- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

তাইপেকে আমাদের সামনে তুলে ধরছে গ্লোবাল ভয়েসেস এর এক লেখিকা

বিষয়বস্তু: নাগরিক মাধ্যম

ছবি আই-ফান লিন এর আর এটি অনুমতিক্রমে প্রকাশ করা হয়েছে।

নিচের এই পোস্টটি হচ্ছে আমাদের প্রথম পোস্ট নতুন ধারাবাহিক রচনা আর এটি প্রকাশিত হয়েছে কমিউনিটি ব্লগে আর আমার এই লেখাটি পোস্ট করছি জিভি লাইফস্টাইল এর প্রকল্প হিসেবে। এটি জিভি সম্প্রদায়ের সদস্যদের সুযোগ করে দিচ্ছে তারা যে শহরে বাস করে সেটি সম্বন্ধে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং সেটির সম্বন্ধে ধারনা প্রদান করার। যদি কেউ তাইওয়ানের রাজধানী তাইপে শহর ভ্রমণের এক পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকে তাহলে এই প্রবন্ধের লেখিকার সাথে যে কেউ যে কোন পরামর্শের জন্য নির্দ্বিধায় যোগাযোগ করতে অথবা একসাথে এক কাপ কফি খাওয়ার জন্য যে কোন জায়গায় বসতে পারে।

আমার নাম হচ্ছে আই-ফান লিন আর আমি বর্তমানে আমার ডেরা হচ্ছে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপে । আর এই শহরের বিষয়ে আমার পরামর্শ হচ্ছেঃ

সুর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার সেরা স্থান:

কেপ সান্তিয়াগো হচ্ছে তাইপেতে সুর্যোদয় দেখার সেরা স্থান, এটি তাইওয়ান দ্বীপরাষ্ট্রের সবচেয়ে পূর্বের স্থান এবং সেখানে একটি বাতিঘর আছে।

আর এখানে সূর্যাস্ত দেখার জন্য তামুসি এলাকাটি সব থেকে সেরা। তামুসিতে সবচেয়ে সুন্দর ভাবে সূর্যাস্ত দেখতে চাইলে নদীর ধার ধরে বে ফিশিং উপকূল এর কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত (সান ডোমিংগো দূর্গের দিকে) পশ্চিম দিকে হেটে যেতে হবে। সূর্যাস্তের পরে, সময় হয়ে পড়ে তামুসির পুরোনো সড়কের সুস্বাদু খাবার চেখে দেখার।

সেরা স্থানীয় খাবার যা সকল দর্শনার্থীর অবশ্যই চেখে দেখা উচিত:

বা-ওয়ান। ছবি আইসনেকের থেকে নেওয়া (সিসি বাই ৩.০)

যারা মাংস ভালবাসে তাদের অবশ্যই বা-ওয়ান এর স্বাদ গ্রহণ করা উচিত। বা-ওয়ান মূলত আঁচে ভাপা মাংস যার উপরে একটা পুর দেওয়া থাকে যেটি মিষ্টি আলু আর ভাতের মাড়ের মিশ্রণ দিয়ে তৈরি। ভাপানো বা-ওয়ানের পুরোটাই খাওয়ার যোগ্য এবং এটি তখন দেখতে খানিকটা পরিষ্কার লাগে আর এর রান্নার প্রক্রিয়া মাংসের পুরোটাকে সুস্বাদু করে তোলে।

তবে যারা নিরামিষভোজী তারাও শুধু নিরামিষ খাবার পাওয়া যায় এমন রেস্তোরাঁয় গিয়ে ঢু মারতে পারেন কারণ তাইওয়ানি নিরামিষভোজী সংখ্যায় বিশাল।

আপনি নিরামিষ বা আমিষভোজনকারী যেই হন না কেন, আপনাকে তীব্র গন্ধযুক্ত টোফুর (সয়াবিন দিয়ে তৈরি দক্ষিণ এশীয় এক খাবার) স্বাদ গ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি। (তবে আমি আপনাদের সতর্ক করে দিচ্ছি)। সাধারণত নিরামিষভোজীরা এটি খেয়ে থাকে।

স্থানীয় নাগরিকদের সাথে মেশার সেরা স্থান:

আপনার যদি ভিড় পছন্দ হয়, তাহলে যে কোন বাজারে গিয়ে ঢু মারতে পারেন। আর সন্ধ্যাবেলায় নিংশিয়া সড়কের রাতের বাজারে গিয়ে হাজির হতে পারেন।

যদি কোন শান্ত নির্জনে স্থানীয় কারো সাথে কথা বলার ইচ্ছে জাগে তাহলে এর জন্য সেরা স্থান হতে পারে এসলাইট বইয়ের দোকান যা মধ্যরাত পর্যন্ত খোলা থাকে। আরেকটি উপায় হচ্ছে স্থানীয় চায়ের দোকানে বসে এক কাপ চা খাওয়া। সে ক্ষেত্রে শহরের কেন্দ্রস্থলে উইস্টেরিয়া চাখানা হচ্ছে দারুণ এক জায়গা, তবে কেবল মাওকং হচ্ছে তাইপের এমন জায়গা সেখানে আপনি ২৪ ঘণ্টা বসে চা পান ও সাথে রাতের দারুণ দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।

প্রকৃতির সাথে যুক্ত হওয়ার সেরা স্থান:

ইয়াংমিংশান হচ্ছে তাইওয়ানের এক জাতীয় উদ্যান। নগর পরিবহন ব্যবস্থার যে কোন বাসে করে মাধ্যমে যে কেউ এই পার্কে গিয়ে হাজির হতে পারে আর সেখানে অনেক পায়ে চলা পথ রয়েছে। সেখানে বন ও ঝরণা ছাড়াও রয়েছে আগ্নেয়গিরি এবং উষ্ণ প্রস্রবণ।

ছবি আই-ফান লিন এর, এবং তার অনুমতিক্রমে এখানে প্রকাশ করা হয়েছে।

ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়:

বসন্তকাল (মার্চ থেকে জুন মাস) এবং শরত্কাল (অক্টোবর থেকে নভেম্বর) তাইপে ঘুরে দেখার সবচেয়ে সেরা সময়।

সড়ক চিত্রকলা দেখার সেরা স্থান:

শিমেনডিং হচ্ছে রাস্তায় যে সমস্ত ছবি আঁকা হয় সেসবের অন্যতম এক সেরা স্থান, বিশেষ করে তাইপে সিনেমা পার্কে এর চারপাশের এলাকা।

শহরের ইতিহাস যে খানে কথা বলে:

পুরোনো তাইপেকে খুঁজে পাওয়ার জন্য লংশান মন্দির হচ্ছে এক উত্তম স্থান। এটি এখনো এক জনপ্রিয় বৌদ্ধ মন্দির এলাকা। এর কাছে রয়েছে বোপিলাও, যেখানে ২০০ বছর আগে চীন থেকে একদল নাগরিকেরা এসে বসবাস শুরু করে।

অন্যদিকে ২২৮ মেমোরিয়াল পিস পার্ক নামের উদ্যান সংক্ষেপে তাইওয়ান এর আধুনিক ইতিহাসের কথা বলে। এই উদ্যান এর কাছে রাষ্ট্রপতির দাপ্তরিক ভবন এবং ন্যাশনাল তাইওয়ান ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল এর খানিকটা অংশ। এই সকল ভবন উপনিবেশিক আমলে নির্মাণ করা হয়েছিল। পার্কের ভেতরে অবস্থিত ২২৮ স্মৃতি সংগ্রহশালা ছিল মূলত এক রেডিও স্টেশন যা ২২৮ এর ঘটনায় নাগরিকদের সমর্থন আদায়ে অবদান রাখে, উল্লেখ্য যে এই ঘটনায় চীন থেকে আসা কুওমিংটাং নামের দল তাইওয়ানের নিজস্ব প্রতিবাদ দমন করে। এছাড়াও, এই উদ্যান কয়েক দশক ধরে শহরের পুরুষ সমকামীদের পছন্দের এক মিলনস্থল, আর এই উদ্যানের এক প্রবেশদ্বার সমকামী আন্দোলনের প্রতি সমর্থনে রঙধনুর রঙ এ রাঙ্গানো হয়েছিল।