৯ ফেব্রুয়ারি সকালে অপ্রত্যাশিতভাবে সংবাদটি বেরোয়। সামাজিক মিডিয়া গুজবে গুনগুন করতে থাকে যে পুয়ের্তো রিকো’র দীর্ঘতম জেল খাটা রাজনৈতিক বন্দী অস্কার লোপেজ রিভেরা সেদিন সান জুয়ানে নামছেন। এর অল্প কিছুক্ষণ পরেই পুয়ের্তো রিকো’র প্রধান দুই সংবাদ প্রতিষ্ঠান এল নুয়েভো দিয়া (নতুন দিন) এবং নোটিসেল নিবন্ধ প্রকাশ করে নিশ্চিত করে যে সত্যি সত্যিই লোপেজ রিভেরা তার জন্মভূমিতেই শাস্তির বাকি থাকা মেয়াদকাল- মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যেটা তার কার্যকালের শেষভাগে জানুয়ারিতে কমিয়েছিলেন – পূর্ণ করবেন।
১৯৮১ সালে লোপেজ রিভেরাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পুয়ের্তো রিকো’র স্বাধীনতার জন্যে সহিংসতার আশ্রয় নেয়া দল ফুয়ের্জাস আর্মাডাস দে লিবেরাসিওন নাসিওনাল (জাতীয় মুক্তির জন্যে সশস্ত্র বাহিনী) এর সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তিনি কখনোই কারো ক্ষতি করার জন্যে দোষী সাব্যস্ত না হলেও তাকে ৫৫ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
আটলান্টিক প্রমাণ সময় অনুসারে ৯ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪:৩৬ সময় লুইস মুইনোজ মারিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লোপেজ রিভেরাকে নিয়ে বিমান অবতরণ করলে দ্রুত এবং শান্তভাবে তার কন্যা ক্লারিসা লোপেজ, তার আইনজীবী জান সুসলার, ইলিনয় রাজ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি লুই গুতিয়ারেজ এবং সান জুয়ানের মেয়র কারমেন ইউলিন ক্রুজ সোতো তাকে ঘিরে একটি ব্যক্তিগত গাড়ির দিকে নিয়ে যায়।
এটি পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত হওয়ায় পুয়ের্তো রিকোতে লোপেজ রিভেরার আকস্মিক আগমন অনেক বিভ্রান্তি ও অনুমানের জন্ম দেয়। সংবাদটি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার আগমনের অনুমান করে বিমানবন্দরের বাইরে জনতার ভিড় জমে যায়। তবে যারা লোপেজ রিভেরার ফিরে আসা উদযাপন করতে চান তাদেরকে ১৭ মে সকাল ৮টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শাস্তির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। লোপেজ রিভেরা পুয়ের্তো রিকোতে ফিরে এলেও তাকে তার শাস্তির পূর্ণ মেয়াদ সম্পূর্ণ করতে হবে। তিনি তার মেয়ের বাসভবনে গৃহবন্দী থেকে বাকিটা শেষ করবেন এবং স্পষ্টভাবে অনুমতিপ্রাপ্ত নয় এমন – বিশেষ করে সংবাদ মাধ্যমের – কারো সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারবেন না।
ফেসবুক ব্যবহারকারী নেলি লেব্রন রোবলেস অন্যান্য ব্যবহারকারীদেরকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে লোপেজ রিভেরা সম্পর্কে সাবধানতার কথা মাথায় রেখে তাদের পোস্ট করতে পরামর্শ দিয়েছেন:
Hay felicidad entre el pueblo por la llegada de Oscar. […] Si no saben el por qué de las circunstancias de la llegada de Oscar a Puerto Rico, no hagan comentarios que lesionan este día tan maravilloso para el pueblo que, fuera de líneas políticas, religiosas, sociales, se unió para pedir su excarcelación.
অস্কারের আগমনের কারণ মানুষের মধ্যে সুখ বিরাজ করছে […] অস্কার কেন পুয়ের্তো রিকোতে এসেছেন সেটা আপনি যদি না জানেন তবে মন্তব্য করে দল, ধর্ম এবং সামাজিক স্তর নির্বিশেষে তার মুক্তির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ মানুষের এই বিস্ময়কর দিনটি নষ্ট করে দিবেন না।
আরেকজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ক্রিস্টিনা ভিভেস রদ্রিগেজ বিগত কয়েক সপ্তাহের ঘটনাবলী প্রতিফলিত করে পুয়ের্তো রিকোতে রিভেরার অবতরণের রাতে স্টেটাসে লিখেছেন:
El día después de las pasadas elecciones de noviembre, al despertar, aún acostada, me enteré a través del internet y por medio de mi teléfono, de que Donald Trump había ganado la presidencia de Estados Unidos. Las lágrimas de tristeza salieron de mis ojos al instante. No tuve control de ellas. Susurré en voz alta un nombre: Oscar. “¿Qué va a pasar ahora? ¿Qué vamos a hacer? Oscar tiene que salir. Es urgente. No hay más tiempo”, pensé. Esta noche, estando ya acostada, siento brotar las lágrimas de mis ojos de nuevo. Esta vez, vienen acompañadas de sonrisas felices porque sé que Oscar dormirá hoy en su País, junto a su hija. En su hogar… Gracias doy.
নভেম্বরের নির্বাচনের পর যখন আমি দিনের বেলায় জেগে উঠলাম, তখনও বিছানায়, ইন্টারনেটের এবং আমার ফোনের মাধ্যমে আমি জানতে পারলাম যে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে দুঃখের কান্না আমার চোখ থেকে নির্গত হলো। তাদের উপর আমার কোন নিয়ন্ত্রণ ছিল না। আমি জোরে জোরে একটি নাম ফিসফিস করলাম: অস্কার। “এখন কী হবে? আমরা কী করবো? অস্কারকে মুক্তি দিতে হবে। এটা জরুরি। আর সময় নেই,” আমি ভেবেছিলাম। আজ রাতে ঘুমানোর জন্যে শুয়ে বুঝতে পারলাম আমার চোখ থেকে আবার অশ্রু বের হয়ে আসছে। এবার মনে হয় আনন্দের হাসির সঙ্গে কারণ আমি জানি যে অস্কার আজ রাতে তার দেশে ঘুমাবে তার কন্যার কাছাকাছি। তার বাড়িতে… আমি কৃতজ্ঞ।
অনেকেই লোপেজ রিভেরার শেষ পর্যন্ত পুয়ের্তো রিকোতে বাড়ি ফিরে আসার মুহূর্তটিকে একটি ব্যাপক উদযাপনের দিন হিসেবে কল্পনা করে রেখেছিলেন। কিন্তু কেউ কল্পনা করতে পারেন নি তার ফিরে আসাটা যেমন হয়েছে তেমন হবে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যেদিন লোপেজ রিভেরা তার দণ্ডভোগ পুরো করবেন তখন রাস্তায় ব্যাপক উদযাপন হবে। এভাবেই অনেক পুয়ের্তো রিকোবাসী ১৭ মে পর্যন্ত তাদের দম ধরে রেখেছেন।