সারা প্যাসিয়ার এই নিবন্ধটি অলাভজনক গণমাধ্যম, প্রযুক্তি ও সংস্কৃতি সংস্থা এনগেজমিডিয়ার কোকোনেট সাইটে প্রথম প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়বস্তু ভাগাভাগি করে নেওয়ার একটি চুক্তির অংশ হিসাবে এটি গ্লোবাল ভয়েসেসে পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে।
কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক প্রভাব সম্পর্কে গ্লোবাল ভয়েসেসের বিশেষ কভারেজটি দেখুন।
বিশ্বব্যাপী সরকার এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা যখন কোভিড-১৯ মহামারী নিয়ে লড়াই করতে ব্যস্ত, তখন তাদের এর সাথে সম্পর্কিত আরেকটি মহামারী: সমাজের সমস্ত ক্ষেত্র জুড়ে একইরকম বিস্তৃত ও ক্ষতিকর একটি বিশাল “তথ্য-মহামারী” মোকাবেলায় মনোনিবেশ করতে হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লুএইচও) এই তথ্য-মহামারীটিকে “প্রয়োজনের সময় জনগণের এগুলির বিশ্বাসযোগ্য উৎস এবং নির্ভরযোগ্য দিকনির্দেশনা খুঁজে পাওয়া কঠিন এমন কিছু – সঠিক এবং বেঠিক – অতিরিক্ত বেশি পরিমাণ তথ্য” হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আগের যে কোন সময়ের তুলনায় যাচাইকৃত এবং সময়োপযোগী তথ্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেটা পাওয়া আরো কঠিন। করোনা ভাইরাস সম্পর্কে ভুল এবং মিথ্যা তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বৈশ্বিক অগ্রগামী যোদ্ধাদের মধ্যে রয়েছে:
- ডাব্লুএইচও এর মতো আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা যার কোভিড-১৯ সম্পর্কিত কল্পকাহিনীগুলিকে উন্মোচিত করার জন্যে একটি নিবেদিত পাতা রয়েছে
- সন্দেহজনক বিষয়বস্তু দমনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশকারী বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যম মঞ্চ
- একাধিক ভাষায় কোভিড-১৯ বিষয়-সম্পদ ভাগাভাগি করা সাংবাদিক এবং প্রতিবেদকবৃন্দ
- #করোনা_ভাইরাস_ফ্যাক্ট/ #ডেটোস_করোনো_ভাইরাস জোটের অন্তরালে থাকা আন্তর্জাতিক প্রকৃত ঘটনা পরীক্ষণ নেটওয়ার্ক
- ইইউ বনাম মিথ্যা তথ্য-এর মতো মহাদেশনির্দিষ্ট ঘটনা পরীক্ষক
- উইচ্যাটের জন্যে টেনসেন্ট এর মতো মিথ্যা সংবাদ উন্মোচনকারী
- প্রকৃত ঘটনা পরীক্ষণের সরঞ্জামাদি সরবরাহকারী প্রযুক্তিবিদগণ
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একই ধরনের প্রচেষ্টা চলছে যেখানে অঞ্চল এবং দেশ নির্দিষ্ট গোষ্ঠীগুলি তথ্য-মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যে নিরবচ্ছিন্ন ও যৌথ প্রকৃত ঘটনা-পরীক্ষার উপর নির্ভর করছে। এই পোস্টে আমরা সেগুলির কয়েকটিকে তুলে ধরতে চাই।
