এই প্রবন্ধটি ইরাওয়াদ্দি পত্রিকার পাইয়াই কাইয়াও এর লেখা। মিয়ানমারের এক স্বাধীন সংবাদ ওয়েবসাইট ইরাওয়াদ্দি এবং বিষয়বস্তু ভাগাভাগি চুক্তির অংশ হিসেবে গ্লোবাল ভয়েসেস-এই প্রবন্ধটি পুনরায় প্রকাশ করা হল।
দক্ষিনের শান প্রদেশের লিওলেনে শহর থেকে সাত মাইল দূরে অবস্থিত সেন্ট জোসেফ কোটো লেগনস লেপ্রেসি কলোনি স্থানীয় ভাবে হোহ কাই কুষ্ঠ পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত-সেটির স্থাপন করেছিলেন এক ইতালীয় পাদ্রী আজ থেকে প্রায় সত্তর বছর আগে, আর এখন তা সারা দেশের ৯০ জন কুষ্ঠ রোগীর বাসস্থান।
এখানে বসবাসরত রোগীর মধ্যে যেমন ১৩ বছরের শিশু রয়েছে, তেমনি রয়েছে ৮০ বছর বয়স্ক নাগরিকও, এই রোগের কারণে অনেকের শরীরের ক্ষত তৈরি হয়েছে, যাদের এখন যত্ন নিচ্ছেন পাদ্রিরা।
পুনর্বাসন কেন্দ্রে যারা বাস করে, তারা চাষাবাদ করে এবং কিছু দুষ্প্রাপ্য পশু পালন করে, কিন্তু এই রোগের প্রতি মানুষের ভীতি থাকার কারণে, স্থানীয়রা তাদের কাছ থেকে পণ্য কেনে না ।
এখানে বাস করা বেশীর ভাগ রোগী আর তাদের নিজ গৃহে আর ফিরে যেতে চায় না, তার বদলে তারা তাদের ভাগ্যকে ঈশ্বরের হাতে তুলে দিয়েছে।
এ রকম এক রোগীর নাম মায়া, তিনি জানান এই পুনর্বাসন কেন্দ্রেই তিনি মরতে চান। তিনি বলেন, যে যে শহরে তার জন্ম সেখানে এই রোগের কারণে তাকে শহরের কবরস্থানে বাস করতে হত, আর রাতের বেলায় লুকিয়ে তিনি পরিবারের লোকেদের সাথে দেখা করতে যেতেন।
এই আশ্রয় কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে কোন ধরনের সাহায্য পায় না, যদিও সরকার এই রোগে আক্রান্তদের সাহায্য করে থাকে, আর এই আশ্রয় কেন্দ্র রোগীদের সেবার জন্য বিদেশী রাষ্ট্র থেকে প্রাপ্ত সাহায্যের প্রতি নির্ভরশীল।
যে সমস্ত কুষ্ঠ রোগী তাদের জন্য গড়া আশ্রয় কেন্দ্রে বাস করতে চায় না, পাদ্রিরা তাদের জন্য পাঁচটি গ্রাম নিয়ে গঠিত একটি পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন করেছে যেখানে ৩০০ জন নাগরিক বাস করে।
২০০৩ সালে, সরকার ঘোষণা প্রদান করে যে তারা দেশটির কুষ্ঠ রোগীর সংখ্যা প্রতি ১০,০০০ জনে মধ্যে একজন নামিয়ে এনে কুষ্ঠরোগ দূর করার হার দ্রুত কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।
যদিও বিগত ১০ বছরে মিয়ানমারে নতুন করে কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হওয়ার হার কমে এসেছে, তারপরে রেঙ্গুন জেনারেল হাসপাতালের সূত্র অনুসারে ২০১৪ সালে দেশটিতে ২,৮৭৭ জন এবং ২০১৫ সালে ২,৫৭১ জন কুষ্ঠরোগীকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
নীচে কিছু ছবি রয়েছে যা কুষ্ঠ আশ্রয় কেন্দ্রে বাস করা নাগরিকদের প্রতিদিনের জীবনের ছবি তুলে ধরছেঃ