মুহাম্মদ আলীর মৃত্যু সংবাদ মুষ্টিযুদ্ধের এই কিংবদন্তীকে শ্রদ্ধা জানাতে সারা বিশ্ব জুড়ে অনেককে অনুপ্রাণিত করবে। ফিলিপাইনে ফিলিপিনো ক্রীড়া অনুরাগীরা আলী এবং জো ফ্রেজিয়ার মধ্যে অনুষ্ঠিত মুষ্টিযুদ্ধের আসর ‘ম্যানিলায় থ্রিলা’ নিয়ে তাঁদের স্মৃতি শেয়ার করেছেন।
Last night in Araneta Coliseum tribute for Muhammad Ali . pic.twitter.com/iRaP6rq9co
— Nathan™ (@Nahtanojevad) June 5, 2016
গতরাতে আরানেতা মঞ্চে মুহাম্মদ আলীকে শ্রদ্ধা ।
১৯৭৫ সালের ১ অক্টোবর তারিখে অনুষ্ঠিত এই মুষ্টি যুদ্ধের আসরটি ইতিহাসের অন্যতম সর্বশ্রেষ্ঠ আসরে পরিণত হয়। এই আসরে দুই কিংবদন্তি হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নের তৃতীয় এবং চূড়ান্ত লড়াই লড়েছেন। এই আসরে আলী জিতেছেন। যদিও তিনি লড়াই এর শেষের দিকে প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। আলীর সমর্থকদের মনে হয়েছে তাঁদের খেলোয়াড় খেলা জিততে পারবেন না। আর এজন্য তাঁরা রেফারিকে দায়ী মনে করেন। ফিলিপিনো রেফারি কার্লোস প্যাডিলা খেলাটি সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেছেন। তিনি এই খেলায় আম্পায়ারিং করেছিলেন:
তাঁরা আমাকে এবং আমার আম্পায়ারিং নিয়ে সত্যিই খুশি ছিল না। আমি আলীর কাছে গিয়ে বিজয়ী হিসেবে তাঁর হাত উঁচু করে ধরতে গেলে এটা বুঝতে পারি। তাঁরা আলীকে ঘিরে রেখেছিলেন এবং মূলত আমাকে তাঁর কাছে যেতে দিচ্ছিলেন না। তাঁকে বিজয়ী ঘোষণা করতে দিচ্ছিলেন না। তাঁরা বুঝেছেন আমি সেদিন আলীর জন্য জয়ী হওয়াটা কঠিন করে তুলেছিলাম। তাঁরা কেউ সন্তুষ্ট ছিলেন না। তবে আমি তাঁদের বলেছিলাম, ‘না, না, না, আমাকে যেতে পথ করে দাও’। তাঁরা তাঁর চারপাশ ঘিরে দাঁড়িয়েছিলেন। আমি আলীকে বলেছিলেম, ‘আমাকে আপনার হাত তুলে ধরতে হবে’।
ফিলিপাইন সরকার এই মুষ্টিযুদ্ধের আসরটির আয়োজন করেছে এবং স্পন্সর করেছে। কারণ ম্যাচটি দেশটির প্রচারণা বাড়াবে। ‘ম্যানিলায় থ্রিলা’ আসরটির সরকার-নিযুক্ত লিয়াজোঁ অফিসার রনি ন্যাথানিয়েলজ লিখেছেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস এই আন্তর্জাতিক আসরটি আয়োজনের মাধ্যমে দেখাতে চেয়েছিলেন যে দেশটি শান্তিপূর্ণ এবং সামরিক আইন ঘোষণা সত্ত্বেও দেশটি বেশ সমৃদ্ধশালীঃ
…তিনি “ম্যানিলায় থ্রিলা” ম্যাচটির মাধ্যমে ‘বিশ্বকে দেখাতে চেয়েছেন যে দেশটি শান্তিপূর্ণ, আমাদের শান্তি শৃঙ্খলায় কোন সমস্যা নেই, আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে এবং আমাদের জনগণ সন্তুষ্ট।
আরানেতা স্টেডিয়ামের সামনে জনাকীর্ণ সেই আসরের কথা আমার এখনও মনে পড়ে। প্রেসিডেন্ট মার্কোসের নির্দেশ অনুযায়ী স্টেডিয়ামটির নাম পরিবর্তন করে ফিলিপাইন স্টেডিয়াম রাখা হয়েছে। তিনি দেশটিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করাতে চেয়েছিলেন।
‘ম্যানিলায় থ্রিলা’ সেনা সমর্থিত সরকার কর্তৃক সংঘটিত কথিত বাড়াবাড়ি থেকে জনগণের মনোযোগ কেড়ে মুষ্টিযুদ্ধের আসরটির দিকে নিয়ে যেতে সফল হয়েছিল।
ফেইসবুক ব্যবহারকারী ম্যানি পায়ুমো লিখেছেন, কি করে ‘ম্যানিলায় থ্রিলা’ খেলাটি হওয়ার এক সপ্তাহ আগে কয়েকটি সরকার বিরোধী প্রতিবাদ কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দিয়েছিলঃ
আরানেতা স্টেডিয়ামে ম্যানিলায় থ্রিলা খেলাটি যখন হয়েছিল তখন আমি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র ছিলাম। খেলা চলাকালীন সেই একটি সপ্তাহ আমরা রাস্তায় মার্কোস এর সামরিক আইন শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করিনি।
আলীর সম্মানে একটি শপিং মলের নামকরণ করা হয়েছে আলী মল। এটি ফিলিপাইনের প্রথম শপিং মল যেটি ‘ম্যানিলায় থ্রিলা’ খেলার আসরের জায়গাটিতে ১৯৭৬ সালে নির্মাণ করা হয়েছে।
Thrilla in Manila happened when I was a college sophomore October 1975. Then Ali Mall was named shortly after https://t.co/00h41ZvGtF
— Noemi L. Dado (@momblogger) June 4, 2016
১৯৭৫ সালের অক্টোবর মাসে ম্যানিলায় থ্রিলা যখন হয়েছিল তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। এরপর পরই তাঁর নামে আলী মল নামকরণ করা হয়।
Ali Mall, Philippines- the mall named after the great Muhammad Ali in tribute right after The Thrilla In Manila. pic.twitter.com/JQ0xE4Sr2m
— Nancy (@divineme1111) June 4, 2016
ফিলিপাইনের আলী মল। ম্যানিলায় থ্রিলার পরপরই গ্রেট মুহাম্মাদ আলীকে শ্রদ্ধা জানাতে মলটি তাঁর নামে নামকরণ করা হয়।
বিশ্ব মুষ্টিযুদ্ধ চ্যাম্পিয়ন এবং নির্বাচিত সিনেটর আলীকে ম্যানি প্যাকুইয়াও এর নেতৃত্বে ফিলিপিনোদের সম্মানঃ
Manny Pacquiao releases a statement on the passing of Muhammad Ali. pic.twitter.com/hRa2kM3CLr
— SportsCenter (@SportsCenter) June 4, 2016
মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুতে ম্যানি প্যাকুইয়াও এর এক বিবৃতি প্রকাশ।