- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

নেট-নাগরিক প্রতিবেদন: টেলিগ্রামের কারণে রাশিয়ার লক্ষ লক্ষ আইপি ঠিকানা ব্লক #আইপিওক্যালিপ্স

বিষয়বস্তু: রাশিয়া, আইন, নাগরিক মাধ্যম, মানবাধিকার, জিভি এডভোকেসী

রাশিয়ায় টেলিগ্রামকে ব্লক করার কথা বলা যত সহজ করা তত সহজ নয়। কেভিন রথরক মিশ্রিত ছবি।

অ্যাডভক্স নেট-নাগরিক প্রতিবেদন বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট অধিকারগুলির ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা, সমস্যা থেকে উত্তরণ এবং উদীয়মান প্রবণতাগুলির একটি আন্তর্জাতিক আলোকপাত উপস্থাপন করে।

এপ্রিল মাসের ১৬ তারিখে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যম নজরদারী প্রতিষ্ঠান জনপ্রিয় বার্তা আদান-প্রদানকারী অ্যাপ্লিকেশন টেলিগ্রাম ব্লক করা [1] শুরু করে। অথবা কমপক্ষে এটি করার চেষ্টা করে।

এপ্রিলের ১৩ তারিখে রুশ নিরাপত্তা সংস্থাগুলির কাছে টেলিগ্রাম তথ্য সংকেতায়নের চাবিগুলি হস্তান্তরে অস্বীকার করে কোম্পানিটি আইন ভঙ্গ করেছে এই মর্মে  একটি  আদালতের রায়ের [2] পর নিষেধাজ্ঞাটি এসেছে।

প্রতিক্রিয়ায় ওয়েবসাইট ব্লক কোন নিজস্ব ক্ষমতা না থাকা রুশ প্রচারমাধ্যম নজরদারী প্রতিষ্ঠান রোস্কমনাজোর রুশ আইএসপি (ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী)গুলিকে রুশ ব্যবহারকারীদের টেলিগ্রামের আইপি ঠিকানায় না পৌঁছানোর জন্যে আদেশ পাঠানো শুরু করে।

এতে একটি ইঁদুর-বিড়াল খেলার সূচনা হয় যার ফলে টেলিগ্রাম আমাজন এবং গুগল সরবরাহকৃত ক্লাউডের ব্যাকআপ পরিষেবাতে প্রত্যাবর্তন করে। এই পরিবর্তনের ফলে রোস্কমনাজোরকে লক্ষ লক্ষ আইপি ঠিকানা [3] সম্বলিত গোটা সাবনেট নিষিদ্ধ করা শুরু করতে হয় যাকে সামাজিক গণমাধ্যমে #আইপিওক্যালিপ্স হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। অগণিত ব্যবসায়িক সাইট [4],  ভাইবার [5], স্ল্যাক, এভারনোটসহ ডিজিটাল মহাসাগর [6] পরিচালিত  প্রায় সব ওয়েবসাইট গত তিন দিন ধরে অপ্রবেশযোগ্য দেখাচ্ছে। এই প্রতিবেদনটি প্রকাশের ঠিক আগে দিয়ে ব্যবহারকারীরা রিপোর্ট করেছেন যে মাইক্রোসফট অ্যাজুরও অপ্রবেশযোগ্য হয়ে গেছে।

উল্টো, টেলিগ্রামই এখনো ঠিক আছে এবং চলছে।

টেলিগ্রামের ক্ষেত্রে ইরান কি রাশিয়ার পন্থা অনুসরণ করবে?

রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞার কয়েকদিন পর ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি সরকারি সংস্থাগুলো আর টেলিগ্রাম ব্যবহার না করে [7] বরং স্থানীয় সামাজিক মিডিয়ার নেটওয়ার্কগুলিকেই এগিয়ে নিয়ে যাবে। গ্লোবাল ভয়েসেসের মাহসা আলীমর্দিনি দি ভার্জকে বলেন, “নিশ্চিতভাবে এরকমই মনে হচ্ছে” যে এটি পরিষেবাটির উপর একটি সার্বিক নিষেধাজ্ঞা হতে পারে। তবে এই ঘোষণাটি ইরানে টেলিগ্রাম বন্ধ করার একটি পদক্ষেপের সংকেত দিচ্ছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

