- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

নেট-নাগরিক প্রতিবেদন: ক্যামেরুনে বারবার ইন্টারনেট বন্ধে বেশি বেশি মূল্য দিতে হচ্ছে

বিষয়বস্তু: সাব সাহারান আফ্রিকা, ক্যামেরুন, নাগরিক মাধ্যম, জিভি এডভোকেসী

ফুন্দাসিওন কারিশমা ভিডিও থেকে প্রাপ্ত ক্লাউড কার্টুন।

অ্যাডভক্স নেট-নাগরিক প্রতিবেদন বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট অধিকারগুলির ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা, সমস্যা থেকে উত্তরণ এবং উদীয়মান প্রবণতাগুলির একটি আন্তর্জাতিক আলোকপাত উপস্থাপন করে।

ইংরেজীতে কথা বলা দু’টি অঞ্চল প্রতীকী স্বাধীনতা ঘোষণার পরিকল্পনা করার প্রাক্কালে ২০১৭ সালে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে উভয় অঞ্চলে ইন্টারনেট বন্ধ [1] করে রাখার কারণে ডিজিটাল অধিকারের দু’টি বেসরকারী সংস্থা ক্যামেরুন সরকার [2]-এর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। (ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপের মতো মঞ্চ বেশ কয়েকবার স্বল্প মেয়াদে বন্ধ করার পাশাপাশি) দীর্ঘমেয়াদী ইন্টারনেট বন্ধ আরোপ ছাড়াও সরকার নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনীগুলো বারবার ইংরেজীভাষী রাজনৈতিক কর্মীদের  সঙ্গে সহিংস সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে।

মামলা দায়েরকারী দু’টি বেসরকারী সংস্থা, সীমান্তবিহীন ইন্টারনেট [3] এবং এখনি প্রবেশাধিকার [4] শুধু এই বন্ধ পুনর্বিবেচনা নয় বরং রাজনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া ব্যবহারের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা মোকাবেলায় সাহায্য করতে চায়।

এখনি প্রবেশাধিকার-এর জেনারেল কাউন্সেল পিটার মিসেক এই মামলাটি সম্পর্কে বলেছেন, “ক্যামেরুনের আদালতের মানবাধিকার ও আইনের শাসনের পক্ষে একটি বৈশ্বিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করার সুযোগ রয়েছে। সরকারের বন্ধ করার আদেশকে একটি বৈষম্যমূলক, অপ্রয়োজনীয় এবং অসাধু ডিক্রি, ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতির অধীনে জারি করা ঘোষণা করে আদালত ক্যামেরুনবাসীদের প্রতি প্রতিকার প্রদান এবং অন্যান্য স্থানে (এধরনের) বন্ধের শিকারদের জন্যে একটি পথ আলোকিত করতে পারে।”

পূর্বও দক্ষিণ আফ্রিকার আইসিটি নীতির সহযোগিতা (সিপিইএসএ) [5] এর হিসেব মতে ২০১৭ সালের ইন্টারনেট বন্ধের ফলে ক্যামেরুনের অর্থনীতি প্রতিদিন ১৬.৭ লক্ষ ডলার (প্রায় ১৩ কোটি ৯১ লক্ষ বাংলাদেশী টাকা) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আরো সাম্প্রতিককালে, ফিলিপাইনের জাতীয় টেলিযোগাযোগ কমিশন দিনাগয়াইং উৎসবের সময় ২০১৮ সালের ২৭  থেকে ২৮ জানুয়ারী পর্যন্ত মোবাইল পরিষেবা বন্ধ করার জন্যে জাতীয় পুলিশের অনুরোধ অনুমোদন করেছে।

শুধু ২০১৮ সালের জানুয়ারীতেই ব্ল্যাক নাজারিন, সিনুলগ এবং আতি-আতিহান উৎসব পালনের সময় অনুরূপ নেটওয়ার্ক বন্ধ করার কথা লিখেছে মিডিয়া বিকল্প ফাউন্ডেশন [6] (এফএমএ)।

এফএমএ নেটওয়ার্ক বন্ধের বিরোধিতা করে কারণ এগুলো জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্যে অত্যাবশ্যক মুক্ত অভিব্যক্তি এবং তথ্যে মুক্ত প্রবেশাধিকার লঙ্ঘন করে, যোগাযোগ নেটওয়ার্কগুলিতে প্রবেশাধিকারের কথা বলাই বাহুল্য। অলাভজনক এই গোষ্ঠীটি আরো মনে করে যে অধিকতর নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই কৌশলটির ভূমিকার সামান্যই প্রমাণ রয়েছে।

সামাজিক গণমাধ্যমে সামরিক অভিযানের সমালোচনা করায় তুরস্কে শত শত গ্রেপ্তার

২৯ জানুয়ারি তারিখে তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষের ৩১১ জনকে গ্রেপ্তার ও আটক [7]  করার কথা ঘোষণা করেছে। এরা একটি কুর্দী মিলিশিয়া বাহিনীকে সিরিয়ার উত্তর আফরিন অঞ্চলের বাইরে বের করে দেয়ার তুর্কি সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টার সমালোচনা করে সামাজিক গণমাধ্যমে মন্তব্য করেছে। বন্দীদের মধ্যে যারা “সন্ত্রাসী প্রচারণা” ছড়াচ্ছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তারা সবাই সাংবাদিক, রাজনৈতিক কর্মী এবং বিরোধী রাজনীতিবিদ।

ফেসবুকে বিবিসির একটি গল্প ভাগাভাগি করায় এক থাই নারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারী অভিযোগ

জান্তাবিরোধী কর্মী এবং নয়া গণতন্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য চানোকান রুয়ামস্যাপ ১৮ জানুয়ারী তারিখে পুলিশের একটি সমন পেয়েছেন [8]। রাজা ভাজিরালংকর্নের চরিত্র চিত্রায়নকারী বিবিসির একটি নিবন্ধ ভাগাভাগি করার জন্যে তাকে থাইল্যান্ডের কুখ্যাতভাবে কঠোর লেস ম্যাজেস্তে বা “রাজকীয় অপমান” আইনের অধীনে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তিনি ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এই নিবন্ধটি ভাগাভাগি করেছিলেন। সর্বোচ্চ সাজা ১৫ বছর কারাদণ্ডের কথা চিন্তা করে তরুণ মহিলা দেশ ছেড়ে পালানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি স্বাধীন সংবাদ সংস্থা প্রচাতাইকে বলেন, “থাকবো কি থাকবো না সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্যে আমি ৩০মিনিটেরও কম সময় পেয়েছিলাম। কঠিন বাস্তবতাটি হলো এই যাত্রাটির পরে আমি আর ফিরতে পারবো না।”

মায়ানমারের নাগরিকের প্রতি পুলিশী ভয়-ভীতি ও ফেসবুকে ঘৃণাত্মক বক্তব্য প্রদর্শন

অনির্দিষ্টভাবে পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হয়ে সেই বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা পর মায়ানমারের এক ব্যক্তি অনলাইনে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে [9]। মানুষ পুলিশকে করে অনলাইন হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে। একটি ফেসবুক পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় পুলিশ ঐ ব্যক্তিকে ঘটনাটি বানানোর দায়ে অভিযুক্ত করে তার নাম এবং সে যে ইসলাম ধর্মের তা প্রকাশ করে দেয়। এতে মায়ানমারে (রোহিঙ্গ্যা-বৌদ্ধ) জাতিগত ধর্মীয় উত্তেজনার প্রেক্ষিতে  ঐ ব্যক্তি অনলাইন অপব্যবহারের ক্ষেত্রে আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। স্টেশনটি এই পোস্টটি মুছে দিলেও সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ঐ ব্যক্তির প্রতি ঘৃণাত্মক মন্তব্যগুলি আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইয়াঙ্গুন পুলিশ একটি তদন্ত পরিচালনা করার কথা বলছে।

চীনে # আমিও

সামাজিক গণমাধ্যমের মঞ্চে “যৌন  হয়রানি বিরোধী” এর মতো বাক্যাংশের সেন্সর সত্ত্বেও চীনে #আমিও আন্দোলন জনপ্রিয়তা লাভ করছে [10]। যৌন নিপীড়নের একাধিক অভিযোগে বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট অধ্যাপক চেন জিয়াওওয়ুকে বরখাস্তের পর চীনের ডজনখানেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যৌন হয়রানির (যা চীনে খুব অস্বাভাবিক) বিরুদ্ধে #EveryoneIn ব্যবহার করে প্রাতিষ্ঠানিক নীতিমালা প্রণয়নের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে। অতীতে অনুরূপ আহ্বান করা হলেও এপর্যন্ত গ্রহণযোগ্য কোন নীতিমালা চালু করা হয়নি।

সান্তা লুসিয়ায় বিনামূল্যে দেশব্যাপী ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক চালু

