‘অ্যানিমাল ফার্ম’ বই নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে হাসির খোরাক হলেন ভারতীয় অভিনেত্রী

Collage from Flickr image by Celebrityabc. CC BY 2.0

শিল্পা শেঠির কোলাজ ছবি। কোলাজ করেছেন সেলিব্রেটিএবিসি। সিসি বিওয়াই ২.০

আপনার যদি টুইটার অ্যাকাউন্ট থাকে, আর সেখানে যদি নিয়মিত ঢুঁ মারেন, তাহলে নিশ্চয়ই #শিল্পাশেঠিরিভিউ হ্যাশট্যাগ আপনার চোখে পড়েছে। ভারতীয় চলচ্চিত্র তারকা শিল্পা শেঠি সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে একটা ভুল করেছেন, মুহূর্তের মধ্যে সেটাই ভাইরাল হয়ে গেছে।

কয়েকদিন আগের ঘটনা। লক্ষ্ণৌতে ভারতের শিক্ষাবোর্ডের ৫৯তম বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আগামী বছরের নতুন শিক্ষাক্রম অনুমোদন করা হয়। সেখানে তৃতীয় শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের টিনটিন এবং অ্যাসটেরিক্স, জে কে রাউলিংয়ের হ্যারি পটার সিরিজ, অগাথা ক্রিস্টির হারকিউল পয়রো সিরিজ, জে আর আর টলকিয়েনের দ্য হবিট, সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা, স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের শার্লক হোমস-এর গল্পসহ অন্যান্য গ্রাফিক্স নভেল পড়ানোর কথা বলা হয়। শুধূ তাই নয়, বিজ্ঞানী এপিজে আবদুল কালাম, আনা ফ্রাঙ্ক, মালালা ইউসুফজাইয়ের জীবনীও পড়ানোর কথা বলা হয়। আর এসব নিয়েই গত কয়েকদিন ধরে টু্ইটারে আলোচনা চলছিল।

ঠিক এই সময়ে ইংরেজি দৈনিক টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে একটা সাক্ষাৎকার দেন বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠি। সেখানে তিনি শিক্ষাবোর্ডের উদ্যোগকে সমর্থন জানান:

Books like Lord Of The Rings (LOTR) and Harry Potter as part of the syllabus is a great move because it cultivates imagination and creativity at a young age. They should include books like Little Women, as it encourages respect towards women at a young age. Even a book like Animal Farm can teach the little ones to love and care for animals.

লর্ড অফ দ্য রিংস, হ্যারি পটারের মতো বই পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হলে তো ভালই! যা খুব অল্প বয়স থেকেই পড়ুয়াদের কল্পনাশক্তিকে বিকশিত করতে পারবে। লিটল উইম্যানের মতো বই তালিকায় যোগ হলে অল্প বয়সেই নারীদের প্রতি সম্মান দেখাতে শিখবে। এমনকি অ্যানিমাল ফার্ম বইটাও পাঠ্যক্রমে রাখা উচিত, এতে ছোটরা জীবজন্তুদের ভালবাসার অনুপ্রেরণা পাবে।

শেষেরটাই এসে গোলমাল পাকিয়ে ফেলেছেন শিল্পা। আসলে জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিমাল ফার্ম’ ভীষণ ভাবেই একটি রূপক লেখা। সেখানে একটা খামারের রূপকে সোভিয়েত ইউনিয়নের দুর্দশার কথা, জীবজন্তুরা সবাই সেখানে সমাজের একেকটি শ্রেণিকেই প্রতীকায়িত করছে।

এই কারণেই শিল্পা শেঠি টুইটারে ট্রেন্ডিং হয়েছেন।

এর পরপরই ইন্টারনেটে এক লাইনের রিভিউ দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে #শিল্পাশেঠিরিভিউ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করার মাধ্যমে। যেমন নিচের এই টুইট গুলোর কথাই ধরুন না!

ফিফটি শেডস অফ গ্রে বইটাও পাঠ্যক্রমে রাখা হোক, ওতে ডট ম্যাটিক্স- প্রিন্টার এর ম্যানুয়াল নির্দেশনা রয়েছে।

উফ! আমি ভাবছিলাম ডেভিড কপারফিল্ড একজন বাচ্চা ছেলে, যে তামার খনির কাছের খামারে কাজ করতো।

প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস আমার খুব প্রিয় বই। একদল সিংহ আর বর্ণবাদ নিয়ে বইটি।

বাচ্চাদের ‘অ্যা টেল অব টু সিটিজ’ পড়া উচিত। এতে তাদের ভৌগলিক জ্ঞান বাড়বে।

লাইফ অব পাই চমৎকার একটা রান্নার বই। বাচ্চাদের খুব পছন্দ হবে।

বাচ্চাদের দ্য কাইট রানার বইটা পড়া উচিত। তাহলে ঘুড়ি কাটাকাটি কতটা বিপদজনক তা তারা জানতে পারবেন।

বাচ্চাদের জন্য জ্যোর্তিবিদ্যা শেখার সেরা বই হলো দ্য ফল্ট ইন আওয়ার স্টারস।

দ্য হবিট খুব ভালো বই। বাচ্চারা ভালো আদবকায়দা রপ্ত করতে পারবে।

এসব টুইট পড়ে অনেকেই মজা পেয়েছেন:

#শিল্পাশেঠিরিভিউ হ্যাশট্যাগের লেখাগুলো কেউ কি পড়া থামাতে পেরেছেন? মানুষজন এতো এতো মজার মজার সব কমেন্ট করছে।

অনেকে আবার শিল্পাশেঠিকে সমর্থন করেও টুইট করেছেন:

একজন মহিলা কি বললো সেটা নিয়ে হাসতে পারেন না! দোষ তো ওই পত্রিকার, সেখানে একাধিক সম্পাদক তথ্যের ঠিক বেঠিকের বিষয়গুলো দেখে থাকেন।

প্রিয় শিল্পা শেঠি, আপনি কি নিশ্চিত তারা ঠিকঠাকমতো আপনাকে উদ্ধৃত করেছে? কারণ অ্যানিমাল ফার্ম বই পশুপালন নিয়ে নয়।

সাবিত আজিজ শিল্পা শেঠিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন:

হাসির পাত্র হওয়ায় শিল্পা শেঠি আপনাকে ধন্যবাদ। আমার পড়ার বইয়ের তালিকা প্রস্তুত হয়ে গেল।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .