অবশেষে বিশ্ববাসীর নজরে পড়লো মধ্য এশিয়ার ভূ-প্রাকৃতিক সৌন্দর্য

ইরখাট, বাদাখস্থান, তাজিকিস্তান। ছবি তুলেছেন বাখরিদ্দিন ইশামুতদিনভ। অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।

মধ্য এশিয়ার ভূ-প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এক কথায় অসাধারণ। এখনকার সতেজ আবহাওয়ার খ্যাতি রয়েছে বিশ্বজুড়ে। যদিও স্বৈরাচারী শাসকরা তাদের শাসনকালে সেই বাতাসকে কলংকিত করেছে।

জাতিসংঘের ভ্রমণ বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশন সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে তাজিকিস্তান দ্রুত পর্যটন গন্তব্য হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। ২০১৫ সালে দেশটিতে পর্যটক বাড়ার হার ৯৪ শতাংশ।

কয়েক সপ্তাহ আগে, যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ সংস্থা দ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের বিশ্বের শীর্ষ সাত পর্যটন গন্তব্যের তালিকায় স্থান করে নেয় কিরঘিজস্তানের নাম। ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইডারের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি এই তথ্য জানিয়েছে।

এই অঞ্চল একসময়ে সোভিয়েত শাসনের অধীনে ছিল। এখানকার সহিংসতা, সামরিক সংঘর্ষ, মানবাধিকার লংঘন, অর্থনৈতিক অচলাবস্থা, অদ্ভূত আইনকানুন ইত্যাদি আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে প্রায়ই খবরের শিরোনাম হতো। তবে এখন অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। মধ্য এশিয়ার অনাবিস্কৃত, নয়নাভিরাম পর্যটন কেন্দ্রগুলো বিশ্ব মিডিয়ার মনোযোগ পেয়েছে। সারাবিশ্বের পর্যটক এখানে এসে ভিড় করছেন।

গত বছর গ্লোবাল ভয়েসেস তাজিকিস্তানের অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক স্থানগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে প্রধান প্রধান দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে নানা তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আজকে আমরা আরো একটু বিস্তৃত পরিসরে দেখতে চাই। সেজন্য মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর ড্রোন ফুটেজ এবং প্রচারণা ভিডিওর তথ্য উপস্থাপন করা হলো।

কাজাখস্তান

আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীর নবম বৃহত্তম দেশ কাজাখস্তান। দেশটিতে দেখার মতো ঐতিহ্যবাহী যাযাবর সংস্কৃতি থেকে শুরু করে নবনির্মিত রাজধানী আস্তানা, মাইলকে মাইল বিস্তৃত বৃক্ষহীন তৃণভূমি, জলাময় পাইন গাছের সারি, পাথুরে গিরিখাত রয়েছে। যা আপনাকে মুগ্ধ করবে।

কিরঘিজস্তান

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ সংস্থা দ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস তার পাঠকদের কিরঘিজস্তান ভ্রমণের জন্য কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:

Hiking in the Tian Shan mountains, riding over the grass-covered steppes or mountain biking on ancient Silk Road routes, and staying in traditional yurts surrounded by wilderness.

তিয়ান শান পর্বতমালায় হাইকিং, ঘাসঘেরা তৃণভূমির মধ্যে দিয়ে গাড়ি চালনা, পুরোনো সিল্ক রোড ধরে সাইকেল দাবড়ানো, জনহীন প্রান্তরে ঐতিহ্যবাহী ইয়র্টে রাত্রিযাপন ইত্যাদি।

তাজিকিস্তান

যারা প্রকৃতিকে ভালো বাসেন, প্রকৃতির মাঝে বুঁদ হয়ে থাকতে চান, তাদের জন্য আদর্শ স্থান তাজিকিস্তান। দেশটির ৯৩ শতাংশই পর্বতঘেরা। সাথে আছে পাহাড়ের উপরে আলপাইন হ্রদ। আবার যারা ইতিহাসপ্রেমি, তাদের জন্যও দেশটি বেশ শিক্ষণীয়। কারণ যুদ্ধ-বিগ্রহ দেশটিতে লেগেই ছিল। তাছাড়া বারে বারে আক্রান্ত হয়েছে বহির্শত্রুর আক্রমণে। আক্রমণকারীদের দলে আলেক্সজান্ডার দ্য গ্রেট থেকে শুরু করে চেঙ্গিস খানও রয়েছেন। আবার বিশ্বের বৃহত্তম বৌদ্ধ মূর্তিও রয়েছে এখানে। দেশটিতে ঘুরতে এসে দেখতে যেতে পারেন প্রাচীন জরোস্ট্রিয়ান মন্দির, কথা বলতে পারেন ইমাম আল-বুখারির মাতৃভাষায়।

তুর্কিমেনিস্তান

আন্তর্জাতিকভাবে তুর্কিমেনিস্তানের খ্যাতি আখাল-তেক ঘোড়া, হাতে বোনা কার্পেট, মরুভূমি, উট, সূবর্ণ মূর্তির শহর হিসেবে। তাছাড়া দেশটি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদকারী

উজবেকিস্তান

বুখারা বা সমরখন্দের নাম শুনেছেন নিশ্চয়। প্রাচীন শহর হিসেবে তাদের খ্যাতি রয়েছে। ইতিহাসখ্যাত এইসব শহরে নানা উপকথার গল্পগাঁথা স্বচক্ষে দেখতে চাইলে আপনার গন্তব্য হবে উজবেকিস্তান। তাছাড়া সিল্ক রোড ধরে হাঁটতে হাঁটতে লাভ করবেন অতীত ইতিহাসের অভিজ্ঞতাও। এছাড়াও তুর্কি আর পার্সিয়ান সংস্কৃতির নানা কিছু এসে মিলেছে এখানে। তাই উজবেকিস্তানকে ডাকা হয় এশিয়ার রত্ন বলে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .