারী ফুটবল কোচ ২৪ বছরের নাদিয়া নিঘাত।  রক্ষণশীল [54] এলাকার একটি মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে বেড়ে ওঠা নিঘাতের পক্ষে ফুটবল খেলা বেছে নেওয়াটা সহজ ছিল না। তার দৃঢ় সংকল্প থাকা সত্ত্বেও জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যে নারীদের কোন ফুটবল দল না থাকার অর্থ তাকে বড় কোন প্রতিযোগিতায় ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্নটি ছেড়ে দিতে হবে। পরিবর্তে ১৯ বছর বয়সে তিনি তার নিজের ফুটবল একাডেমি শুরু করেছিলেন যাতে তিনি এমন মেয়েদের প্রশিক্ষণ [55] দিতে পারেন যারা শেষ পর্যন্ত তাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পায়। তিনি এএফসি এর ঘ এবং গ শ্রেণির প্রশিক্ষণ লাইসেন্স অর্জন করেছেন এবং আগামীবার তার খ শ্রেণির লাইসেন্সের জন্যে আবেদন [56] করতে প্রস্তুত। একটি ক শ্রেণির লাইসেন্স [57]  তাকে জাতীয় নারী ফুটবল দলের কোচ হওয়ার যোগ্যতা প্রদান করবে। বর্তমানে নিঘাত কাশ্মীরের শুধু নারীদের নিয়ে তৈরি প্রথম ফুটবল দল রিয়েল কাশ্মির এফসি [58]কে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।

View this post on Instagram

A post shared by Nadiya Nighat (@nadiyanighat) [59]

৮) মারা গোমেজ

২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে মারা গোমেজ আর্জেন্টিনায় নারীদের জাতীয় ফুটবল প্রতিযোগিতায় প্রথম তৃতীয়লিঙ্গের খেলোয়াড় হিসেবে আত্মপ্রকাশ [60] করেছেন। আমেরিকান সামোয়া, স্পেন, কানাডা এবং ইংল্যান্ডে অন্যান্য তৃতীয়লিঙ্গের ফুটবলাররা থাকায় তিনি বিশ্বের প্রথম নন [61]। গোমেজ এমন একটি দেশে নজির স্থাপন করেছেন যেখানে ফুটবল জাতীয় পরিচয়ের সাথে জড়িত।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে গোমেজ ভিলা সান কার্লোস [62] (ভিএসসি) ক্লাবে যোগদান করলেও মহামারীজনিত লকডাউনের কারণে তাকে পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে আর্জেন্টিনার ফুটবল সমিতির অনুমোদনের জন্যে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হয়েছে। অবশেষে ২৮ নভেম্বর, ২০২০ তারিখে ভিএসসির সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করার পর তিনি তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে বলেছেন:

এটা একটা দীর্ঘ যাত্রা, (যেখানে) অনেক বাধা, অনেক ভয় এবং দূঃখ ছিল। আমাকে এই ভাবনা একসময় ভাবিয়ে তুলেছিল যে আমি কখনোই হতে পারবো না বা আমার কখনো সুযোগ হবে না, সেটাই আজ উলটো ঘটেছে। আজকে আমি জীবনের অন্যতম বড় সেই লক্ষ্য পূরণ করেছি যেটাকে আমি অপরিহার্য বলে মনে করেছি এবং ভেবেছি যা কখনো পূরণ হবে না।

আজকে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে আর্জেন্টিনার নারী ফুটবলের শীর্ষ বিভাগের একজন খেলোয়াড়।

View this post on Instagram

A post shared by Mara Stefania Gomez (@maragomez.oficial) [63]

৯) আসিসাত ওশোলা

এফসি বার্সেলোনার প্রোফাইলে [64] আসিসাত ওশোলাকে আফ্রিকার অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে পরিচয় দেওয়া হয়েছে, এবং তার সঙ্গত কারণ হলো: অন্যান্য অর্জনের মধ্যে রয়েছে নাইজেরিয়ার জাতীয় দল সুপার ফ্যালকনসের এই অধিনায়ককে ২০১৪, ২০১৬, ২০১৭ এবং ২০১৯ সালে আফ্রিকার বর্ষসেরা নারী ফুটবল খেলোয়াড় [65] নির্বাচিত হওয়া। লেগোসের শহরতলী ইকোরোডুতে বেড়ে ওঠা ওশোলা নাইজেরিয়ার বিশিষ্ট ফুটবল দল রিভারস অ্যাঞ্জেলস স্পোর্টস ক্লাবে যোগদানের আগে স্থানীয়ভাবে এফসি রোবোতে তার পেশাজীবন শুরু করেছিলেন।