প্রিয় ফেসবুক ব্যবহারকারীবৃন্দ: ইউরোপে না থাকলে তথ্য সুরক্ষা বিধি আপনাকে রক্ষা করবে না

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অত্যন্ত প্রত্যাশিত সাধারণ তথ্য সুরক্ষা বিধি (জিডিপিআর) ২৫ মে থেকে কার্যকর [8] হতে যাচ্ছে। বিভিন্ন প্রযুক্তি সংস্থা এবং ব্যবহারকারীরা ইইউের ভেতরের আর বাইরের লোকেদের জন্যে এই পরিবর্তনের মানে কী হবে তা জানার চেষ্টা করছে।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের সমস্ত ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্টগুলি ইইউ অন্তর্ভূক্ত আয়ারল্যান্ডের কোম্পানির আন্তর্জাতিক সদরদপ্তর দ্বারা নির্ধারিত পরিষেবার শর্তাবলী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। কিন্তু ১৭ এপ্রিল তারিখে ফেসবুক রয়টার্সকে বলেছে যে এটি তার পরিষেবার শর্তাদিতে যে পরিবর্তন [9] করতে যাচ্ছে তাতে কেবল ইইউ-ভিত্তিক ফেসবুক ব্যবহারকারীরাই ইইউর নতুন আইনগুলির গোপনীয়তা সুরক্ষা থেকে উপকৃত হবে।

শর্তাদি একবার কার্যকর হয়ে গেলে ইইউ বাইরের ব্যবহারকারীদের – ১৫০ কোটি সবার – তথ্য ইইউ কাঠামোর তুলনায় কম সুস্পষ্ট এবং আরও নমনীয় মার্কিন গোপনীয়তা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।

ফেসবুকের ওয়াইফাই এক্সপ্রেস কেনিয়াতে ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করছে – কিন্তু কতটা?

কেনিয়াতে ফেইসবুকের ওয়াইফাই দ্রুতযান [10]  কর্মসূচী ব্যবহারকারীদের ধারণার চেয়েও বেশি ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করছে বলে মনে হয়। এই কর্মসূচীটি আইএসপিগুলির অংশীদারিত্বে বাস স্টেশন, বাজার এবং সমাবেশের এলাকায় কম খরচের ওয়াইফাই হটস্পট সরবরাহ করে — যেখানে ফেসবুক ওয়াইফাই হার্ডওয়্যার আর আইএসপিগুলি সংযোগ প্রদান করে। কর্মসূচীটি তাঞ্জানিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভারত এবং নাইজেরিয়াতেও চলছে [11]

দি ডেইলি নেশন [12] পত্রিকা অনুসারে ফেসবুক ওয়াইফাই হটস্পট অপারেটিং ব্যবস্থা নির্মাণকারী কোম্পানি ইউবিকুইটির সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে যা ফেসবুককে “এর প্রতিটি সংযোগ বিন্দুতে নিজস্ব সফ্টওয়্যার – ভেতরকার একটি প্রতিষ্ঠানের বর্ণনা মতে  ‘একটি কালো বাক্স’ – যুক্ত” করার সুযোগ দিবে। এই সব ব্যবস্থা কত বেশি বা কত কম ডেটা ধারণ করবে তা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে ক্যামব্রিজ এ্যানালিটিকার ফেসবুকের তথ্যের অননুমোদিত ব্যবহার সম্পর্কিত সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর আলোকে এটি উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

মিথ্যা তথ্যের উপর কংগ্রেসীয় শুনানীতে সিঙ্গাপুরের বাক স্বাধীনতা প্রচারকদের হয়রানী

সিঙ্গাপুরের একটি সংসদীয় কমিটি “অনলাইনে স্বেচ্ছাকৃত মিথ্যাচার” [13] বা মিথ্যা  তথ্য বিষয়ে ৫০ ঘণ্টার প্রকাশ্য শুনানী পরিচালনা করেছে [14]।  সেখানে টুইটার [15], ফেসবুক [16], গুগল [17]সহ বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ও নীতিমালা প্রণয়নকারী গোষ্ঠী এবং সুশীল সমাজের বিভিন্ন সংস্থা [18]র প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

