- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

বেলারুশীয় জরুরী অবস্থা মন্ত্রণালয়ের চমকপ্রদ ও মিষ্টি সব ঘোষণা

বিষয়বস্তু: পূর্ব ও মধ্য ইউরোপ, বেলারুশ, কৌতুক, দুর্যোগ, নাগরিক মাধ্যম, যুবা, সরকার, রুনেট ইকো

উৎস: বেলারুশীয় জরুরী অবস্থা মন্ত্রণালয়

দুর্যোগ ও জাতীয় জরুরী অবস্থার ব্যবস্থাপণারত বেলারুশীয় মন্ত্রণালয় একটি কার্টুন প্রদর্শনী তৈরি করেছে। “জাদুর বই” নামের ধারাবাহিকটির লুনি-টুনস-ধরনের প্রাণী চরিত্রগুলোর ভুল প্রচেষ্টাগুলো থেকে শিশুরা নিরাপদ থাকার শিক্ষা পেতে পারে।

এতে কম্পিউটার চালিত নিরাপত্তা নির্দেশের মাধ্যমে সশস্ত্র একদল সুখী-ত্রয়ী প্রধান চরিত্র: একটি কৌতুহলী খরগোশ, একটি চালাক বীবর এবং একটি উদ্বিগ্ন পাখি রয়েছে। তারা তাদেরকে যে কোনভাবে খেতে চাওয়া ভলচাইজ নেকড়ের মোকাবেলা করে যে এই কাজগুলো করতে গিয়ে আসলে শেষ পর্যন্ত নিজেই সমস্যার সম্মুখীন হয়।

ফেব্রুয়ারি থেকে মন্ত্রণালয়টি তার ইউটিউব চ্যানেলে তিনটি ছোট কার্টুন ভাগাভাগি করেছে। প্রথম পর্বটিতে নেকড়েটি প্রাণীগুলোকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে একটি হিমায়িত হ্রদে নিয়ে যায় যাতে তারা ডুবে যাওয়ার পর সে তাদের খেতে পারে। তারা বরফে স্কেটিং করার চিন্তা করলে কাজটি বিপজ্জনক হতে পারে বলে তাদের কম্পিউটার তাদের সাবধান করে দিলে নেকড়েটির পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

দ্বিতীয় পর্বে, ভাল প্রাণীগুলো একটি দল হিসেবে খেলাধুলা করে। নেকড়েটি তাদের দিকে মানুষের মতো এক বাক্স ম্যাচের কাঠি ছুড়ে দিলে সেটা বিস্ফোরিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং তাদেরকে একটি সমবেত অধিবেশনে যোগ দিতে অনুরোধ করে। আবার কম্পিউটারটি ম্যাচ দিয়ে খেলা খুব বিপদজনক বলে সাবধান করে মজাটি নষ্ট করার চেষ্টা করে।

তবে এবার প্রাণীগুলো মেশিনকে উপেক্ষা করে ম্যাচগুলোকে ব্যান্ডের ভিতর আমন্ত্রণ জানায়। আপনারা যেরকম ভেবেছেন তেমন ভাবেই তারা খুব উত্তেজিত হয়ে আগুনে পরিণত হয়ে চারিদিকে ছুটোছুটি করে আগুন ছড়িয়ে দেয়। নিরাপত্তা কম্পিউটারটি অবশ্যই উদ্ধারে এগিয়ে এসে প্রাণীগুলোকে শিখিয়ে দেয় কিভাবে সাহায্যের ডাকতে এবং উদ্ধার পেতে হয়।

তৃতীয় পর্বে বীবরটি একজন জনপ্রিয় ব্লগার হয়ে যায়। তার সাফল্যে ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে নেকড়েটিও নিজে বিখ্যাত হতে চায় এবং একটি রান্নার ওয়েব ধারাবাহিক চালু করার চেষ্টা করে। খলচরিত্রের মতোই নেকড়েটি নিরাপত্তা সতর্কতা উপেক্ষা করে দ্রুত একটি শক্তিষালী বর্তনীতে বেশি করে বিদ্যুৎপ্রবাহিত করলে তাতে আগুন ধরে যায়। ঘটনা খারাপ থেকে আরও খারাপ হয়ে গেলে বিশ্ব এক বালতি পানি দিয়ে এটাকে নেভাতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছোট্ট একটি ছাইয়ের গাদায় পরিণত হয়।

ইতোমধ্যে বীবরটি বৈদ্যুতিক নিরাপত্তার সব পরামর্শ অনুসরণ করে একগুচ্ছ সুস্বাদু প্যানকেক তৈরি করে ফেলে।

কার্টুন বানানোর প্রচেষ্টাটিই ভিডিও বিনোদন নিয়ে বেলারুশীয় সরকারের প্রথম হাতড়ানো নয়। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জরুরী অবস্থা মন্ত্রণালয় একটি ছেলের মাধ্যমে “নিরাপদে আকর্ষণীয় স্বচিত্র (সেলফি) গ্রহণ” শেখানোর একটি জনপরিষেবা ঘোষণা প্রকাশ করেছিল।

“আমি আমার বন্ধুদের অবাক করে দেয়ার জন্যে আমি ডানপিটেদের নকল করে বোকার মতো কিছু করি না,” পিএসএ (জনপরিষেবা ঘোষণা)-টির মধ্যেকার ছেলেটি ব্যাখ্যা করে বলেছে। “আমি একেবারে নিরাপদে সেলফি নিতে পারি। আমাকে কেউ চ্যালেঞ্জ করতে চাইলে আমি আমার বুদ্ধি ব্যবহার করি,” সে বলেছে ফটোশপ কেমন করে চরম দুঃসাহসী কর্মের মতো হতে পারে সেটা ব্যাখ্যা করে।

১৯ জানুয়ারি বেলারুশে “উদ্ধারকর্মী দিবস”। এদিনে মন্ত্রণালয়টি দমকল বাহিনীর দৈনন্দিন কাজ নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও প্রকাশ করেছে।

এসব সৃজনশীল প্রচেষ্টা সাধারণ জনগণের কাজেই লাগছে বলে মনে হচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউটিউবে জরুরী অবস্থা মন্ত্রণালয় এপর্যন্ত ২৫ লক্ষের বেশিবার নজর কেঁড়েছে। আর এর সংবাদ কার্টুনগুলো এদিক থেকে আরো অনেক বেশি করে সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।