- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

দেশের কোভিড-১৯ সঙ্কট চিত্রিত করেছেন নেপালের কার্টুনশিল্পীরা

বিষয়বস্তু: দক্ষিণ এশিয়া, নেপাল, কৌতুক, ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম, নাগরিক মাধ্যম, প্রচার মাধ্যম ও সাংবাদিকতা, শিল্প ও সংস্কৃতি, কোভিড ১৯

করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার আরোপিত লকডাউনকে তীব্রতর করতে পশ্চিম নেপালের লামাহীতে স্থানীয়রা তাদের এলাকায় বেষ্টনী স্থাপন করেছে। বিবেক চৌধুরীর তোলা ছবি। অনুমতিসহ ব্যবহৃত।

নেপালের দেশব্যাপী [1] লকডাউনটি ২৪ শে মার্চ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত থাকার কথা। অনেক দেশের মতোই কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব সামাজিক বৈষম্যকে উন্মোচিত এবং সরকারি অবকাঠামোর সক্ষমতা পরীক্ষা করছে।

সমস্ত আন্দোলন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নেপালীরা তাদের দৈনন্দিন জীবনে বিরাট সব পরিবর্তনের মুখোমুখি হচ্ছে।

এর মধ্যে কয়েকটিতে রয়েছে: কাঠমণ্ডু উপত্যকা থেকে পায়ে হেঁটে দলে দলে লোকজনকে গ্রামে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে [3], ক্রমেই অনলাইন শিক্ষা [4] এবং অনলাইন ব্যবসা [5] বাড়ছে, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার সময় পুলিশী বর্বরতার [6] অভিযোগ।

প্রতিক্রিয়ায় দৈনন্দিন সামাজিক জীবনের পাশাপাশি উদ্বেগজনক সামাজিক বিষয়গুলির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে নেপালী কার্টুনশিল্পীরা ব্যাঙ্গ ও কৌতুক ব্যবহার করেছেন।

কাঠমুণ্ডুভিত্তিক রাজনৈতিক কার্টুনশিল্পী রাজেশ কেসি [7] নাগরিকদের উপর পুলিশী দমনাভিযানের প্রদর্শনীগুলি লকডাউনের পদক্ষেপগুলির কথিত লঙ্ঘনের অভিযোগে [8]র বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। কার্টুনের নিরাপত্তা কর্মী বলছে: “আমি তার পিঠে ৫ কোটি করোনা ভাইরাসকে হত্যা করেছি।”

ভাইরাসটি মেরে ফেলার উপায়

সরকার সামাজিক গণযোগাযোগ মাধ্যমে তার ভাইরাস মোকাবেলা সম্পর্কে সমালোচনার জবাব দিতে শুরু করলে গণযোগাযোগ মাধ্যমের চ্যানেলগুলির সাথে যুদ্ধরত নেপাল সরকারের প্রতিনিধিত্ব করা  এই কার্টুনটি পোস্ট করেন কেসি।

সংবাদ সংস্থা দৈনিক নয়া পত্রিকা [14]র কার্টুনশিল্পী রবি মিশ্র [15] মহাসড়কে যানবাহন নিষিদ্ধ করার পরে নিন্ম আয়ের শ্রমিকদের পায়ে হেঁটে গ্রামে ফিরে যাওয়ার দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেছেন। এতে তিনি গায়ক এবং সামাজিক কর্মী জেবি তুহুরের একটি লাইন যুক্ত করেছেন।

আরো একবার,
“লক্ষজনের জন্যে নির্জন এই দেশ,
মুষ্টিমেয়ের জন্যে স্বর্গ।
– জেবি তুহুরে

অন্নপূর্ণা পোস্টে [18]র একজন কার্টুনশিল্পী ও শিল্পী বাসু ক্ষিতিজ [19] কোন মন্দ না দেখা, কোন মন্দ না শোনা এবং কোন মন্দ কথা না বলা তিনটি বুদ্ধিমান বানর [20] এঁকে নেপাল সরকারের ভাইরাস মোকাবেলার সমালোচনা করেছেন।

কথার বুদ্বুদ ১: সরকার, আমরা পথে আটকা পড়েছি।
কথার বুদ্বুদ ২: সরকার, আমরা কোন ত্রাণ সামগ্রী পাই নি।
কথার বুদ্বুদ ৩: সরকার, জনসাধারণের অভিযোগের সমাধান করুন।

ক্ষিতিজ একটি সেলফি তোলার জন্যে ত্রাণ কাজ করতে থাকা ব্যক্তিদের সম্পর্কেও মন্তব্য করেছেন:

করোনার ত্রাণ বিতরণ উদযাপন অনুষ্ঠান!!!

সংবাদ সংস্থা নাগরিক [26] এর কার্টুনশিল্পী রবিন সায়ামি [27] ঘুষের টাকায় ঠাসা স্যুটকেস নিয়ে নেপালের প্রশাসনিক কেন্দ্র সিংহ দরবারে [28]র দিকে যাওয়া তিনজন ব্যক্তিকে দেখিয়েছেন।

সামাজিক দূরত্ব [বজায় রেখে] সিংহ দরবারের দিকে!

নেপাল [33] ম্যাগাজিনের কার্টুনশিল্পী রবীন্দ্র মনন্ধর [34] নেপাল থেকে করোনা ভাইরাস-আক্রান্ত মুসলমানদের একটি দল ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছে বলে কথিত ভারতীয় গণমাধ্যমে ছড়ানো ভুল তথ্যকে নিয়ে কটাক্ষ করেছেন।

[তারা বলছে] প্রতিবাশী মহল্লায় এটাই ঘটছে।

সংবাদ সংস্থা কান্তিপুরে [37]র কার্টুনশিল্পী অবীন শ্রেষ্ঠা [38] বাড়িতে অলসভাবে দিন কাটিয়ে লকডাউন নিয়ে অভিযোগ করা কিছু নির্দিষ্ট ধরনের মানুষদের নিয়ে কৌতুক করেছেন।

লকডাউন দিনপঞ্জি…
উপরের ব্লক (বাম থেকে ডানে):
১. পুত্র, আমাকে এক গ্লাস গরম পানি এনে দাও! – (আপনার) বৌমাকে বলুন!
২. রান্নাঘর এত্তো নোংরা! – (আপনার) বৌমাকে বলুন!
৩. বাবা, টেলিভিশন কাজ করছে না! – তোমার মাকে বলো!
নীচের ব্লক (বাম থেকে ডানে):
১. বাবা, এর মানে কী? – তোমার মাকে জিজ্ঞেস করো!
২. হ্যালো, শোনো! – ওহ, আমার ফোন বাজছে!
৩. হ্যালো! … কোন কাজ নেই, বন্ধু! এই লকডাউনে হতাশ হয়ে উঠছি!

এবং সবশেষে, ভাইরাস সম্পর্কে নেপাল সরকারের প্রতিক্রিয়া নিয়ে একটি কঠোর সমালোচনা করে মরিয়া নাগরিকদের ফিরিয়ে দেওয়া চিত্রিত করে শ্রেষ্ঠা একটি সম্পাদকীয় কার্টুন পোস্ট করেছেন:

সোমবার কান্তিপুরে প্রকাশিত @জীবনশ্রেষ্ঠার সম্পাদকীয় কার্টুন।

একটি লোক দরজায় কড়া নাড়ছে: “সরকার! সরকার!!”
দরজার ভেতর থেকে আসা কণ্ঠস্বর: “লকডাউন চলছে! বেরোতে পারবো না!”