দুটি টুইটার একাউন্ট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার এশিয়ার বাস্তবতার ছবি তুলে ধরেছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে চীন [2] (চায়না ইন ওয়াল্ড ওয়্যার টু) নামক এক টুইটার একাউন্ট ১৯৩১ সালের সেপ্টেম্বরে জাপানের মাঞ্চুরিয়ায় দখলের ঘটনা থেকে [3] শুরু হওয়া চীন-জাপান যুদ্ধের বিষয়ে মনোযোগ প্রদান করেছে। এশিয়ায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ [3] (ওয়ার্ল্ড ওয়্যার টু ইন এশিয়া) নামের আরেকটি টুইটার একাউন্ট এই যুদ্ধের ৮০ বছর অর্থাৎ ২০২৫ সাল পর্যন্ত “এর ইতিহাস সম্বন্ধে সরাসরি টুইট করে যাবে” এবং উক্ত ঘটনার ৮০তম বার্ষিকী পর্যন্ত এই ঘটনার প্রতি উৎসর্গকৃত থাকবে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে চীন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে চীন [2] নামক এই টুইটার একাউন্টের প্রোফাইল অনুসারে “১৯৩১ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত চলা চীন-জাপান যুদ্ধ এবং আধুনিক এশিয়ার জন্ম সংক্রান্ত সংবাদ” সরবরাহ করছে।
এই একাউন্টটি পরিচালনা করেন পিটার হার্মসেন, যিনি “সাংহাই ১৯৩৭ [4]” এবং “নানজিং ১৯৩৭” [5] নামক বইয়ের লেখক।
এই টুইটার একাউন্ট দীর্ঘ সময় ধরে চলা এমন এক যুদ্ধের ছবি সরবরাহ করেছে, যে যুদ্ধের ঘটনা একই সাথে জাপান এবং পশ্চিমা বিশ্ব একেবারে ভুলে গেছে, যদিও ১৯৪৫ সালে জাপানের পরাজয়ের মধ্যে ১৫ বছর ধরে চলা এই যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে।
Cover of Japanese kids’ magazine from 1934. Theme: fighting with warlords in north #China [6]. #WW2 [7] #Japan [8] pic.twitter.com/eaCD5Er6Ge [9]
— China in WW2 (@chinaww2) April 3, 2016 [10]
১৯৩৪ সালে প্রকাশিত জাপানের এক শিশুতোষ পত্রিকার প্রচ্ছদ, যার বিষয়বস্তু উত্তর চীনের যুদ্ধবাজ নেতাদের সাথে যুদ্ধ করা।
এই সকল ছবি ৩০ এর দশকের আকর্ষণীয় এক ঝলক, যা ১৯৩০–এর দশকের বিশ্বের চেহারা তুলে ধরছে এবং এই ঘটনা নির্দেশ করছে এই দশকে চীন-জাপানের এই যুদ্ধে পশ্চিমা শক্তি কীভাবে যুক্ত হয়েছিল এবং জাপানকে সহযোগীতা করেছিল।
Japanese, British sentries in city of Tianjin, north #China [6], 1939. #Japan [8] #WW2 [7] pic.twitter.com/ofXplnaglw [11]
— China in WW2 (@chinaww2) April 26, 2016 [12]
উত্তর চীনের তিয়ানজিন শহরে জাপানী ও ব্রিটিশ টহল সেনা
Japanese Marines with British-made Vickers-Crossley armored cars during first battle of Shanghai in 1932. #China [6] pic.twitter.com/bEYkrEd69O [13]
— China in WW2 (@chinaww2) January 9, 2016 [14]