শুনানীতে মিথ্যা তথ্যের বিস্তার মোকাবেলা করার জন্যে নতুন আইন প্রণয়নের বিরুদ্ধে যুক্তি দেখানো সুশীল সমাজের সদস্যরা [19] তাদেরকে “বাক চাতুর্যতা, হয়রানি, হুমকি প্রদর্শন এবং ভুল ব্যাখ্যা করা”র অভিযোগ করেছেন [20]। একাধিক বক্তাকে তাদের পূর্ববর্তী রচনা এবং গবেষণা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে তাদের মতামত প্রদানের জন্যে আহ্বান জানানো হয়নি।

তাঞ্জানিয়ার নতুন ‘ব্লগার কর’ বাক-স্বাধীনতার ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে

২০১৮ সালের মার্চ মাস থেকে তাঞ্জানিয়ান ব্লগারদের নিবন্ধন করে অনলাইনে প্রকাশ করার জন্যে প্রতি বছর ৯০০ মার্কিন ডলার (প্রতিদিন প্রায় ২০৯ বাংলাদেশী টাকা) ফি দিতে হবে। পূর্ব আফ্রিকীয় দেশটির ইলেকট্রনিক এবং ডাক যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ বিধি হালনাগাদের ফলাফলএই নতুন আইন [21]টি। আরেকটি হালনাগাদে নগ্নতা, ঘৃণাত্মক বক্তব্য, চরম সহিংসতার বিষয়বস্তুসহ “বিরক্তি উৎপাদনকারী” এবং মিথ্যা সংবাদের বিষয়বস্তুর উপর নিষেধাজ্ঞা [22] আরোপ করা হয়েছে। নতুন নিয়মটি দ্রুত কার্যকর হয়েছে। শুধু এই সপ্তাহেই সামাজিক মিডিয়ায় “অসঙ্গত” বিষয়বস্তু পোস্ট করার কথিত অভিযোগে পপ সঙ্গীত শিল্পী ডায়মন্ড প্লাটিনামজ এবং নন্দীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে [23]

গুগলের অ্যাপ ইঞ্জিন হালনাগাদে ‘ডোমেন ফ্রন্টিং’ বাদ

অ্যাপ্লিকেশন ইঞ্জিনের একটি সাম্প্রতিক হালনাগাদে গুগল অনলাইনে সেন্সর এড়িয়ে গিয়ে পালানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ হয়ে ওঠা প্রযুক্তিগত কৌশল “ডোমেইন ফ্রন্টিং” [24] বাদ দিয়েছে। সিগন্যাল, গ্রেটফায়ার.অর্গ এবং সাইফন এর ভিপিএন পরিষেবা আসল উৎসগুলিকে আড়াল করে অনলাইন ট্র্যাফিককে পথ দেখাতে গুগলকে প্রক্সি হিসেবে ব্যবহার করেছে। কোন কোন ওয়েবসাইট এবং পরিষেবা কিভাবে তাদের পালানোর পথগুলি ব্যবহার করেছে সেই সম্পর্কে সচেতন থাকলেও গুগল দি ভার্জকে বলেছে [25] যে এটা তাদের ব্যবস্থার কাঙ্ক্ষিত কোন বৈশিষ্ট্য ছিল না।

মিশরে ওয়েবসাইট ব্লক না করলে আইএসপির বিরুদ্ধে ফৌজদারী অভিযোগ হতে পারে

অনলাইন বিষয়বস্তু অবরোধ করতে অস্বীকার করলে মিশরের ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারীরা ফৌজদারী মামলার [26] ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে। মিসরের স্থগিত সাইবার অপরাধ আইনের [27] ৩১ ধারা অনুসারে ফৌজদারী আদালতের জারি করা সেন্সরের আদেশ অমান্য করার জন্যে আইএসপি পরিচালনাকারীকে এক বছরের জেল এবং পাঁচ লক্ষ মিশরীয় পাউন্ড (প্রায় ২৪ লক্ষ ১৭ হাজার বাংলাদেশী টাকা) জরিমানা করা যেতে পারে। আইনটি অনুসারে এই ধরনের পদক্ষেপ “মিশরের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যে হুমকি” তৈরী করতে পারে।

নতুন গবেষণা

নেট-নাগরিক প্রতিবেদনের গ্রাহক হোন [30]