রাশিয়াতে এটা হর হামেশাই ঘটে না। তবে পুলিশ গত সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে সম্ভাব্য ভোটার জালিয়াতির মামলা তদন্ত করতে সম্মত হয়েছে। সেন্ট পিটার্সবার্গের বিধানসভার একটি একক ম্যান্ডেট আসনের হেরে যাওয়া একজন প্রার্থী ইগর ত্রাতনিকভ বলেছেন নির্বাচনের একটি ভোটকেন্দ্র তার প্রতিদ্বন্দ্বী আলেকজান্ডার ইয়েগোরভকে নির্বাচনে জিতিয়ে দেয়ার জন্যে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে।
রাশিয়াতে – সম্পূর্ণ বিপরীত নামের একটি চরম ডানপন্থী দল – উদার গণতান্ত্রিক দলের (এলপিডিআর) সদস্য ত্রাতনিকভ। দলটির প্রতিষ্ঠাতা কুখ্যাত জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ ভ্লাদিমির জিরিনভস্কি এই গত বুধবার আগামী বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিততে পারলে তিনি বিরোধীদের গণমৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। এলপিডিআর-এর বাক্যবাণ শক্ত হলেও দলটি শুধু নামমাত্র বিরোধিতা ছাড়া সাধারণভাবে ভ্লাদিমির পুতিনের উদ্যোগের সমর্থক।
সংবাদ সাইট ফনতাকা.আরইউ অনুসারে, ত্রাতনিকভ বলেছেন তার কাছে সেন্ট পিটার্সবার্গের পাঁচ নম্বর নির্বাচনী ভোটকেন্দ্র এলাকায় অবৈধ ব্যালট ভরার সুযোগ দেয়ার ভিডিও নজরদারি ফুটেজ রয়েছে।
“এই [নির্বাচন] কমিশনের সদস্যরা একে অপরের সঙ্গে একটি অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। [নির্বাচনের] ফলাফলগুলিকে মিথ্যে বানানোর জন্যে কমিশনের সদস্যদের পক্ষের ভোটাররা বারবার ব্যালট পূরণ করেছে […] এবং ব্যক্তিগতভাবে তারা সেগুলো ব্যালট বাক্সে ফেলেছে,” বলেছেন ত্রাতনিকভ।
২০১৬ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গের বিধানসভা নির্বাচনের ভো্টার উপস্থিতি সংখ্যা সর্বশেষ ২০১১ সালের জাতি তুলনায় ৭০০,০০০-এর বেশি কমে যোগ্য ভোটারের মাত্র ৩২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে স্থানীয় এবং জাতীয় উভয় সংসদ নির্বাচনে ভোটদানের হার দেশব্যাপী নিম্নমুখী ছিল।
গত সেপ্টেম্বরে নির্বাচনের দিন রয়টার্সের প্রতিবেদকরা সারাদেশের কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে ভোট পর্যবেক্ষণ করেছিল। তারা ভোটকেন্দ্রগুলোতে ব্যালট ভরার এবং ভোটদানের হার বাড়িয়ে বলার কয়েকটি ঘটনা দেখেছে। পরবর্তীতে রুশ নির্বাচনী কর্মকর্তারা নয়টি ভিন্ন ভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ভোটে অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে ভোটের ফলাফল বাতিল করেছে।
এলপিডিআর সদস্য ত্রাতনিকভ এবং শুধু রাশিয়া’র ডেপুটি ইয়েগোরভ উভয়েই রাষ্ট্রীয় দ্যুমার প্রতিনিধিত্বকারী সরকারপন্থী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত। “অ-পদ্ধতিগত” বিরোধী দল পার্নাস (পবিত্র গ্রিক পার্নাসাস পর্বত) এবং ইয়াব্লোকো (আপেল) বিগত কয়েকটি নির্বাচনে সংসদীয় আসনের জন্যে সর্বনিম্ন প্রান্তিক মান অতিক্রম করতে ব্যর্থ হয়েছে। পার্নাস সদস্যরাও হামলা ও হয়রানির শিকার এবং এমনকি দলের যুগ্ম-সভাপতি বরিস নেমৎসভ ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিহত হয়েছেন।
রাশিয়ার ২০১১ সালের সংসদীয় ভোটে ইউরোপের নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংস্থার নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা “ব্যালট বাক্স ভরার কয়েকটি গুরুতর ইঙ্গিতসহ ঘন ঘন পদ্ধতিগত লঙ্ঘন এবং আপাত: অপব্যবহারের ঘটনা” চিহ্নিত করেছে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি লঙ্ঘন ভিডিওতে ধরা পড়েছে।
রাশিয়ার ২০১১ সালের সংসদীয় নির্বাচনে আপাত:ভাবে ব্যাপক ভোটার জালিয়াতি এক দশকের মধ্যে সর্ববৃহৎ বিক্ষোভ সৃষ্টি করেছে, যদিও ভ্লাদিমির পুতিন সহজেই পরবর্তী বসন্তে ধারাবাহিকতা হীন তৃতীয় আরেকটি মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে জিতেছে।