- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

তিউনিশীয় সরকার আমলাদের মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার নিষেধাজ্ঞা শিথিলের অঙ্গীকার করেছে

বিষয়বস্তু: মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., তিউনিশিয়া, নাগরিক মাধ্যম, প্রচার মাধ্যম ও সাংবাদিকতা, বাক স্বাধীনতা, মানবাধিকার, জিভি এডভোকেসী

তিউনিশিয়াতে অনুষ্ঠিত ২০১৬ বিশ্ব টেলিযোগাযোগ মানসম্মত করণ সমাবেশে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলছেন তিউনিশীয় প্রধানমন্ত্রী ইউসেফ চাহেদ। ছবি: আইটিইউ, সৃজনশীল সাধারণ লাইসেন্সের অধীনে ফ্লিকারে ভাগাভাগি করা  (সিসি বাই ২.০)

তিউনিশিয়ার মিডিয়া কর্মীদের বিজয়ী করে তিউনিশীয় সরকার রাষ্ট্রের জারি করা কিভাবে সরকারি কর্মচারীরা মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করবে বাৎলে দেয়া নির্দেশিকাটি স্থগিত করেছে [1]

১৫ জানুয়ারী ২০১৭ তারিখে প্রধানমন্ত্রী ইউসেফ চাহেদের ৪ নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে জারি করা আলোচ্য নির্দেশিকাটি অনুসারে [2] ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কারো অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত  সরকারি কর্মকর্তাদের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে এবং অফিসিয়াল তথ্য দিতে নিষেধ করা হয়েছে:

احتراما للواجبات المحمولة على كل الأعوان العموميين في علاقتهم بوسائل الإعلام، الواردة في مدونة سلوك وأخلاقيات العون العمومي، فإنه يتعين عليهم الإمتناع عن الإدلاء بأي تصريح أو مداخلة وعن نشر أو إفشاء معلومات آو وثائق رسمية، عن طريق الصحافة أو غيرها من وسائل الإعلام، حول مواضيع تهم وظيفته أو الهيكل العمومي الذي يعمل به، بدون الإذن المسبق والصريح من رئيسه المباشر

সরকারি কর্মকর্তাদের আচরণবিধি এবং নৈতিকতার মাধ্যমে সীমায়িত মিডিয়া আউটলেটগুলোর সঙ্গে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দায়িত্বসমূহ ছাড়াও তাদেরকে [প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরকে] তারা যে কাজে অথবা সরকারি যে কাঠামোতে যুক্ত সেখানকার ঊর্ধ্বতন কারো প্রাথমিক এবং স্পষ্ট অনুমোদন ছাড়া বক্তব্য প্রদান বা হস্তক্ষেপ অথবা সংবাদমাধ্যমের কাছে বা অন্য কোন প্রকারে অফিসিয়াল তথ্য বা দলিল প্রকাশ থেকে বিরত রাখা হয়েছে।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকার প্রতিষ্ঠানের তথ্য ও যোগাযোগ ইউনিটের নিয়ন্ত্রণ বিদ্যমান আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও প্রেস এবং মিডিয়া স্বাধীনতা প্রচার করা অধিকার গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠানগুলো নির্দেশনাগুলোর নিন্দা করছে। স্থানীয় সাংবাদিক ও মিডিয়া সিন্ডিকেটগুলো এই ইস্যুটিকে সরকারের প্রতি অবিলম্বে এই নির্দেশিকাগুলি উঠিয়ে নেয়ার আহবান জানানো ছাড়াও  সরকারি কর্মকর্তাদের আচরণবিধি এবং নৈতিকতা সংক্রান্ত সরকারের ৪ অক্টোবর ২০১৪ এর ৪০৩০ ফরমান [3]-এর পর্যালোচনা করার জন্যে তদবির করার একটি সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করেছে।

ফরমানটি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে তারা যে সরকারি প্রতিষ্ঠানে  কাজ করেন সেখানকার ঊর্ধ্বতন কারো অনুমোদন ছাড়া বক্তব্য প্রদান বা অন্য কোন প্রকার সরকারি তথ্য প্রকাশ নিষিদ্ধ করেছে। উপরোক্ত ফরমানটির সঙ্গে মিল রেখে নির্দেশনাগুলো জারি করা হয়েছে।

বিতর্কিত নির্দেশনাগুলো স্থগিত এবং ফরমান ৪০৩০ পর্যালোচনা করা না হলে মিডিয়া পেশাজীবীদের প্রতিনিধিত্বকারী আরো অন্যান্য ইউনিয়নসহ তিউনিশীয় সাংবাদিকদের  জাতীয় সিন্ডিকেট ২৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে নির্ধারিত একটি বিক্ষোভ এবং মিডিয়া খাতে  ধর্মঘট [4]সহ নানা প্রতিবাদ কর্মসূচীর হুমকি দেয়।

তবে সরকারের প্রতিনিধি এবং সাংবাদিক ও মিডিয়া পেশাজীবীদের  প্রতিনিধিত্বকারী ইউনিয়নগুলির মধ্যে ২৭ ফেব্রুয়ারি তারিখে সংগঠিত একটি সভায় সরকার নির্দেশনাগুলো স্থগিত করার এবং ৩ মার্চের মধ্যে ৪০৩০ ফরমানটি সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে [1]

২০১১ সালে ২৩ বছর ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা জিনে এল আবেদিন বেন আলীর উচ্ছেদের পর থেকে তিউনিশিয়া সরকারের স্বচ্ছতার উন্নয়ন এবং দুর্নীতি কমানোর একটি প্রয়াস হিসেবে তথ্য স্বাধীনতার পক্ষে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ২০১৬ সালে সংসদে তথ্যের স্বাধীনতা আইন (তথ্যে প্রবেশাধিকারের  ২৪ মার্চ ২০১৬ এর ২২ নম্বর আইন [5]গ্রহণের [6] ফলে তথ্যে প্রবেশাধিকারের সাংবিধানিক অধিকার জোরদার হয়েছে। গত সপ্তাহে দুর্নীতির প্রমাণ প্রকাশকারী গোপন সংবাদদাতাকে সুরক্ষার জন্যে সংসদে একটি আইন [7] প্রণীত হয়েছে। তবে এসব সংস্কার  বাস্তবে অনুদিত হচ্ছে প্রায়শ:ই ধীর গতিতে ।

মনে হচ্ছে যে তিউনিশিয়ার সাংবাদিক ও অধিকার গোষ্ঠীগুলো গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য যুদ্ধ অব্যাহতই রাখবে। সিন্ডিকেটের সভাপতি নেজি ঘৌরি একথা বলেছেন [1]: “পেশাজীবী সংগঠনগুলো গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিত করতে পারে এমন যেকোনো ব্যবস্থাকে প্রতিহত করার কাজ অব্যাহত রাখবে।”