বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বেশ কয়েকটি নদী এবং খাল আড়াআড়ি ভাবে সংযুক্ত হয়েছে এবং সেখানে ঘন সবুজ প্রাকৃতিক দৃশ্যের অবতারনা করেছে। আপনি যদি এই খালগুলোতে কোন নৌকায় চড়ে ঘুরে বেড়ান তবে সেখানে অনেক পেয়ারা বাগান দেখতে পাবেন। হাজার হাজার কৃষক এই পেয়ারা চাষ এবং বিক্রয় করে তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করছেন। কৃষক এবং পাইকারি বিক্রেতারা সেখানকার অনেক ভাসমান বাজারে [2] তাঁদের পেয়ারা কেনা বেচা করেন, যেটি অনেকটা থাইল্যান্ডের ভাসমান বাজারের মতো।
পেয়ারা [3] হচ্ছে বেরি’র মত একটি ফল, যেটিকে “গ্রীষ্মমণ্ডলের আপেল” বলা হয়ে থাকে। যদিও ফলটির আদি উৎস গ্রীষ্মপ্রধান আমেরিকাতে (মেক্সিকো এবং পেরুর মাঝামাঝি জায়গা), বর্তমানে এটি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি ফলজাতীয় ফসলে পরিণত হয়েছে। সারা দেশেই এটির চাষ হয়। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে – বিশেষ করে বরিশাল, পিরোজপুর এবং ঝালকাঠি জেলায় পেয়ারা চাষ বেশি হচ্ছে।
শমশের [4] তাঁর দেখা ভাসমান বাজার সম্পর্কে ব্লগে সেটাই লিখেছেনঃ
কুড়িয়ানা বাজার, আটঘর আর ভীমরুলি বাজারে বসে পেয়ারার হাট। চাষীরা বাগান থেকে পেয়ারা সরাসরি ছোট ছোট নৌকায় করে এসব হাঁটে নিয়ে আসে, পাইকাররা এখান থেকে সংগ্রহ করে পৌঁছে দেয় সারা বাংলাদেশে।
কখন থেকে এই ভাসমান বাজারটি শুরু হয়েছে তা কেউই নির্দিস্ট করে বলতে পারে না। তবে বাজারটির প্রচলন হয়েছে কমপক্ষে একশ বছর আগে। সবগুলো বাজারের মাঝে কির্তিপাশা খাল জুড়ে ভিমরুলিতে বসা বাজারটি সবচেয়ে বড়। মূলত জুলাই থেকে আগস্ট মাস অর্থাৎ পেয়ারার মৌসুমে বাজারটি প্রাণ ফিরে পায়। এছাড়াও সারা বছর জুড়ে এই বাজারগুলোতে আমড়া, লেবু, নারিকেল এবং কলা কেনাবেচা হয়। কৃষকদের উপযুক্ত যোগাযোগ অথবা হিমাগার ব্যবস্থা নেই। যার ফলে এখানে তাঁদের পণ্য অনেক কম মূল্যে বিক্রয় করতে হয়। তবে মোবাইল ফোনের বিস্তার এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাচ্ছে।
বরিশালের স্থির পানিতে ভাসমান বাজার এবং পেয়ারা বাগানে দেখিয়ে “বাংলাদেশে ভ্রমণ” ইউটিউবে একটি ভিডিও [5] আপলোড করেছে।
আলোকচিত্রি মোহাম্মাদ মোয়াজ্জেম মোস্তাকিম তাঁর ফেইসবুক পেইজ তিমুর ফটোগ্রাফিতে [6]ভাসমান বাজারের কয়েক ডজন সুন্দর ছবি শেয়ার করেছেন। ছবিগুলো অনলাইনে ব্যাপক সারা জাগিয়েছে। মোস্তাকিমের অনুমতি নিয়ে আমরা তাঁর কয়েকটি ছবি নিচে তুলে ধরেছি।
এখানে [6]আপনি এই ভাসমান পেয়ারা বাজারের আরও ছবি পাবেন।