নান লিউইন এর লেখা প্রবন্ধটি ইরাওয়াদ্দি পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয় যা মায়ানমারের এক স্বাধীন সংবাদ ওয়েবসাইট। কন্টেন্ট শেয়ারিং চুক্তি অনুসারে এটি পুনরায় গ্লোবাল ভয়েসেস এ প্রকাশ করা হয়েছে।
কাচিন প্রদেশের লামিয়াং এলাকার ৫০০ একর জুড়ে গড়ে উঠা কলা বাগানের খামারসমূহ সকাল ৭টা থেকে কর্ম চঞ্চল হওয়া ওঠে শুরু হয়। মূলত রাখাইন প্রদেশের শ্রমিক, যাদের মধ্যে নারী ও পুরুষ রয়েছে, তারা একই ভাবে সদ্য কাটা কলাগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করার জন্য প্রথমে একসাথে জড়ো করে, তারপর সেগুলোকে সাদা এক রাসায়নিক দ্রবনে ডুবিয়ে রাখে। কেউ জানে না এই সাদা রাসায়নিক দ্রবণ কী বস্তু, কিন্তু সবাই বলে এই দ্রবণে কলাগুলোকে ভিজিয়ে রাখলে কলা অনেক দিন পর্যন্ত টাটকা থাকে। এরপর এক চীনা সুপারভাইজারের সতর্ক তত্বাবধানে ১২ চাকার এক ট্রাকে কলাগুলোকে তোলা হয়, যার চূড়ান্ত গন্তব্যস্থল চীনের ইউনান প্রদেশ।
“একটা ট্রাক পুরোপুরি পূর্ণ হতে প্রায় চার ঘণ্টা সময় লাগে, এরপর আমরা দুপুরের খাবারের ছুটি পাই”- একজন কর্মী এই তথ্য জানায়।
এটি হচ্ছে কাচিনে টিসু কালচারের মাধ্যমে উৎপাদিত কলা চাষ প্রদ্ধতি ক্রমশ বাড়তে থাকার এক অতি ক্ষুদ্র দৃশ্য। প্রদেশের কৃষি, গবাদিপশু ও সেচ অধিদপ্তরের মতে কাচিনে প্রায় ৬০,০০০ একর এলাকা জুড়ে কলা চাষের খামার গড়ে উঠেছে। তবে সুশীল সমাজের দল বলছে প্রদেশের ওইয়াইমাও, ভামো, শুয়েগু, মানসি, মোমাউক এবং ডোকফনিয়ান অঞ্চল যাচাই করে দেখা গেছে এখানকার ১৭০,০০০০ একর এলাকা জুড়ে এ রকম কলার বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। কলার খামার প্রতিষ্ঠাকারী বেশীর ভাগ কোম্পানির পেছনে চীনের অর্থ সাহায্য রয়েছে আর এদের বিরুদ্ধে জমি দখল, পরিবেশের ক্ষতি এবং শ্রমিকদের শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।
টিসু কালচার এর মাধ্যমে কলা চাষ লাওস ও থাইল্যান্ডে নিষিদ্ধ, কিন্তু মায়ানমারের গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত কাচিন প্রদেশের সর্বত্র এই পদ্ধতিতে কলার চাষ করা হচ্ছে, শরনার্থী হয়ে যাওয়া কাচিন আদিবাসীদের পরিত্যক্ত জমি দখল করে এখানে কোম্পানিগুলো কলা চাষের খামার গড়ে তুলছে।
সুশীল সমাজের সংবাদ অনুসারে, এই সকল কোম্পানি পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের তোয়াক্কা না করে কীটনাশক, আগাছা নির্মূলের জন্য বিষাক্ত উপাদান এবং রাসায়নিক সার ব্যবহার করেছে। এলাকার নাগরিকরা বলছে রাসায়নিক উপাদান পানির সরবরাহের নালা, দূষিত করেছে, মাটি অনুর্বর ও বিষাক্ত করে তুলেছে আর এ কারণে মাছ ও গবাদি পশুর মৃত্যু ঘটছে।
।[/caption]