ব্রিটিশদের তৈরি ভিকারস-ক্রসলে নামক সাজোয়া যান, যা ১৯৩২ সালে প্রথম সাংহাই যুদ্ধে জাপানের নৌ সেনারা ব্যবহার করে।
এখানে অনেক ছবি দেখে মনে হবে যে এগুলো কেবল ছবি তোলার জন্য তোলা হয়েছিল, তবে এর মাঝেও কিছু বিস্ময়কর নথি আবিস্কার হয়েছে :
Japanese troops disembarking in Hangzhou Bay, Nov 1937. #Japan [8] was pioneering amphibious tactics then. #China [6] #WW2 [7] pic.twitter.com/hNpRWC9A9T [15]
— China in WW2 (@chinaww2) March 25, 2016 [16]
১৯৩৭ সালের নভেম্বর মাসে জাপানের সেনারা হাংঝু উপসাগরের উপকূলে অবতরণ করছে, সে সময় জাপান ছিল একই সাথে জলে ও স্থলে যুদ্ধ পরিচালনা কৌশলের এক পথ প্রদর্শক।
এই সংগ্রহশালায় সেই সকল ছবিও আছে যা এই যুদ্ধে প্রচারনার কাজে ব্যবহার হয়েছে:
Japanese poster urging defenders of Hong Kong to abandon resistance, December 1941. #China [6] #Japan [8] #WW2 [7] pic.twitter.com/pDXizPg5Xp [17]
— China in WW2 (@chinaww2) May 6, 2016 [18]
ডিসেম্বর ১৯৪১ সালে প্রকাশিত জাপানের পোস্টারে আহবান জানানো হচ্ছে হংকং-এর মুক্তিকামী সেনারা যেন তাদের প্রতিরোধ লড়াই ত্যাগ করে।
একই সাথে এই সকল ছবি যা মূলত ১৯৩০-এর দশকে উত্তর চীনে উপনিবেশ স্থাপনের লক্ষ্যে চালানো জাপানের প্রায় বিস্মৃত এক হামলার কথা তুলে ধরছে:
Getting from Dalian to Harbin, fast. Magazine ad for #Japan [8]-operated railroad in puppet state Manchukuo, #China [6] pic.twitter.com/IorhzEdDgI [19]
— China in WW2 (@chinaww2) April 4, 2016 [20]
প্রথমবার রেলেগাড়ির দালিয়ান থেকে হারবিন যাত্রা। পুতুল রাজ্য মাঞ্চুকোতে জাপান পরিচালিত রেল কোম্পানির পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপন।
টুইটার ফিড একই সাথে প্রায়শ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে চীন সংক্রান্ত প্রবন্ধ প্রকাশ করে এমন ব্লগকে যুক্ত করছে :
What happened to the Japanese stranded in #China [6] at the end of #WW2 [7]? Read it here https://t.co/NcMhShhiQu [21] #Japan [8] pic.twitter.com/Rvklf3BXrA [22]
— China in WW2 (@chinaww2) March 2, 2016 [23]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে চীনে আটকে পড়া জাপানীদের ভাগ্যে কী ঘটেছিল? সে বিষয়ে জানতে এই প্রবন্ধটি [21] পাঠ করুন।
এশিয়ায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
ওয়ার্ল্ড ওয়্যার টু ইন এশিয়া বা এশিয়ায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নামক টুইটার একাউন্টের লক্ষ্য এশিয়ায় সংঘটিত এই যুদ্ধ সংক্রান্ত অতীত ঘটনাবলী নিয়ে সরাসরি টুইট করা। একই সাথে এটি দূর্লভ ও বিস্ময়কর ছবির এক উৎস। .
মাইক্রো ব্লগে এর আবেদনের কারণে এই সকল ছবি রিয়েল টাইমে ধারাবহিক ভাবে টুইট করা হয়েছে; ঠিক এই মূহূর্তে এই একাউন্টটি ১৯৩৬ সালের ঘটনাবলীর বিষয়ে টুইট করছে:
May 11, 1936: New Japanese law to make disclosure of industrial information an act of treason pic.twitter.com/qImZk2dleO [24]
— WW2 in Asia (@asiainww2) May 11, 2016 [25]
১১ মে, ১৯৩৬ঃ জাপানের নতুন আইনে শিল্পায়ন সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করা হবে রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল।
এই টুইটার একাউন্টে কিছু প্রয়োজনীয় প্রেক্ষাপট সরবরাহ করা হয়েছে যা যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় এশিয়ায় ঘটেছিল:
May 8, 1936: Speech in Japan's parliament denouncing Army's role in politics is received with thunderous applause pic.twitter.com/nCwiqWXAQ8 [26]
— WW2 in Asia (@asiainww2) May 8, 2016 [27]
৮ মে, ১৯৩৬ঃ জাপানের সংসদে প্রদত্ত ভাষণে রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর নাক গলানোর নিন্দা জানানোর বিষয়টি তুমুল করতালির মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়।
April 6, 1936: Japan's war minister orders army to stay out of politics pic.twitter.com/tVCeRv7Ihs [28]
— WW2 in Asia (@asiainww2) April 6, 2016 [29]
৬ এপ্রিল, ১৯৩৬ঃ জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সামরিক বাহিনীকে আদেশ প্রদান করেছে যেন তারা রাজনীতি থেকে দূরে থাকে।
March 10, 1936: New Japanese Minister of War Terauchi Hisaichi says army is not trying to introduce Fascist regime pic.twitter.com/CWT8BJMHgi [30]
— WW2 in Asia (@asiainww2) March 10, 2016 [31]
১০ মার্চ, ১৯৩৬ঃ জাপানের নতুন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী তেরাউচি হিশাচি বলেছেন সামরিক বাহিনী দেশে ফ্যাসিষ্ট শাসন প্রয়োগের চেষ্টা করছে না।
১৯৪১ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্যাতন শুরু হয়ার পূর্বে উত্তর পূর্ব এশিয়ায় জাপানী উপনিবেশের অস্তিত্ব নিয়ে বেশ কিছু অসাধারণ নথি রয়েছেঃ
April 21, 1936: Japan plans railway from Korean port city of Fusan to Seoul, citing economic and strategic reasons pic.twitter.com/oDHT17sRk0 [32]
— WW2 in Asia (@asiainww2) April 22, 2016 [33]
২১ এপ্রিল, ১৯৩৬; কোরিয়ার বন্দর নগরী ফুসান থেকে সিউল পর্যন্ত জাপান এক রেললাইন স্থাপনের পরিকল্প করেছে, তারা উদ্ধৃত করছে যে অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত কারণে তারা এটি স্থাপন করছে।
এই টুইটার একাউন্ট ৮০ বছর আগের জাপান এবং এশিয়ার কিছু কৌতুহলচজনক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছে:
April 3, 1936: League of Nations names Japan world's leading exporter of dangerous drugs, followed by Germany pic.twitter.com/kLoYHJ5Htb [34]
— WW2 in Asia (@asiainww2) April 3, 2016 [35]
৩ এপ্রিল, ১৯৩৬ঃ লিগ অফ নেশনস বিশ্বে শীর্ষ বিপজ্জনক মাদক রাপ্তানিকারক রাষ্ট্র হিসেবে জাপানের নাম ঘোষণা করেছে, এরপরের স্থানে রয়েছে জার্মানী।
May 5, 1936: Japan and territories under its control lead world in per capita drug use, League of Nations data show pic.twitter.com/HVPzCAAodf [36]
— WW2 in Asia (@asiainww2) May 6, 2016 [37]
৫মে, ১৯৩৬ঃ লীগ অফ নেশনসের ডাটা অনুসারে জাপান এবং এর নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চলে মাথা পিছু মাদক গ্রহনের হার বিশ্বে সবচেয়ে বেশী, ।
তবে টুইটার একাউন্টের এক একটি হতাশাজনক সংকলিত ফিচার রয়েছে যা প্রদর্শন করছে যে সে সময়ে বিশ্বে দাবানলের মত যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়া মোটেও বিস্ময়কর ছিল না:
April 18, 1936: ‘Japan Must Fight Britain’ by Lt. Cmdr. Ishimaru Tota is published in English pic.twitter.com/HuxFOa5Qo0 [38]
— WW2 in Asia (@asiainww2) April 18, 2016 [39]
১৮ এপ্রিল, ১৯৩৬ঃ ইংরেজিতে প্রকাশিত লেফটেন্যান্ট কমোডোর ইশিমারু টোটার লেখা বই যার শিরোনাম, “জাপান অবশ্যই বৃটেনের সাথে যুদ্ধ করবে”।