কম্বোডিয়ায় কোভিড-১৯-এ বকেয়া মজুরির জন্যে গার্মেন্টস শ্রমিক ধর্মঘট

ক্যান্টেরান অ্যাপারেল (কম্বোডিয়া) কোং লিমিটেডের শ্রমিকরা বকেয়া মজুরির জন্যে বিক্ষোভ করছে। নমপেন, ২৫ মার্চ, ২০২০। (ভিওডিকে সরবরাহ করা ছবি)

কম্বোডিয়ার একটি স্বাধীন সংবাদ সাইট ভিওডি সংবাদ থেকে নেওয়া সাউত সোক প্রাথনা সম্পাদিত এই নিবন্ধটি একটি বিষয়বস্তু ভাগাভাগি করে নেওয়ার চুক্তির অংশ হিসাবে গ্লোবাল ভয়েসেসে পুনরায় প্রকাশ করা হলো। এটি ভিওডি খেমারের মূল নিবন্ধটি থেকে অনুবাদ করা

২৫ মার্চ, ২০২০ তারিখে মালিকরা তাদের নিয়মিত মজুরি দিতে ব্যর্থ হওয়ার পরে প্রায় ১,০০০ পোশাক শ্রমিক নমপেনের একটি কারখানার বাইরে বিক্ষোভ করেছে। সংস্থাটি, চলমান কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালে ক্রেতাদের কাছ থেকে পাওনা আদায় কমে আসাকে এই সমস্যার কারণে হিসেবে বলেছে।

ক্যান্টেরান অ্যাপারেল (কম্বোডিয়া) কোং লিমিটেডের নিযুক্ত কারখানার শ্রমিকরা সর্বশেষ তাদের দুই সপ্তাহের বেতন পুরোপুরি পরিশোধিত না হওয়ার কারণে বিক্ষোভ করেছে, ভিওডিকে জানিয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক সান সোফা।

সোফা বলেছে, শ্রমিকদের দাবি অনুসারে কারখানার মালিক আগামী মাসের শুরুতে শ্রমিকদের বকেয়া পুরো মজুরি প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেছিল।

শ্রমিকরা আজ থেকে নিয়মিত শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার শর্তটিকে সম্মান করতে কোম্পানিটিকে বাধ্য করার জন্যে তাদের ধর্মঘট চালিয়ে যাবে। শ্রমিকরা কোম্পানিটিকে তাদের সাথে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে বললেও কোম্পানিটি আমাদের সাথে চুক্তি করার সাহস করেনি। কোম্পানিটি শুধু এটা-সেটা অজুহাত দেখিয়েছে।

সোফা বলেছে, কারখানাটি গত চার মাস ধরে শ্রমিকদের অনিয়মিতভাবে বেতন দিচ্ছিল। তার তথ্য অনুসারে, কম্বোডিয়ার পোশাক প্রস্তুতকারক সমিতি (জিএমএসি)-এর তালিকায় মালয়েশীয় হিসেবে তালিকাভুক্ত হলেও কারখানার মালিক ছিলেন চীনা। জিএমএসি অনুসারে, কোম্পানিটিতে ৯৩৫ জন কর্মী নিযুক্ত।

কারখানাটির প্রশাসন প্রধান কিম বউ বলেছেন, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষদিকে শ্বাসযন্ত্রের একটি রোগ হিসেবে চীনে প্রথম প্রথম শনাক্ত হওয়া  কোভিড -১৯ ছড়িয়ে যাওয়ার ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা চলাকালে কোম্পানিটি এর ক্রেতাদের হারিয়েছে।

বউ বলেছেন ক্যান্টেরান আর্থিক সংকটে থাকায় সময়মতো শ্রমিকদের বেতন দিতে পারেনি। তবে তিনি বলেছেন, শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্যে কোম্পানিটি তহবিল খোঁজার চেষ্টা করছে।

কোম্পানিটি বাজারে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে এবং কোভিড -১৯ সমস্যার কারণে ক্রেতারাও তাদের অর্থ প্রদানে বিলম্ব করেছে। আমাদের কোম্পানি আমাদের শ্রমিকদের জন্যে একটি সমাধান খুঁজে পাওয়ার জোর চেষ্টা করেছিল। যাইহোক, আমাদের কাছে যথেষ্ট অর্থ রয়েছে যা দিয়ে আমরা অর্থ প্রদান করবো এবং তারা (শ্রমিকরা) পুরো বেতন না পাওয়া পর্যন্ত মালিক অর্থ প্রদান করতে থাকবে।

এ মাসের শুরুর দিক থেকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক সারসংক্ষেপ ঘোষণার সময় জানিয়েছে কম্বোডিয়ায় কোভিড-১৯ এর প্রভাবের সবচেয়ে ভাল অবস্থার ক্ষেত্রে জিডিপির ১ শতাংশেরও বেশি এবং সবচেয়ে খারাপ অবস্থার ক্ষেত্রে জিডিপির প্রায় তিন শতাংশ প্রভাবিত হতে পারে। দেশে একটি উল্লেখযোগ্য প্রকোপ ঘটলে অনুমানমূলক পরিস্থিতিতে প্রভাবটি জিডিপির ৪ শতাংশের কাছাকাছি হতে পারে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানুয়ারি থেকে (২৬ মার্চ পর্যন্ত) দেশে ভাইরাসটি থেকে ১০ জনের আরোগ্য লাভসহ মোট ৯৬টি সংক্রমণের ঘটনা নিশ্চিত করেছে।

সোফা ভিওডিকে জানিয়েছে যে শ্রমিকরা বলেছে নিয়োগকর্তা তাদের নিয়মিত পুরো মজুরি না দিলে তারা বাড়িভাড়া, বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাসের বিল, বাচ্চাদের স্কুল ফি এবং ব্যাংক ঋণের মতো  প্রতিদিনের ব্যয় মেটাতে সমস্যার মুখোমুখি হবে।

শ্রমিকদের সম্মিলিত ইউনিয়ন আন্দোলনের সভাপতি পাভ সিনা বলেছেন শ্রমিকদের পুরো মজুরি না দিয়ে সংস্থাটি আইন লঙ্ঘন করছে।

সিনা বলেছেন, ব্যয় নির্বাহ নিয়ে সংগ্রামরত সকল শ্রমিকদের সহায়তা করার জন্যে শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটি তাৎক্ষণিক সমাধান খুঁজে বের করা উচিৎ।

আমরা নিয়োগকর্তাদের শ্রমিকদের মজুরি প্রদানে বিলম্বের অজুহাত দেখানোর সুযোগ দিতে পারি না, কারণ শ্রমিকরা ঋণগ্রস্ত এবং তাদের ব্যয় নির্বাহে বিলম্বে করার সুযোগ নেই। [শ্রমিকরা] সঠিক তারিখ এবং সময়ে ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে তাদের জরিমানা করা হবে।

সংবাদটি প্রকাশের সময় পর্যন্ত মন্তব্য পাওয়ার জন্যে শ্রম মন্ত্রণালয়ের শ্রম বিরোধ ব্যুরোর উপ-প্রধান পেং ফিউনকে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .