সঙ্গীতের কোন সীমানা নেই – তবুও ইন্দোনেশীয় গায়কদলের সদস্যদের মার্কিন ভিসা প্রত্যাখ্যান

একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ভক্স অ্যাঞ্জেলিকা গায়কদলের উপস্থাপনা। ইউটিউব ভিডিও থেকে নেয়া পর্দাছবি।

তিনটি ইন্দোনেশীয় গায়কদলের গত মাসে নিউ জার্সির প্রিন্সটনে আনন্দে গাও ঐকতানিক প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল, কিন্তু জাকার্তার মার্কিন কনস্যুলেট তাদের ডজনখানেক সদস্যের ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করায় গায়কদল দু’টি সেই বাগান প্রদেশে সেটা করে দেখাতে পারেনি।

গায়কদল দু’টি হলো উত্তর সুমাত্রার মানাদো থেকে ভক্স এ্যাঞ্জেলিকা এবং উত্তর সুলাওয়েসির এল-শাদ্দাই

বঞ্চিত দলগুলি এবং এমনকি এই প্রতিযোগিতার কিছু কিছু বিচারক উদ্বেগ উচ্চকিত করেছেন। এটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর ভ্রমণকারীদের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থার একটি ফল। শরণার্থী ও অভিবাসন নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিতর্কিত নির্বাহী আদেশের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত দেশগুলোর একটি না হওয়া সত্ত্বেও ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হওয়ায় বিষয়টি আরো জটিল হয়েছে।

দু’টি ইন্দোনেশীয় গায়কদলের ভিসা অস্বীকার সম্পর্কে শোনার পর প্রতিযোগিতার বিচারকবৃন্দ তাদের দুঃখ প্রকাশ করে “সঙ্গীতের কোন সীমানা নেই” দাবি করা একটি হৃদয়গ্রাহী ভিডিও পোস্ট করেছেন।

সাম্প্রতিককালে মার্কিন নীতির অভাবিত পরিস্থিতির কারণে গায়কদল এল-শাদ্দাই এবং ভক্স এ্যাঞ্জেলিকা আমাদের উত্সবে যোগ দিতে পারেনি। আর আমরা এতে দুঃখিত। কিন্তু … রাজনীতির তৈরি করা এসব “সীমানা” নির্বিশেষে সঙ্গীতের কোন সীমানা নেই, কোন সীমানা নেই শৈল্পিকতার মাধ্যমে একতার, কোন সীমানা নেই হৃদয়ের গান থেকে উৎসারিত মানবতার। সঙ্গীত আমাদের মানবিকতাকে একসাথে নিয়ে আসে আর (তাই) আমরা আপনাকে এর একটি অংশ হতে আমন্ত্রণ জানাই।

এল-শাদ্দাই গায়কদল তাদের সামাজিক গণমাধ্যমের পাতাগুলোর মাধ্যমে তাদের প্রিন্সটন সঙ্গীত উৎসবে যোগদানে ব্যর্থতার আসল কারণ ব্যাখ্যা করেছে:

Saudara/sahabat/kolega/rekan paduan saudara terkasih sekalian,
bersama ini kami Paduan Suara El-Shaddai ingin menyampaikan PERMOHONAN MAAF kami, berhubung kami batal berangkat ke Princeton-New Jersey, USA utk berkompetisi disana, diakibatkan ditolaknya permohonan visa kami oleh Kedubes USA di Jakarta. […]

Kami sudah mempersiapkan segala sesuatunya, dan sudah melakukan semuanya dengan semaksimal mungkin, bahkan usaha pengurusan/permohonan sudah kami lakukan sebanyak 2 (dua) kali. […]

kami meyakini hal ini juga diperkuat dengan kebijakan politik pemerintah AS yang ada saat ini, dimana dilakukan pengawasan yang lebih (sangat) ketat untuk pendatang ke negara tersebut. Saat ini kami masih berada di Jakarta untuk bersiap kembali ke Medan, dan kami juga langsung akan bersiap diri untuk kompetisi internasional lainnya dalam waktu dekat ini, semoga kami dapat mengambil hikmah dari apa yg baru terjadi, mohon doanya.[..]

TERIMAKASIH yang sebesarnya atas dukungan dan kepercayaannya kepada kami selama ini

প্রিয় বন্ধু, পরিবার ও সহকর্মীবৃন্দ, এল-শাদ্দাই গায়কদল জাকার্তার মার্কিন দূতাবাসের ভিসা অস্বীকার করার কারণে নিউ জার্সীর প্রিন্সটনে তাদের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের ব্যর্থতার জন্যে ক্ষমা ভিক্ষা করছে।
আমরা সব প্রয়োজনীয়তা প্রস্তুত করে দুইবার ভিসার জন্যে আবেদন করেছিলাম।
আমরা এটাও বিশ্বাস করি যে ভ্রমণকারীদের প্রতি কঠোর মার্কিন নীতির কারণে এটা ঘটেছে। আমরা এখন জাকার্তায় রয়েছি, মিদানে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার জন্যে প্রস্তুতি নিবো। আমরা এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়ার আশা করছি, অনুগ্রহ করে আমাদের জন্যে প্রার্থন করবেন।
এই অগ্নিপরীক্ষাটি জুড়ে আপনাদের আস্থা ও সমর্থনের জন্যে আপনাদের ধন্যবাদ।

গ্লোবাল ভয়েসেস ভক্স অ্যাঞ্জেলিকার নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র এডওয়ার্ড পালিতের সঙ্গে কথা বলেছে। ভিসা প্রত্যাখ্যানের কথা জানার পর গায়কদলের সদস্যদের অনুভূতি কী ধরনের ছিল তিনি সেটা বর্ণনা করেছেন:

আমরা (ব্যবস্থাপক ও কন্ডাকটরসহ) ৪১ জনের সমন্বয়ে গঠিত একটি মিশ্র গায়কদল। সুরাবায়াস্থ মার্কিন কনস্যুলেটে একটি সাক্ষাৎকারের জন্যে আমাদেরকে মানাদো থেকে সুরাবায়া উড়ে আসতে হয়েছে। আমাদের গায়কদলের কন্ডাকটরসহ ডজনখানেক সদস্যের ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। আমাদের তরুণ সদস্যরা জানিয়েছে যে এর আগে কখনো তারা বিদেশ ভ্রমণ না করায় তাদের ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের গায়কদলের সঙ্গে প্রতিনিয়ত বিদেশ ভ্রমণ করা সিনিয়র কন্ডাকটরের মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে প্রবেশাধিকার অস্বীকার করা হয়েছে একটি উদ্ভট কারণে – তিনি আর তার স্ত্রী (আমাদের একজন গায়িকা) নতুন পিতা-মাতা হয়েছেন বলে।

পালিত আরো বলেছেন যে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়াটি জটিল এবং হতাশাজনক:

(প্রিন্সটন থেকে) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আমন্ত্রণ পাওয়ার পর থেকে আমরা পরিশ্রম করে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলাম। তাছাড়া নিয়মিত পৃষ্ঠপোষক না পাওয়ায় সুরাবায়া ভ্রমণটি আমাদের গায়কদলের জন্যে একটি বড় ব্যাপার ছিল। আমাদের কঠোর পরিশ্রমকে প্রদর্শন করতে না পারায় আমরা নিশ্চিতভাবে হতাশ হলেও আমরা আমাদের নিজেদের গায়কদলের বার্ষিকী উদযাপনের কনসার্ট এবং কর্মশালাসহ প্রদেশের অন্যান্য উৎসবের দিকে চেয়ে রয়েছি।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .