প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনী মার্চের শেষে আইএসআইএস থেকে পালমিরা পুনর্দখল করেছে, যেটি পুরাকীর্তির দিক থেকে সে দেশের নেতৃস্থানীয়। এর মাধ্যমে প্রাচীন এই সিরিয় শহরটির “দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটল”। নৃশংস জঙ্গি গ্রুপটি ২০১৫ সালের মে মাসে শহরটির দখল নেয় এবং এর প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদগুলোর উপর ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। গত আগস্টে তাঁরা পাঁচ দশক ধরে শহরটির প্রধান প্রত্নতত্ত্ববিদ খালেদ আসাদ এর শিরশ্ছেদ করে।
গত এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে, পালমিরার মহিমাম্বিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্মৃতিস্তম্ভগুলো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস করা হয়। সেগুলোর মধ্যে বালশামিন মন্দির, বেল মন্দির, ট্রাম্প এর আর্চ এবং এলানবেল টাওয়ার অন্যতম। দেশটির জাতীয় জাদুঘর লুণ্ঠিত হয়। আইএসআইএস বলে, ঐতিহাসিক হস্তনির্মিত বস্তুগুলো অসার যা তাদের বিকৃত ইসলামিক ধারণা সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাই সেগুলো ভেঙ্গে ফেলা উচিত (অথবা বিক্রি – গ্রুপূটির “ধর্মহীন” ঐতিহ্যগুলো বিক্রি করে অর্থ উপার্জন সম্পর্কে কোন সংশয় আছে বলে মনে হয় না)। ইরাকের প্রাক ইসলামী যুগের প্রত্নতাত্ত্বিক সাইটগুলো, যার মধ্যে মসুলের একটি যাদুঘরে ৩,০০০ বছর বয়েসী ভাস্কর্যও ছিল, যা একই ভাগ্য বরণ করে।
বেশ কিছু দিন আগে আইএসআইএস শহরটি দখল করে নেয় এবং সিরিয়ায় যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। ঐতিহ্যবাহী এই প্রত্নতাত্ত্বিক কেন্দ্রটি ঝুঁকিতে পড়ে যায়। সে সময় পালমিরার প্রত্নতাত্ত্বিক বিস্ময়গুলো নথিভুক্তির কাজ চলছিল। ২০১৫ সালের কোন এক সময়ে শুরু হওয়া এই #নতুনপালমিরা প্রকল্পটি ছিল বাসেল খারতাবিল এর মস্তিষ্ক প্রসূত ভাবনা। তিনি ছিলেন একজন প্যালেস্টাইন-সিরিয়ান কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, পাশাপাশি একজন সক্রিয় কর্মী এবং ক্রিয়েটিভ কমন্স নেতা। খারতাবিল ত্রিডি মডেলের একটি বিনামূল্যে অনলাইন ডাটাবেসের মাধ্যমে নগরীর ইতিহাস পুনর্গঠন করার লক্ষ্যে কাজ করছিলেন।
যাইহোক, গত ১৫ মার্চ, ২০১২ তারিখে সিরিয়ার সরকার তাঁকে গ্রেফতার করে। আটকের চার বছর পর তাঁকে অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অন্যান্য ৩০ টি মানবাধিকার সংগঠন খারতাবিলের হদিস প্রকাশ করার দাবি করেছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি অনুপস্থিত।
গত অক্টোবরে সক্রিয় কর্মীদের একটি গ্রুপ খারতাবিলের প্রচেষ্টার পুনর্জাগরন করেন। তাঁরা এটার নামকরণ করেছেন #নতুনপালমিরা। তারা ছবি সংগ্রহ করে স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় পালমিরার ঐতিহাসিক রত্ন ত্রিডি মডেল তৈরি করেছেন।
Have Palmyra Photos? Any before Destruction? Help Rebuild at https://t.co/RIcmbRZ9kq & Share via our new Upload Box. pic.twitter.com/311tCg2UpR
— New Palmyra (@NewPalmyraOrg) March 10, 2016
পালমিরার ছবি আছে? ধংসের আগের? এটা নতুন করে তৈরিতে সহায়তা করুন।
নীচে প্রকল্পটি থেকে বেল মন্দিরের একটি মডেল রয়েছে। সাইটটির মতে, মডেলটির মাত্র ২০% সম্পূর্ণ হয়েছে।
#নতুনপালমিরা সিরিয়ার একমাত্র সংরক্ষণ প্রচেষ্টা নয়। ডিজিটাল প্রত্নতত্ত্ব ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে পাওয়া দশ লক্ষ চিত্রের ডাটাবেসের সাথে কম খরচের ত্রিডি ক্যামেরা সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবকদের কাজ মিনারের নথি তৈরিতে সহায়তা করেছে। আগামী ১৯ এপ্রিল, ২০১৬ তারিখে লন্ডনের ট্রাফাল্গার স্কয়ারে প্রদর্শনের জন্য প্রকল্পটি বেল মন্দিরের প্রবেশ খিলানের একটি প্রতিলিপি মন্দির তৈরির পরিকল্পনা করছে, যা ৩২ খ্রিস্টাব্দকে ফিরিয়ে আনবে।
ইতিহাসের দলিল তৈরি এক জিনিস, কিন্তু একটি ধ্বংস হয়ে যাওয়া সাইট তৈরি করা আলাদা ব্যাপার। একাডেমিক সংস্কারমুক্ত খবরের সাইটে একটি সাম্প্রতিক পোস্টের মাধ্যমে কথোপকথনের এমন নৈতিকতাই প্রকাশ পেয়েছে।