এই প্রবন্ধটি [1] দি ইরাওয়াদ্দিতে প্রকাশিত হয়েছে, যা মায়ানমারের এক স্বাধীন ওয়েবসাইট ভিত্তিক সংবাদপত্র, লেখা বিনিময় চুক্তির অধীনে এই প্রবন্ধটি গ্লোবাল ভয়েসেস-এ পুনরায় প্রকাশ করা হল।
প্রায় কয়েক দশক ধরে লেখার উপর আরোপিত সেন্সরশীপ আইন ২০১২ সালে বাতিল করা সত্ত্বেও মায়ানমারের প্রচার মাধ্যমের স্বাধীনতা ঠিক বিপরীত দিকে যাত্রা করেছে, বিশেষ করে ২০১৪ সালের পর থেকে প্রচার মাধ্যমের এই অবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
দি ইরাওয়াদ্দি প্রকাশিত বেশ কিছু কার্টুন যা ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালে মধ্যে ছাপা হয়েছে-সেগুলো মায়ানমারের সংবাদপত্র সমূহ যে ধাপ সমূহ অতিক্রম করছে এবং যে বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার মধ্যে যাচ্ছে তা তুলে ধরেছে।
পুতুল নাচের ন্যায় বিচার
অক্টোবর ২০১৪-এ ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক আং কিয়াক নিয়াং, যিনি একই সাথে পার গেই নামে পরিচিত ছিলেন তিনি সামরিক কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় নিহত হন। মায়ানমারের সামরিক বাহিনীর ভাষ্য এই সাংবাদিককে তখন গুলি করে হত্যা করা হয় যখন তিনি এক সেনার বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, যদিও তার স্ত্রী সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে তার স্বামী হত্যার মামলার করার চেষ্টা করে, কিন্তু পুলিশ এবং আদালত এই মামলাটি খারিজ করে দেয়।
মায়ানমারে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা
২০১২ সালে মায়ানমারে আনুষ্ঠানিক ভাবে সেন্সরশীপ আইনের ইতি ঘটে। এর চার বছর পর, ২০১৬ সালে দেশটির সংবাদপত্রের স্বাধীনতা যে চিত্র তুলে ধরে, তাতে দেখা যাচ্ছে এটি এখনো শিশু অবস্থায় রয়েছে।
সংবাদপত্রের স্বাধীনতা উপভোগ করা
২০১৪ সালের এই কার্টুন মায়ানমারের সংবাদপত্রের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাধীনতা প্রদানে অসহযোগিতার বিষয়টি তুলে ধরছে।
৬৬[ডি] ধারা থেকে মুক্তি নেই
টেলিযোগাযোগ আইনের ৬৬(ডি) ধারায় প্রায় ৭০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে যা বর্তমান সরকারি দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি-তার এই মেয়াদে অনলাইনে কারো “নিন্দা” বন্ধ করা জন্য ব্যবহার করছে।
সংবাদপত্রের স্বাধীনতা?
২০১৪ সালে মায়ানমারের সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিষয়টি আবার উল্টোদিকে যাত্রা করে। এই সময় কর্তৃপক্ষ কিছু লেখা যেন প্রকাশিত হতে না পারে তার জন্য এগুলোর ক্ষেত্রের প্রতিবন্ধকতা আরোপ করে। কারণ সরকারের অভিযোগ ছিল এই সব লেখায় “সরকার সম্বন্ধে যথাযথ নয় এমন সংবাদ প্রদান করা হচ্ছে” । আর অন্যদের হুমকি প্রদান করা হয় এই বলে যে রাখাইন প্রদেশের সহিংসতার খবর যদি তারা প্রকাশ করে তবে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য তাদের দায়ি করা হবে”। মাগওয়ে বিভাগের পাউকে নামের এক এলাকায় অবৈধ রাসায়নিক অস্ত্রের কারখানার অস্তিত্ব রয়েছে এমন সংবাদের কারণে ইউনিটি ইউকলি নামের এক সংবাদ পত্রের চারজন সাংবাদিক ও ওই পত্রিকার প্রধান নির্বাহীকে কে পুলিশ গ্রেফতার করে। “ রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘনের দায়ে এরা এখন মামলার মুখোমুখি যার সর্বোচ্চ সাজা ১৪ বছর পর্যন্ত হতে পারে”।
তথ্য মন্ত্রণালয় প্রচার মাধ্যমকে তার হাতের মুঠোয় রেখেছে
দেশটির প্রচার মাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ সত্ত্বেও, এই শিল্প সংক্রান্ত সবকিছুর সিংহ ভাগ নিয়ন্ত্রক হচ্ছে দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয়।
আবেগীয় নিয়ন্ত্রণের চূড়ান্ত মাত্রায় মায়ানমারের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা
২০১৪ সালে প্রকাশিত এক কার্টুন প্রদর্শন করছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি উ থিয়েন সিয়েন-এর নেতৃত্বে পরিচালিত আধা সামরিক সরকার কী ভাবে সংবাদের স্বাধীনতা খর্ব করে যাচ্ছে।
সেই সঙ্কটের ফিরে আসা
দাও অং সান সুচি নেতৃত্বে নির্বাচিত সরকারের আমলে ২৬ জুন তারিখে মায়ানমারের সামরিক বাহিনী দি ইরাওয়াদ্দি সহ এ রকম স্বাধীন সংবাদ পত্রিকার তিনজন সাংবাদিককে গ্রেফতার করে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় সশস্ত্র এক আদিবাসী দলের সাথে এদের যোগাযোগ রয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা কারাগারে আটক রয়েছে।