২৪ জানুয়ারী তারিখে সান্তা লুসিয়া সরকার দ্বীপব্যাপী সরকারী নেটওয়ার্ক স্থাপন পর্যায় ঘোষণা করেছে [11]। এটি ক্যারিবীয় দ্বীপ জুড়ে সরকারী ইন্টারনেট প্রবেশাধিকার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ৪০ লক্ষ মার্কিন ডলারের (প্রায় ৩৩ কোটি ৩২ লক্ষ বাংলাদেশী টাকার) একটি প্রকল্প। নেটওয়ার্কটি স্থানীয় বাসিন্দা এবং ভ্রমণকারী উভয় ক্ষেত্রে জনসাধারণকে বিনামূল্যে অথবা কম খরচে বেতার সংযোগ প্রদান করবে। অংশীদারিত্বের এই প্রকল্পটিতে তাইওয়ান সরকার ৩২.৮০ লক্ষ মার্কিন ডলার (প্রায় ২৭ কোটি ৩২ লক্ষ বাংলাদেশী টাকা) প্রদান করেছে।  তিন মাসের মধ্যে নেটওয়ার্কটি চালু করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বুয়েনোস আয়ার্সের সাবওয়ে ব্যবস্থায় ওয়াইফাই গোয়েন্দাবৃত্তি

ভাইস আর্জেন্টিনার একটি নতুন অনুসন্ধানী অংশে [12] দেখা গিয়েছে যে বুয়েনোস আয়ার্সের মুক্ত ওয়াইফাই নেটওয়ার্কটি প্রকৃতপক্ষে বিনামূল্যের হলেও এতে ব্যবহারকারীর ছবিসহ ব্যক্তিগত নাম, বাড়ির ঠিকানা, ফোন নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ভূ-অবস্থানের ডেটা এবং একগাদা ব্যক্তিগত  ডেটা – তাদের ডিভাইসের সেটিংসের উপর নির্ভর করে – সম্ভাব্য আরো অনেক বেশি কিছু দিয়ে দিতে হয়।

স্ট্রাভা অনুসরণ করছে আপনার ফিটনেস – এবং আরো অনেক বেশি কিছু

ফিটনেস (উপযুক্ততা) অনুসরনকারী অ্যাপ্লিকেশন স্ট্রাভার স্বত্ত্বাধিকারী কোম্পানিটি তার ব্যবহারকারীদের সবচেয়ে সক্রিয়তা প্রদর্শনকারী একটি তাপমানচিত্রের ধারাবাহিক [13] প্রকাশ করলে তাদের অজান্তেই গোপন সামরিক ঘাঁটিগুলোর অবস্থান উন্মোচিত হয়ে পড়ে। কোম্পানীটি বলছে যে ব্যবহারকারীরা তাদের এই তথ্যটি ধারণ করার অনুমতি দেয়ার কারণে ডেটা প্রকাশ করা হয়েছিল। এটি যুক্তি দেখিয়েছে এই বলে যে তারা (ব্যবহারকারীরা) সামরিক অঞ্চলগুলিতে থাকাকালীন তাদের অনুসরন “নির্বাচন না করা” পছন্দ করা উচিৎ ছিল। গার্ডিয়ান পত্রিকা আরও জানিয়েছে [13] যে স্ট্রাভা ওয়েবসাইটে “অনুসরনকৃত দৌড়গুলোতে ব্যবহারকারীদের প্রত্যেকের নাম খুঁজে নেয়ার অনুমতি দেয়” যা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বাড়তি উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

আরো বেশি টুইটার অনুসরণকারী চান? আপনি দেভুমি’র কাছ থেকে সেসব কিনতে পারেন

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অখ্যাত একটি কোম্পানী ডেভুমি’র ভেতরে নিউইয়র্ক টাইমসের অনুসন্ধানে [14] সামাজিক গণমাধ্যমে পরিচয় জালিয়াতির অপরাধের অন্ধকার বেরিয়ে এসেছে। ফার্মটি তাদের সামাজিক নেটওয়ার্কে “প্রভাব বিস্তার” করতে চায় এমন ব্যক্তিদের কাছে পরজীবী অ্যাকাউন্ট বিক্রি করে এবং (পরজীবী অ্যাকাউন্টটিকে সমর্থন যোগানোর জন্যে) ৫০ হাজারের বেশি প্রতারণামূলক অ্যাকাউন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে প্রকৃত টুইটার ব্যবহারকারীদের নাম, প্রোফাইল ছবি ও অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে তারপর এটি সেগুলো লাভের জন্যে বিক্রি করে দেয় বলে মনে হয়।

নতুন গবেষণা

 

নেট-নাগরিক প্রতিবেদনের গ্রাহক হোন [18]