ইরানি কার্টুনিস্ট আতেনা ফারঘাদানির শাস্তি ১২ বছর থেকে কমিয়ে ১৮ মাস করা হয়েছে

Atena Farghadani stands trial on Tuesday May 18 for charge that include insulting members of parliament and spreading propaganda against the system. Image taken from the 'Free Atena' Facebook page.

সংসদ সদস্যদের অবমাননা এবং শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা ছড়ানোর অভিযোগে আতেনা ফারঘাদানিকে ২০১৫ সালে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করান হয়। ছবিঃ “আতেনাকে মুক্ত কর” ফেইসবুক পেইজ।

সক্রিয়কর্মী এবং কার্টুনিস্ট আতেনা ফারঘাদানিকে ইরানে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়ার দিন ধার্য করা হয়েছে। কেননা একটি আপিল আদালত তাঁর সাজা ১২ বছর থেকে কমিয়ে ১৮ মাস করে।

সাংবাদিকতা কোন অপরাধ নয় নামক একটি সংস্থা গত ২৫ এপ্রিল তারিখে তাঁর আইনজীবীর বরাত দিয়ে রিপোর্ট করেছে যে আগামী ২২ মে ২০১৬ তারিখে তাঁকে মুক্তি দেয়া হবে। উল্লেখ্য সংস্থাটি ইরানি সাংবাদিকদের বিভিন্ন নিপীড়নের ঘটনা নথিভুক্ত করে থাকে।

ইরানে গর্ভনিরোধ বিষয়ে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়ানো সম্পর্কে একটি কার্টুনের জন্য ২০১৫ সালে ফারঘাদানিকে বিচারের আওতায় আনা হয়। এই কার্টুনে তিনি ইরানের সংসদ সদস্যদের পশু হিসাবে অঙ্কিত করেছেন। সে সময়ে দেশটির সংসদে স্বেচ্ছায় গর্ভনিরোধের প্রতি জনগণের অংশগ্রহণ সীমাবদ্ধ করতে একটি বিল নিয়ে ভোট চলছিল।

বিপ্লবী আদালত নামক আদালতে তাঁর বিচার করা হয়। আদালতটি ছোটখাট অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান দেয়ার কারনে বেশ পরিচিত।

২০১৫ সালের জুন মাসে ফারঘাদানিকে শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো, ছবি আঁকার মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের অপমান এবং সর্বোচ্চ নেতাকে অপমানের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং ১২ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। সে সময়ে ইরানে মানবাধিকারের জন্য আন্তর্জাতিক প্রচারাভিযানের হাদি ঘায়েমি মন্তব্য করে বলেন, “ভিন্নমতাবলম্বিদের  শান্তিপূর্ণ অভিব্যক্তি এখনও ইরানে একটি লাল রেখা, যা অতিক্রম করলে আপনাকে কারাদন্ডে দণ্ডিত হওয়ার ঝুঁকি নিতে হবে”।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, ফারঘাদানিকে হয়তোবা নির্দিস্ট করেই লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। কারণ রাজনৈতিক বন্দী পরিবারের সাথে তাঁর সংযোগ রয়েছে, যাদের অনেকে ২০০৯ সালের ইরানের ত্রুটিপূর্ণ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পরবর্তী সময়ে কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন।

কারা হেফাজতে থাকা সময় বার বার ফারঘাদানি কর্তৃপক্ষের হাতে সহিংসতার সম্মুখীন হয়েছেন। ইরানের মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত থেকে পাওয়া একটি রিপোর্ট অনুযায়ী (পিডিএফ দেখুন)।

১০ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে শ্রীমতি আতেনা ফারঘাদানিকে বিপ্লবী আদালতের ১৫ নম্বর শাখায় ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে তাঁকে গ্রেফতার করা হয় এবং পরবর্তীকালে তাঁর বাবা-মায়ের সামনে তাঁকে পেটানো হয়। শ্রীমতী আতেনার প্রতিবাদের মুখে তাঁকে একটি আদালত কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে আবার লাঞ্ছিত করা হয় এবং পেটানো হয়। এই বার অভিযুক্ত আদালতে বিচারকের সামনে তাঁকে পেটানো হয়। […] প্রতিবেদন অনুযায়ী দুই মাসের আটকাবস্থায় তাঁকে মোট ২০ দিন নির্জন কারাবাসে অতিবাহিত করতে হয় এবং কঠোর শারীরিক তল্লাশি চালান হয়, যেখানে তিনি হয়রানির শিকার হন। তাঁর কারাবরণ অবস্থার প্রতিবাদে তিনি অনশনরত ছিলেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। তাঁর স্বপক্ষে নিযুক্ত আইনজীবীর সাথে তাঁকে যোগাযোগ করতে এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেয়া হতো না।

জাতিসংঘের আরেকটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, “তাঁকে জোরপূর্বক কুমারীত্ব ও গর্ভাবস্থা পরীক্ষা করান হয়। “কয়েকটি ওয়েবসাইটে তাঁর উপর যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠায়” ইরানি কর্তৃপক্ষ এই পরীক্ষাকে প্রতিক্রিয়া হিসেবে সমর্থনযোগ্য বলে বিবেচনা করছে।

পুলিতজার পুরষ্কার প্রাপ্ত কার্টুনিস্ট এ্যান টেলনায়েস ফারঘানির মুক্তির বিষয়ে সতর্ক পাহারায় থাকার প্রতি জোর দিয়েছেনঃ

সারা বিশ্ব জুড়ে থাকা আমার কার্টুনিস্ট সহকর্মীদের প্রতি অনুরোধঃ চলুন আতেনা ফারঘাদানির মুক্তির উপর কড়া নজর রাখি এবং আওয়াজ তুলি।

গ্লোবাল ভয়েসেসে আতেনা ফারঘাদানির মামলা নিয়ে করা পুরনো কভারেজগুলোর জন্যঃ

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .