- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

সাংবাদিককে ফিনল্যান্ডে বিশ্ব সংবাদপত্র স্বাধীনতা দিবসে যোগদানে থাইল্যান্ডের নিষেধাজ্ঞা

বিষয়বস্তু: পূর্ব এশিয়া, থাইল্যান্ড, নাগরিক মাধ্যম, প্রচার মাধ্যম ও সাংবাদিকতা, বাক স্বাধীনতা, মানবাধিকার, রাজনীতি, সরকার, সেন্সরশিপ
Pravit Rojanaphruk holding a copy of the draft constitution which some critics believe will reinforce military rule in Thailand. Pravit is seen flashing the three-finger sign which is also a symbol of protest used by pro-democracy forces in Thailand. Source: Facebook [1]

প্রাভিত রোজানাফ্রুকের কাছে খসড়া সংবিধানের একটি কপি আছে। সমালোচকদের কেউ কেউ মনে করেন এই খসড়া সংবিধানটি থাইল্যান্ডে সামরিক শাসনকে আরও শক্তিশালীভাবে অধিষ্ঠিত করবে। প্রাভিতকে তিনটি আঙুল দিয়ে নিদর্শন দেখাতে দেখা গেছে, যা থাইল্যান্ডের গণতন্ত্রপন্থী বাহিনী প্রতিবাদের নিদর্শন হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। ছবিঃ প্রাভিত রোজানাফ্রুক/ ফেইসবুক।

একজন অভিজ্ঞ সাংবাদিকের গত ৩ মে তারিখে বিশ্ব সংবাদপত্র স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ফিনল্যান্ডে আয়োজিত একটি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আবেদন থাই সামরিক কর্তৃপক্ষ প্রত্যাখ্যান করেছে [2]

প্রাভিত রোজানাফ্রুক খাওসোদ ইংরেজি সংবাদের একজন সংবাদদাতা এবং জান্তা সরকারের একজন সমালোচক হিসেবে বেশ পরিচিত। তিনি সরকারের কাছ থেকে দেশ ছাড়ার অনুমতি পেতে ব্যর্থ হয়ে সে সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কয়েকটি আপডেট দিয়েছেন। ইউনেস্কোর আয়োজিত বিশ্বব্যাপী একটি আয়োজনে অন্যান্য সাংবাদিকদের সাথে যোগদানের জন্য তাঁর হেলসিংকি যাওয়ার কথা ছিল।

২০১৪ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত ক্যু এর সময় থেকে প্রাভিত ধারাবাহিকভাবে থাইল্যান্ডের সামরিক একনায়কতন্ত্রের সমালোচনা করে আসছেন। তাঁকে দুইবার ডেকে কয়েকদিনের জন্য সেনাবাহিনীর সামরিক ক্যাম্পে “মনোভাব-সমন্বয়ের” অভিজ্ঞতা প্রদান [3] করা হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে তাঁর সমালোচনামূলক প্রতিবেদন লেখা তিনি অব্যাহত রেখেছেন। কোন চার্জ তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে, কিন্তু তিনি “পরামর্শ” ছড়িয়ে সরকার সম্পর্কে “বিভ্রান্তিকর ‘তথ্য থামাতে। তিনি জানতে পারলেন যে, তিনি রাষ্ট্রীয় অনুমোদন ছাড়া দেশ ছেড়ে আসতে পারবেন না।

সেনাবাহিনী ২০১৪ সালে ক্ষমতা দখল করে [4]। এরপর একটি অন্তর্বর্তীকালীন সংবিধানের খসড়া তৈরি করে এবং দেশটিতে সংস্কার বাস্তবায়িত হওয়ার পর বেসামরিক শাসন পুনঃ প্রতিষ্ঠা করার অঙ্গীকার করে। দুই বছর পর এখনও দেশটি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। সেখানে প্রচার মাধ্যমগুলো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত [5] হয় এবং গণ বিক্ষোভ নিষিদ্ধ রয়েছে। এখনও সেনা সমর্থিত সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক চরিত্রের [6] সমালোচনা করেন যারা তাঁদের মধ্যে প্রাভিত একজন।

বিদেশ ভ্রমণের জন্য প্রাভিতের আবেদন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নাকচ হওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পর্কিত তাঁর টুইটার পোস্টগুলো নিচে  রয়েছেঃ

ইউনেস্কো কর্তৃক হেলসিঙ্কিতে আয়োজিত চতুর্থ বিশ্ব সংবাদপত্র স্বাধীনতা সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণপত্র। আর আবেদন নাকচ করেছে জান্তা সরকার। #থাইল্যান্ড

সামরিক জান্তার প্রতিনিধি আমাকে শুধু ফোন করে বললেন তাঁরা আমাকে মে মাসে বিশ্ব সংবাদপত্র স্বাধীনতা দিবসে যোগ দিতে ফিনল্যান্ড সরকারের আমন্ত্রণে ফিনল্যান্ডে যেতে দেবেন না।

সামরিক জান্তার প্রতিনিধি এই দুঃসংবাদ জানাতে আমাকে ফোন করে বলেছে, হেলসিংকিতে আমার সফর “সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে”। আমি তখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছি এর অর্থ কি আমি যেতে পারছি না? #থাইল্যান্ড

বিবিসির থাই প্রতিনিধি জান্তা সরকারকে জিজ্ঞাসা করেছে, বিশ্ব সংবাদপত্র স্বাধীনতার এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য আমাকে #ফিনল্যান্ড সফরে যেতে কেন নিষেধ করা হয়েছে?  #থাইল্যান্ড

জান্তা সরকার যদি মনে করে থাকে যে আমার বিদেশ সফর নিষিদ্ধ করে তাঁরা আমাকে চুপ করাতে পারবে, তবে তাঁরা ভুল ভাবছে। তাঁদের প্রতিটা কাজের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ এবং সমালোচনা আমি চালিয়ে যাব।

থাইল্য্যান্ডে ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টি অয়েস্টফালেন বলেছেন, তিনি থাই সরকারের এই সিদ্ধান্তে “দুঃখ প্রকাশ করছেন”।

বিশ্ব সংবাদপত্র স্বাধীনতা সম্মেলনে যোগদান করতে @প্রাভিতকে হেলসিংকি সফরে যেতে না দেয়ার #থাইল্যান্ড সরকারের এই সিদ্ধান্তে #ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত দুঃখ প্রকাশ করেছেন।