পূর্ব তিমুর একসময় ইন্দোনেশিয়ার শাসনাধীন ছিল। উপনৈবিশিক শাসন থেকে মুক্ত হতে দেশটিকে দীর্ঘদিন সংগ্রাম করতে হয়েছে। শিল্প ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে দেশটির রয়েছে দীর্ঘ ঐতিহ্য। তাই স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকে দেশটি সংস্কৃতি ও শিল্পকলার ক্ষেত্রে সারাবিশ্বের স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য কাজ করছে।
ইউফ্রাসিয়া ভিট্টোরিয়া ভিয়েরা এর জলজ্যান্ত উদাহরণ। ইউফ্রাসিয়া ভিয়েরা বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তিনি একাধারে অভিনেত্রী, গায়ক, এবং ঔপন্যাসিক। তিনি দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ককে বন্ধুত্বের পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য কাজ করতে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।
ইউফ্রাসিয়া সংক্ষেপে ইউভি নামে পরিচিত। তিনি পূর্ব তিমুরের দিলিতে জন্মগ্রহণ করেছেন। মায়ের দিক থেকে তার এক ভাই, চার বোন। আর বাবার দিক থেকে ছয় ভাই, তিন বোন।
ইউফ্রাসিয়া’র অনেক গুণ থাকলেও তিনি শুধু শিল্পকলা বিশেষ করে অংকন ও চিত্রকলা নিয়ে কথা বলতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। ১০ বছর ধরে তিনি ইংল্যান্ডে বসবাস করছেন। অক্সফোর্ড সিটি কলেজ থেকে আর্ট ও ডিজাইন বিষয়ের উপর ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেছেন।
পূর্ব তিমুরের যেসব তরুণ শিল্পী সাধারণের দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন, ইউফ্রাসিয়া তাদের মধ্যে অন্যতম। তার কাজের স্টাইল, মৌলিকত্ব এবং অ্যাডভোকেসি কাজের জন্য তিনি সবার কাছে পরিচিত। তিনি কাজের প্রতি তুমুল প্যাশনেট। তাই তার কাজ পূর্ব তিমুরের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এবং গৌরবের আসনে অলংকৃত হচ্ছে।
মাদার তেরেসা, ব্রিটিশ লেখক রিচার্ড টেম্পলার, মনোবিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল গোলম্যান এবং পল ক্লেম্যান ইউফ্রাসিয়াকে অনুপ্রাণিত করেছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন:
I want to help change the world and impact people’s lives through my words. I wanna be part of the world in a positive way. I have doubts, fears and worries, like everyone else. But I know I was meant to do this, because doing anything else is torture.
আমি পৃথিবীর পরিবর্তনে সাহায্য করতে চাই। শব্দের গাঁথুনি গেঁথে মানুষের জীবনযাত্রায় ভূমিকা রাখতে চাই। আমি পৃথিবীর ইতিবাচক পরিবর্তনের সাথে থাকতে চাই। আরো অনেকের মতো আমারো দ্বিধা আছে, সংশয় আছে, ভয় আছে। তবে আমি জানি এটা আমি পারবো। কারণ যতক্ষণ পর্যন্ত এটা করতে না পারবো, এটা আমাকে পীড়া দিতে থাকবে।
২০০৯ সালে ইউফ্রাসিয়া ‘হোয়াট’স হার নেম’ নামে তার প্রথম গানের অ্যালবাম রিলিজ করেন। অ্যালবামে ১১টি গান ছিল। নিজের গান নিয়ে ইউফ্রাসিয়া বলেন:
Music has always been a matter of energy to me, a question of soul. Sentimental people call it inspiration, but what they really mean is soul. On some nights I still believe that a car low on gas in the middle of traffic jump can run about fifty more miles if you have the right music very loud on the radio.
গান আমার আত্মার খোরাক। এটা থেকে বেঁচে থাকার প্রেরণা পাই। আবেগপ্রবণ মানুষজন একে বলে অনুপ্রেরণা। কিন্তু আমার কাছে এর আসল মানে হলো আত্মার খোরাক। আমি বিশ্বাস করি, একদিন হালকা ভিড়ের রাস্তায় এক গাড়ি দেখবো। ৫০ মাইল বেগে চলছে সেটি। আর সেই গাড়ির রেডিওতে উচ্চস্বরে বাজছে আমার গান।
২০১৫ সালে ইউফ্রাসিয়ার প্রথম উপন্যাস প্রকাশিত হয়। উপন্যাসের নাম- ভিট্টোরিয়া: হেলানা’র বাদামি বক্স। বইটিতে তার সহলেখক ছিলেন লেস ডি. সোরিয়াপোয়েট্রা।
উপন্যাসটিতে ১৯৯৯ সালে পূর্ব তিমুরের স্বাধীনতার পটভূমিতে এক ইন্দোনেশিয়ান সাংবাদিকের সাথে পূর্ব তিমুরের এক তরুণী’র প্রেম-ভালোবাসার গল্প উঠে এসেছে। ইউফ্রাসিয়া বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন:
The reason that I wrote the story was to try to communicate help and connect with others families, women, men and children going through the same thing…It has been more than 15 years since East Timor war began but many of those caught up in the conflict are still trying to heal.
আমি এ ধরনের গল্প লিখছি, কারণ এর মধ্যে দিয়ে আমি যোগাযোগ এবং সংযুক্ত করতে চেয়েছি ওইসব পরিবার, নারী, পুরুষ, শিশুদের সাথে, যারা একই ঘটনার মধ্যে দিয়ে গেছে। এটা ১৫ বছর আগের কথা। পূর্ব তিমুরে তখন যুদ্ধ শুরু হয়েছে মাত্র। কিন্তু যুদ্ধের স্মৃতি সবার কাছে তরতাজা। তারা চেষ্টা করছেন সেই ক্ষত উপশম করার।
এই উপন্যাস অবলম্বনে একটি সিনেমা বানানো হয়েছে। ইউফ্রাসিয়া এতে অভিনয়ও করেছেন। তাছাড়া ইন্দোনেশিয়ার বিখ্যাত অভিনেতা আরি উইবোয়ুও এতে অভিনয় করেছেন।
আমাদের আসন্ন অ্যাকশন সিনেমা ভিট্টোরিয়া’র জন্য তৈরি থাকুন।
তার ভক্তরা তাকে মার্কিন অভিনেত্রী অ্যাঞ্জোলিনা জোলি’র সাথে তুলনা করে থাকে। সে প্রসঙ্গে ইউফ্রাসিয়া বলেন:
People say anything from what they see on the cover. But yeah it’s pretty funny comparing me to Angelina Jolie. It’s unbelievable. Sometimes, I take those compliments as a joke. Angelina is so beautiful and she’s just wow. I’m just an ordinary woman living a simple life.
তারা কাভার ছবি দেখেছে। সেটা দেখে তারা যা ইচ্ছে তাই বলতে পারে। তবে অ্যাঞ্জোলিনা জোলি’র সাথে তুলনা, আমার মজাই লাগছে। এটা অবিশ্বাস্য। মাঝে মাঝে এগুলো আমার কৌতুক বলে মনে হয়। অ্যাঞ্জোলিনা জোলি খুব চমৎকার একজন মানুষ। আর আমি হলাম খুব সাধারণ একজন মানুষ যে সাধারণই থাকতে পছন্দ করে।