>২০১৫ সালে লিভারপুলে স্বাক্ষর করে তিনি [66] তার আন্তর্জাতিক পেশাজীবন শুরু করেন। তিনি ২০১২ সালে এফসি বার্সেলোনা ফেমেনিতে যোগদানের আগে আর্সেনাল এবং ডালিয়ান কোয়ানজিয়ান এফসির হয়েও খেলে  দলের অন্যতম শীর্ষ গোলদাতা [67] হয়েছেন।

ওশোলার জন্যে ঘটনাগুলি সবসময় মসৃণভাবে ঘটেনি।  বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে [68] তিনি ফুটবল যে পছন্দ করার উপযুক্ত একটা পেশাজীবন সেটা তার পরিবারকে বোঝাতে তার সংগ্রামের [69] কথা বলেছেন:

“না, পড়াশোনায় আমি অসম্ভব রকমের ভাল হওয়ায় প্রথম দিকে আমার বাবা-মা কখনোই আমাকে সমর্থন করেননি। আমাকে আমার বাবা-মায়ের তিরস্কারে স্কুল ছেড়ে দিতে হয়েছিল। এটি কোন সহজ সিদ্ধান্ত না হলেও এতে শাপে বর হয়েছে। আমি মনে করি এটা (সিদ্ধান্ত) সঠিক ছিল।”

আজকে আসিসাত ওশোলা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তিনি তার পদক্ষেপ অনুসরণ করতে আগ্রহী লাগোসের ছোট ছোট মেয়েদের সাহায্য করছেন। ফাউন্ডেশনের লক্ষ্যটি হলো বড় বড় বাধাগুলি পার হতে তাদের আত্মবিশ্বাসকে জাগিয়ে তোলা এবং একটা ক্লাব খূঁজে পেতে তাদের এক পা এগিয়ে দেওয়া।

View this post on Instagram

A post shared by Asisat Oshoala (M.O.N) (@asisat_oshoala) [70]

১০) দেলফিন ক্যাস্কারিনো

ফ্রান্সের নারীদের প্রথম বিভাগের অলিম্পিক লিয়োনাইসের হয়ে খেলছেন ২৪ বছর বয়সী রাইট উইঙ্গার দেলফিন ক্যাস্কারিনো। নারীদের ফুটবলকে উৎসাহিত করার জন্যে নিয়োজিত একটি প্রকল্প ফুত দেএলে (তাদের পা) অনুসারে [71], তিনি কৌশল ও ক্রিড়াশৈলীর সাথে সাংগঠনিক ও সহজাত ক্ষমতাকে মিশ্রিত করেছেন।

২০১২ সালের অনূর্ধ্ব-১৭ নারী বিশ্বকাপে [72] ক্যাস্কারিনো বিশ্বকাপের গৌরব অর্জন করেছেন। ২২ বছর বয়সে ক্যাস্কারিনো ইতোমধ্যে লিয়নের হয়ে ১০টি বড় বড় কাপ [73] জয় করেছেন; ৩টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ৩টি ফরাসি কাপ এবং ৪টি ফরাসি লিগ শিরোপা।

২০২০ সালে ইউরোপীয় ফুটবল সমিতির নারী শিরোপা লিগের ফাইনালে উলফসবার্গের বিরুদ্ধে ৩-১ গোলে লিয়নের জয়ের পর তিনি ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় [74] নির্বাচিত হন।

View this post on Instagram

A post shared by Delphine Cascarino (@delphine_cascarino) [75]

À la prochaine Cascarino.
Ne joue pas juste pour montrer au monde ce que tu peux faire. Joue pour montrer aux filles qui t’entourent ce qu’elles peuvent faire.
Ce maillot est pour toi.

আবার দেখা হবে, ক্যাস্কারিনো।
তুমি কী করতে পারো বিশ্বকে শুধু সেটা দেখানোর জন্যে খেলো না। তোমার চারপাশের মেয়েরা নিজেরা কী করতে পারে, সেটা তাদের দেখানোর জন্যে খেলো।
এই জার্সিটা তোমার জন্যে।