শ্রমিক নির্যাতন নিয়ে একটি টুইটের জন্যে থাই সাংবাদিক দণ্ডিত

থাই সাংবাদিক সুচানি (ক্লোইয়ে) রুংমুয়েনপোন। ইউটিউব ভিডিও থেকে নেয়া পর্দাছবি

একটি হাঁস-মুরগির খামার ও অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যেকার শ্রম বিরোধ নিয়ে ২০১৭ সালের একটি টুইটার পোস্টের কারণে থাই সাংবাদিক সুচানি (ক্লোইয়ে) রুংমুয়েনপোনকে দুই বছরের কারাদন্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।

২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর লোপ বুরি প্রাদেশিক আদালত সুচানিকে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে থাম্মাকাসেট হাঁস-মুরগির খামারকে শ্রমিকদের “দাস শ্রমে ব্যবহারের জন্যে” ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দেওয়া হয়েছে বলে টুইট করার মাধ্যমে সুনামহানীর দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে। সে সময় সুচানি ভয়েস টিভির একজন প্রতিবেদক ছিলেন।

থাম্মাকাসেটের বিরুদ্ধে ১৪ জন অভিবাসী শ্রমিকের প্রতি নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছিল। বেশিরভাগ মিয়ানমার থেকে আসা শ্রমিকর বেশ কয়েকটি সরকারী সংস্থায় মামলাগুলো দায়ের করেছিল। তারা তাদেরকে পারিশ্রমিক ছাড় অতিরিক্ত সময় কাজ করতে বাধ্য করা, ন্যূনতম মজুরির চেয়ে কম প্রদান, চলাচল সীমাবদ্ধ করা এবং তাদের পাসপোর্ট জব্দ করে রাখার অভিযোগ করেছিল।

বিষয়টি তদন্তের পরে থাইল্যান্ডের শ্রমিক সুরক্ষা ও কল্যাণ অধিদপ্তর সংস্থাটিকে শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিল।

বিষয়টি নিয়ে সুচানি অভিবাসী শ্রমিক অধিকার নেটওয়ার্কের একটি টুইটার পোস্ট পুনঃটুইট করেছিলেন। তবে থাম্মাকাসেট সাংবাদিককে তার টুইটার মন্তব্যে “দাস শ্রম” শব্দটি ব্যবহার করে সংস্থাটির সুনামহানী করার অভিযোগ করেছে।

এছাড়াও থাম্মাক্যাসেট এই বিষয়টি নিয়ে তার সাবেক কর্মীদের বিরুদ্ধে এমনকি মানবাধিকার রক্ষাকর্মীদের বিরুদ্ধেও মানহানির অভিযোগ করেছে।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বেশ কয়েকটি নাগরিক সমাজ সংস্থা হাঁস-মুরগির খামারটির দায়েরকৃত মামলাগুলি বাতিল করার জন্যে থাই কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছে:

থাম্মাকাসেটের অভিযোগগুলিকে প্রতিশোধমূলকভাবে নির্যাতন উন্মোচনের সাথে জড়িত মানবাধিকার সুরক্ষাকারীদের হয়রানির জন্যে আনা হয়েছে বলে প্রতিপন্ন হচ্ছে। এই ধরনের প্রত্যাঘাতগুলো মানবাধিকার সুরক্ষাকারীদের কাজে হস্তক্ষেপ এবং শ্রম অধিকার সুরক্ষা বাস্তবায়নে বাধা প্রদান করে।

বর্তমানে সুচানি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তিনি আনীত অভিযোগের বিরুদ্ধে আবেদন করার পরিকল্পনা করেছেন।

প্রিয় সবাই

আপনাদের সমর্থনের জন্যে আপনাদেরকে অনেক ধন্যবাদ। আমার শক্ত না হয়ে উপায় নেই। অন্তত আমার বাচ্চা ছেলেটার জন্যে।

সুচানি ক্লোইয়ে

এছাড়াও তিনি একটি সংবাদমাধ্যমের সাথে সাক্ষাৎকারের সময় থাইল্যান্ডে বাকস্বাধীনতার পরিস্থিতি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন:

থাইল্যান্ডে একটি উচ্চ মাত্রার আত্ম-নজরদারী রয়েছে… আপনি যখন মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিষিদ্ধ করেন… তখন আপনি একটি মুক্ত সমাজকে নিষিদ্ধ করেন।

বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং মানবাধিকা্র সমর্থকরা সুচানির বিরুদ্ধে এই অভিযোগের নিন্দা জানিয়েছে। সাংবাদিকদের সুরক্ষা কমিটি আদালতের সিদ্ধান্তটির সমালোচনা করেছে:

জনগুরুত্বসম্পন্ন বিষয়ে সমালোচনামূলক মন্তব্য করার জন্যে সাংবাদিকদের কখনোই কারাদণ্ড প্রদান করা উচিৎ নয়। থাইল্যান্ড তার কঠোর এবং অবমাননাকর অপরাধমূলক মানহানির আইনটি বাতিল করার এখনি সময়।

এই মামলায় এমন ভয়ানক দণ্ড আদালতের কখনোই বিবেচনা করা উচিৎ নয়। এটি পুরোপুরি একটি প্রহসন। তবে #থাই সাংবাদিকদের স্বাধীনতার উপর এর একটি শীতল প্রভাব ফেলবে বোধহয়  #এসএলএপপি #থাম্মাকাসেট #এইচআরডি

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মানহানির আইনের ব্যবহার নিয়ে স্টেফের কার্টুন

থাম্মাকাসেটের বিরুদ্ধে শ্রম (আইন) লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়েরকারী শ্রমিকদের কিছু সাক্ষ্যপ্রমাণ শুনতে এই সংক্ষিপ্ত ভিডিওটি দেখুন:

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .