- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

কাঠমান্ডুতে নীলকণ্ঠ ফুল ফুটেছে, চারপাশ নীলচে-বেগুনি রঙে ভরে গেছে

বিষয়বস্তু: দক্ষিণ এশিয়া, নেপাল, নাগরিক মাধ্যম, পরিবেশ
jacaranda [1]

স্ক্রিনশট নেয়া হয়েছে আনন্দ’র ইনস্ট্রাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে।

আপনি যদি এখন কাঠমান্ডু ঘুরতে যান, তাহলে শহরের অপরূপ রূপ আপনাকে মুগ্ধ করবে। শহরটি যেন নববধুর সাজে সেজে উঠেছে। আর এই সাজের পিছনে রয়েছে নীলকণ্ঠ ফুল। কাঠমান্ডুর এই রূপ দেখা যাবে বসন্ত ঋতুর আগমণের আগ পর্যন্ত।

[অনুবাদক নোট: নীলকণ্ঠ মাঝারি আকৃতির পত্রমোচী বৃক্ষ। কাণ্ড মসৃণ ও হালকা ধূসর রঙের। পাতা চিরল চিরল, কারুকার্যময় ও বিন্যাস বিপ্রতীপ। গ্রীষ্মের প্রথমভাগেই নতুন পাতা গজাতে শুরু করে। তার পরপরই প্রায়-পাতাহীন ডালের ডগায় গুচ্ছবদ্ধ ফুল ফুটতে শুরু করে।]

কাঠমান্ডুর বাসিন্দারা অক্লান্তভাবে শহরের এই রূপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরছেন।

নীলকণ্ঠ, গ্রীষ্মকাল, কাঠমান্ডু।

আজকের কাঠমান্ডুর দরবার মার্গের দৃশ্য। নীলকণ্ঠ ফুল ফুটলেই এমন বিরল নয়নাভিরাম দৃশ্য চোখে পড়ে।

Had there been a little less dust and smoke, how much more the jacaranda would smile in Kathmandu.

এখন ধূলা-ধোঁয়ার পরিমাণ কম। নীলকণ্ঠর স্নিগ্ধ শোভায় কাঠমান্ডু হাসছে যেন!

নেপালে দু’ধরনের নীলকণ্ঠ রয়েছে। একটি জ্যাকারান্ডা মিমোসিফোলিয়া [15]। আরেকটি জ্যাকারান্ডা ওভালিফোলিয়া।

@লোচনগাওয়ালি, বেশিরভাগ বইয়ে নেপালে দু’ধরনের নীলকণ্ঠ ফুলের উল্লেখ রয়েছে। একটি জ্যাকারান্ডা মিমোসিফোলিয়া। আরেকটি জ্যাকারান্ডা ওভালিফোলিয়া। আবার এদের মাঝেও অনেক ভাগ রয়েছে।

নীলকণ্ঠ ফুল ফোটার মৌসুমের কিছু সুন্দর ছবি দেখুন:

Jacaranda under the lamp post.

ল্যাম্পপোস্টের নিচে নীলকণ্ঠ।

গ্রীষ্মকাল, কাঠমান্ডু এবং ফুলে ফুলে ছাওয়া নীলকণ্ঠ গাছ। এক কথায় অসাধারণ।

নেপালের অনেক মানুষই নীলকণ্ঠ/জ্যাকারান্ডার সাথে শিরিষকে গুলিয়ে ফেলেন। তারা একে শিরিষ বলে মনে করেন:

শিরিষ ফুল ইতোমধ্যে ফুটেছে। তবে আমার হৃদয়ের আকুলতা প্রকাশ পায়নি।

নীলকণ্ঠ ফুলের সাথে শিরিষকে গুলিয়ে ফেলার ইতিহাস বেশ পুরোনো। এর শুরু বিখ্যাত নেপালি লেখক পারিজাত একটি উপন্যাস থেকে। উপন্যাসটির নাম শিরিষ কো ফুল (শিরিষ ফুল)। উপন্যাসটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

প্রিয় ভাই-বোনেরা, নীলকণ্ঠ আর শিরিষ যে আলাদা গাছ, আশা করি তা জানেন। কাঠমান্ডু’র সংবাদমাধ্যমকে বলছি, নীলকণ্ঠকে শিরিষ লিখবেন না।

ব্লগার কবি রাজ খাটিওয়ালা তার ব্লগে [28]নীলকণ্ঠর সাথে শিরিষকে গুলিয়ে ফেলার ইতিহাসে আলো ফেলেছেন:

One of the finest book ever written in Nepali literature….Shirish Ko Phool… and one of my personal favorite…. is able to change the identity of the tree…. Seems crazy but the fact is true…… Shiris Ko Phool is a novel written by prominent Nepali writer Parijat (Bishnu Kumari Waiwa) and also published in English language as “The Blue Mimosa”.
While doing translation… I don’t know why… did they took that name… the blue mimosa… and the cover page image… but this was enough to give the false identify of a beautiful tree of Kathmandu.

নেপালি সাহিত্যে সবচে’ বিখ্যাত একটি বই… শিরিষ কো ফুল… ব্যক্তিগতভাবে আমরাও খুব প্রিয় বই এটি… কিন্তু এই বইটিই গাছটির পরিচয় পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে। শুনতে যাই মনে হোক, এটাই সত্যি ঘটনা… শিরিষ কো ফুল বইটি লিখেছেন পারিজাত বিষ্ণু কুমারি উইয়া। বইটি ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। দ্য ব্লু মিমোসা নামে।

যখন অনুবাদ হয়… আমি জানি না কেন হয়েছে… তারা এই নাম দেয়… দ্য ব্লু মিমোসা… এবং বইটির প্রচ্ছদে ছবি দেয়… কাঠমান্ডু’র সুন্দর এই গাছটির মিথ্যা পরিচয় দেয়ার জন্য এটিই যথেষ্ট ছিল।

একটু একটু করে হলেও কাঠমান্ডুর অধিবাসীরা নীলকণ্ঠ গাছের সাথে শিরিষের পার্থক্য বুঝতে সক্ষম হচ্ছে:

শিরিষ ফুল নীলকণ্ঠকে হারিয়ে দিচ্ছে। এর চেয়ে আর ভুল কী হতে পারে?

জ্যাকারান্ডা ফুল ফোটার কারণে কাঠমান্ডু যখন নীলাভ হয়ে উঠেছে, অন্যদিকে দেশটির দক্ষিণের সমতল ভূমির রাস্তাজুড়ে লাল রঙে ভরে উঠেছে। কারণ সেখানকার রাস্তার ধারে গুলমোহর ফুলের গাছ বোনা হয়েছে।

বৃষ্টি হওয়ার পর আবহাওয়া আরো চমৎকার হয়েছে। পরিষ্কার আকাশের নিচে লাল রঙা গুলমোহর ফুলগুলোকে কী সুন্দরই না দেখাচ্ছে! শুধু গরমের একটু ভয়, এই যা!