উদাহরণ হিসেবে বলতে গেলে, ফিলিপাইনের সাংবাদিকরা মহামারীটি সম্পর্কে সঠিক প্রতিবেদন করার সেরা চর্চাগুলি ভাগাভাগি করছে। ইন্টারনিউজ ফিলিপাইনের প্রকৃত ঘটনা পরীক্ষণ সংস্থা ভেরা ফাইলস কীভাবে কোভিড-১৯ তথ্য-মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে সে বিষয়ে একটি ভিডিও ধারাবাহিক এর অর্থায়ন করেছে। উদাহরণস্বরূপ এই ভিডিওটি ফিলিপাইনের একটি প্রদেশে বাদুড় সম্পর্কে ভুল দাবি এবং কথিত নিশ্চিত করোনা ভাইরাস সংক্রমণের একটি মিথ্যা প্রতিবেদনকে উন্মোচন করেছে। অন্য ভিডিওটিতে কোভিড-১৯ থেকে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করা যায় তা ব্যাখ্যা করেছে।
ভারতে একই ধরনের একটি ইন্টারনিউজ প্রকল্প রয়েছে যেখানে এর অংশীদাররা ক্রমাগতভাবে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত গুজবের প্রকৃত ঘটনা যাচাই করে চলছে।
মালয়েশিয়ায় অনলাইনে করোনা ভাইরাস জনগণকে জীবন্ত লাশের মতো আচরণ করায় দাবি করা একটি ভাইরাল ভিডিওর মতো প্রচুর ভুল তথ্য ভাগাভাগি করা হচ্ছে। মালয়েশিয়ার গণমাধ্যম সংস্থা দ্য স্টার নিয়মিত মহামারীটি সম্পর্কে এই জাতীয় মিথ্যা তথ্য উন্মোচন করে থাকে।
চেকফ্যাক্টা ইন্দোনেশিয়াতেও পানিতে সিদ্ধ করে রসুনের রস খেয়ে আপনি ভাল হয়ে যেতে পারেন জাতীয় কল্পকাহিনীসহ ভাইরাসটি সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য উন্মোচন করার ক্ষেত্রে প্রথম সারিতে রয়েছে। সম্মিলিত প্রকৃত ঘটনা পরীক্ষণ এবং যাচাইকরণ প্রকল্পটি ইন্দোনেশীয় সাইবার গণমাধ্যম সমিতি, ইন্দোনেশীয় অপবাদবিরোধী সমাজ এবং স্বতন্ত্র সাংবাদিকদের জোটের সহযোগিতায় চলছে।
তাইওয়ানে তাইওয়ান প্রকৃত ঘটনা পরীক্ষণ কেন্দ্রের কোভিড-১৯ সম্পর্কিত ভুল এবং মিথ্যা তথ্যের জন্যে একটি নিবেদিত প্রকল্প রয়েছে।
মিয়ানমারে স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমারে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য ভুয়া সংবাদ এবং ধাপ্পাবাজি মোকাবেলায় তাদের ওয়েবসাইটে কোভিড-১৯ নিয়ে সর্বশেষ তথ্য সরবরাহ করছে। স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় চিকিৎসা কর্মী এবং সাধারণ জনগণ কীভাবে সুরক্ষিত থাকতে পারে সে সম্পর্কে বিভিন্ন ভিডিওর মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়াচ্ছে।
এছাড়াও বিবিসি মিয়ানমারের নাগরিকদেরকে শিখিয়ে দিচ্ছে কীভাবে থ্যাংগিয়াত বা ঐতিহ্যবাহী লোকসংগীতের মাধ্যমে তথ্য-মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করা যায়। সংস্থাটি ইন্দোনেশিয়া, ভারত, কম্বোডিয়া এবং নেপালেও অনুরূপ প্রচেষ্টাগুলিতে সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছে।
কোন স্পষ্ট পরিণতি পরিলক্ষিত না হলেও এই তথ্য-মহামারী – তর্কের খাতিরে আমাদের সময়ের প্রথম সত্যিকারের সামাজিক গণমাধ্যমের মহামারী – অব্যাহত থাকায় অবশ্যই আরো বেশি বেশি উদ্যোগ শুরু হবে এবং বৃদ্ধি পাবে। আমাদের অবহিত থাকা এবং আমাদের অংশ আমাদের করে যাওয়ার উপরেই এই উদ্যোগগুলি বজায় থাকা নির্ভর করে। তা না হলে আমরা চূড়ান্তভাবে মিথ্যা তথ্যের বিরুদ্ধে ব্যাপকতর লড়াইয়ে হেরে যাব।