- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

নির্বাসিত অধ্যাপক জানালেন থাইল্যান্ডের জান্তা সরকার তার পরিবারকে হয়রানি করছে

বিষয়বস্তু: পূর্ব এশিয়া, থাইল্যান্ড, আইন, নাগরিক মাধ্যম, প্রতিবাদ, মানবাধিকার, রাজনীতি, সরকার, সেন্সরশিপ
Image from Prachatai, a content partner of Global Voices [1]

গ্লোবাল ভয়েসেস-এর কনটেন্ট পার্টনার প্রাচাতাই-এর ওয়েবসাইট থেকে ছবিটি নেয়া হয়েছে।

থাইল্যান্ডের সামরিক শাসন বিরোধী একজন নির্বাসিত অধ্যাপক জানিয়েছেন, সেনা সদস্যরা ব্যাংককে তাদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের হয়রানি [2] করছে।

ওই অধ্যাপকের নাম পাভিন চাচাভালপংপান। তিনি কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান। বর্তমানে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং অধ্যাপক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, সৈন্যরা নিয়মিতভাবে তার বোনের বাড়িতে যাচ্ছে। সামরিক সরকার এবং রাজতন্ত্র নিয়ে আমি যাতে কথা না বলি, সে ব্যাপারে তাকে নির্দেশ দিচ্ছে। দ্য ডিপ্লোম্যাট অনলাইন ম্যাগাজিনে তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিতভাবে লিখেছেন [3]:

Apart from sending officers to my home, the military also called up my sister at her workplace twice, ordering her to inform me that if I did not stop discussing the Thai monarchy, my family would have to “pay the price” for my activities outside Thailand. The military also demanded that my entire family in Bangkok report themselves to an army camp, and that, if they failed to do so, there would be another visit.

বাড়িতে সৈন্য পাঠানোর পাশাপাশি তারা আমার বোনের অফিসেও দু'বার হানা দিয়েছে। সেখানে গিয়ে তাকে বলেছে, আমি যদি থাই রাজতন্ত্র নিয়ে কথা বলা বন্ধ না করি, তাহলে তাদেরকে চড়া মূল্য দিতে হবে। সেনাবাহিনী আমাদের পুরো পরিবারকে ব্যাংককের একটি সেনা ক্যাম্পে গিয়ে দেখা করতে বলেছে। দেখা করতে ব্যর্থ হলে, তারা আবার বাড়িতে আসবে।

জান্তা সরকারের কঠোর সমালোচক হিসেবে পাভিনের পরিচিতি রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত লিজ ম্যাজেস্টি ল’ (রাজাকে অপমান বিরোধী আইন) সংস্কারের পক্ষে কথা বলছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই আইনের অপব্যবহারের [4] মাধ্যমে বিরোধীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। ২০১৪ সালে সেনাবাহিনী যখন ক্ষমতায় আসে, পাভিন তখন জাপানে শিক্ষকতা করছিলেন। এরপরে জান্তা সরকার তাকে বেশ কয়েকবার আচরণ শুধরে [5] নেয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তিনি প্রতিবারই সামরিক সরকারের আদেশ অগ্রাহ্য করেছেন। পরে সরকার তার পাসপোর্ট বাতিল ঘোষণা করে। তিনি বাধ্য হয়ে জাপানে আশ্রয় প্রার্থনা করেন।

শিক্ষক হিসেবে পাভিন অনেক দেশেই থাইল্যান্ডের সামরিক অভ্যুত্থান সম্পর্কে বক্তব্য রেখেছেন। সেখানে দেশটিতে নির্বাচন ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চাপ দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন। ফেব্রুয়ারির ২৪ তারিখে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য রাখার সময়ে তার বোনোর বাসায় সৈন্যদের আকস্মিক উপস্থিতি নিয়ে একটি বার্তা পান।

এবারই প্রথম নয়, পাভিন এর আগেও সামরিক সরকার দেশের বাইরে অবস্থান করা থাই নাগরিকে আচরণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে, সে বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। গত বছর তিনি দাবি করেছিলেন, শিকাগো ও জার্মানীতে অবস্থানরত যেসব থাই শিক্ষার্থী, তার বক্তৃতা শুনতে যাবে, তাদের শিক্ষাবৃত্তি বাতিল করবে বলে থাই সরকারের হুঁশিয়ারি দেয়ার কথা জানিয়েছিলেন।

সামরিক সরকারের ভীতি প্রদর্শন কৌশলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন সত্ত্বেও তার বোনের বাসায় সৈন্যরা আবার এসেছে [6] বলে পাভিন তার ফেসবুকে লিখেছেন:

You have punished me, hunt me (even when I did nothing wrong) — I already found this injustice unbearable. But to go after my family who had nothing to do with me — this is absolutely unacceptable. I will fight against this intimidation to the best of my ability. Don't push me further into the corner!

আপনি আমাকে শাস্তি দেন, আঘাত করেন (যদিও আমি কোনো অপরাধ করিনি)- আমার প্রতি ইতোমধ্যে অসহনীয় অন্যায় অত্যাচার চালানো হয়েছে। কিন্তু আমার পরিবারকে শাস্তি দিতে পারেন না। তারা আমার কিছুই জানে না। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ভীতিপ্রদর্শনের বিরুদ্ধে আমি আমার সাধ্যমত যুদ্ধ করে যাবো। আমাকে আর পিছনে ঠেলবেন না।

এদিকে পাভিনের অভিযোগ অস্বীকার [7] করেছেন জান্তা সরকারের মুখপাত্র কর্নেল উইনথাই সুবারী। তিনি জানিয়েছেন, কোনো সৈন্য পাভিনের বোনের বাড়ি যায়নি:

I dont think it was done by our officers. I don’t think anyone was threatened. Why would we make any threat? It’s not like we’re going to arrest (the sisters)

আমি মনে করি না, আমাদের কোনো অফিসার সেখানে গেছেন। কেউ তাদের হুমকিও দেয়নি। আমরা কেন তাদের হুমকি দিতে যাব? আমরা চাই না তাদের গ্রেফতার করতে।

সামরিক সরকারের মুখপাত্র অস্বীকার করার পর সৈন্যরা যে তার বোনের বাসায় গেছে, তার প্রমাণস্বরূপ তিনি সাংবাদিকদের ছবি প্রদান করেন:

কয়েক মিনিট আগে জান্তা সরকারের মুখপাত্র বলেছেন, কোনো সৈন্য বোনের বাসায় গেছেন কিনা, সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন। কিন্তু বোন আমার কাছে ছবি পাঠিয়েছে।

এর আগের সাক্ষাৎকারে পাভিন জানিয়েছেন [1], তিনি থাইল্যান্ডে ফিরে আগের মতো শিক্ষকতা করতে চান:

I will continue what I do because it’s my role as an academic. I do hope to return to Thailand because my family is there. But if I have to close my ears and mouth, I’d rather stay outside.

আমি আগে যা করেছি, এখনও তাই করতে চাই। কারণ আমি একজন শিক্ষক। আমি আশা করি, আমি থাইল্যান্ডে ফিরতে পারবো। সেখানে আমার পরিবার-পরিজন রয়েছে। কিন্তু তারা যদি আমার মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা করে, তাহলে আমি বাইরেই থেকে যাবো।