শিল্পীর তৈরি করা অ্যানিমেশন মায়ানমারের শিশু শ্রম এবং কিশোরীদের দুর্দশার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করছে

Promotional poster of the video animation 'I Wanna Go to School’. Image from the Facebook page of Nyan Kyal Say

ভিডিও অ্যানিমেশনঃ “আমি স্কুলে যেতে চাই এর” প্রচারণার জন্য তৈরি পোস্টার। ছবি নয়্যান কায়্যাল সে-এর ফেসবুক পাতা থেকে নেওয়া।

মায়ানমারের শিল্পী নয়্যান কায়্যাল সে বেশ কয়েকটি ভিডিও অ্যানিমেশন তৈরি করেছে যা দেশটির অনেক শিশু এবং কিশোরীর বাজে পরিস্থিতির শিকার হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছে।

এই সকল অ্যানিমেশনের মধ্যে একটির শিরোনাম হচ্ছে “আমি স্কুলে যেতে চাই” যা এক ভাই ও বোনের কাহিনী, তারা বর্ণনা করছে তাদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার স্বপ্ন; লিঙ্গীয় বৈষম্য, দারিদ্য, যুদ্ধ, শিশু নির্যাতন এবং মানব পাচারের মত ঘটনায় চাপা পড়ে যায়।

২০১৫ সালের মানবাধিকার মানব মর্যাদা বিষয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (হিউম্যান রাইট হিউম্যান ডিগনিটি ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিম ফেস্টিভাল-এ) সেরা অ্যানিমেশনের পুরষ্কার লাভ করে। গত মাসে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার এশীয়-প্রশান্ত মাহসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান দপ্তর মায়ানমারের শিশু নিরাপত্তা বিষয়ক প্রচারণা জোরদার করার লক্ষ্যে এই ভিডিওটি তুলে ধরে।

বেশ কয়েকটি সমীক্ষা অনুসারে, মায়ানমারের প্রতি ১০ জন শিশুর মধ্যে একজন শিশু শ্রমের সাথে যুক্ত, যাদের অর্ধকেই ঝুকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত। দেশটির প্রায় অর্ধেক শিশু প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করতে পারে না।

নীচে “আমি স্কুলে যেতে চাই” নামক অ্যানিমেশনটি প্রদর্শন করা হয়েছে।

নয়্যান কায়্যাল সে আরেকটি অ্যানিমেশন ভিডিও তৈরি করেছে যার শিরোনাম “আমার যে জীবনটি আমি চাই না”, এতে মায়ানমারের অনেক কিশোরী তাদের জীবনের সেই সমস্ত কঠিন পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছে যে সমস্ত ঘটনার তারা প্রায়শ মুখোমুখি হয়। এর মধ্যে রয়েছে যৌন হয়রানী, বৈষম্য এবং নারী পাচার। নীচে এই ভিডিওর সার সংক্ষেপ দেখুন:

এই প্রবন্ধকের লেখকের সাথে প্রদান করা এক সাক্ষাৎকারে নয়্যান কায়্যাল সে মায়ানমারের মত রাষ্ট্রের শিল্পীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছেন, যে রাষ্ট্রটি এক গণতান্ত্রিক রূপান্তরের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিটি দেশে শিল্পীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ কেবল বাস্তবতাকে তুলে ধরা ছাড়াও, তারা নাগরিকদের এই সকল বাস্তবতাকে অনুভব ও উপলব্ধি করাতে পারে। মায়ানমারের ক্ষেত্রে, কয়েক দশক ধরে পূর্বের সামরিক বাহিনী সমর্থিত সরকার নাগরিকদের চোখ বন্ধ করে রেখেছিল। যার ফলে তারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিল, এমনকি তারা জানত না যে তারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে। এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে তাদের চক্ষু উন্মোচনের এক শক্তিশালী মাধ্যম হচ্ছে শিল্প। একই সাথে এই কারণে ঐ সকল বছরগুলোতে, রাজনীতি, সামাজিক বিষয়, অর্থনীতি এবং সরকারি বিষয়ে অনেক কিছু সেন্সর করা হয়েছে। এখন মায়ানমার যখন দ্রুত গণতন্ত্রের পথে উত্তরণ ঘটেছে এবং নতুন সরকার গঠিত হওয়ার সাথে সাথে দেশটি এগিয়ে যাচ্ছে, আর এখন শিল্পীদের সৃষ্টির স্বাধীনতা প্রদান করা হচ্ছে, তখন বাস্তবতাকে দেখা এবং অনুভব করার জন্য নাগরিকদের কাছে শিল্প আরো গুরুত্বপুর্ণ হয়ে উঠেছে, এবং এটি সমাজ পরিবর্তনের জন্য তাদের আরো উৎসাহিত করছে।

তিনি আত্মবিশ্বাসী যে তার মত শিল্পীদের সবসময় দেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেঃ

অ্যানিমেশনের ক্ষেত্রে, আমাদের টিকে থাকার চেষ্টা করে যেতে হবে, যেহেতু এখনো মায়ানমারে অ্যানিমেশনের বাজার গড়ে ওঠেনি এবং এ সংক্রান্ত জ্ঞান তেমন উন্নত নয়। তবে, আমি মায়ানমারে বেশ কিছু ইতিবাচক ঘটনা দেখতে পাচ্ছি যেমন দেশটিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ অ্যানিমেশন শিল্পীরা ক্রমশ এগিয়ে আসছে। আমি বিশ্বাস করি মায়ানমারের অ্যানিমেশন শিল্পের উন্নয়নের জন্য আমরা তা করে দেখাবো।

Nyan Kyal Say. Source: Facebook

নয়্যান কায়্যাল সে। সুত্রঃ ফেসবুক

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .