
ফেসবুককে বুড়ো আঙ্গুল
“পেডিগা মেসিডোনিয়া” নামের ফেইসবুক পেইজটি যা মেসিডোনিয়ায় ইসলাম ভীতি ছড়ানোর জন্য বেশ পরিচিত তা ম্যাসেডোনীয ব্যবহারকারীদের সাপ্তাহ ব্যাপী অভিযোগের ফলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মেসিডোনিয়ায় ফেসবুক খুব প্রভাবশালী একটি সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। দেশটির প্রায় বিশ লক্ষ নাগরিকদের মধ্যে এগারো লক্ষ ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছে। এছাড়াও প্রায়শই এই ফেসবুক ম্যাসেডোনীয়দের কাছে বৈষম্যমূলক এবং ঘৃণ্য আধেয় হিসেবে ব্যাবহার করতেও ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য বলকান দেশের মত ম্যাসেডোনিয়া বহুবিচিত্র ঐতিহ্য একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে এবং তার জনসংখ্যা কাঠামোকে একটি বহুজাতিক ও বহু-ধর্মীয় হিসাবে বর্ণনা করা হয়। বৃহত্তম ধর্মীয় গ্রুপ হচ্ছে অর্থোডক্স খ্রিস্টান(৬৫%) এবং মুসলমান (৩৩%) যারা সাধারণত সহিষ্ণুতার মধ্যে দিয়ে বসবাস করছে।
যদিও অনেক ব্যবহারকারী নিয়মিত ফেসবুকে “রিপোর্ট এবইউজ” প্রক্রিয়া মাধ্যমে ঘৃণ্য পোস্টগুলি রিপোর্ট করলেও তা বহাল তবিয়তে থাকতো। গত কয়েক বছর ধরে, ফেসবুক খুব কমই এমন ক্ষেত্রে একটি পৃষ্ঠা, গ্রুপ পোস্ট বা কোন ইভেন্ট মুছে ফেলেনি যদিও তা স্পষ্ট বৈষম্য বা ঘৃণাত্মক বার্তা ও বক্তব্য প্রচার করেছে , কিংবা সরাসরি কোন ব্যক্তি বা দলকে হুমকি দিয়েছে।
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে, “‘পেডিগা মেসিডোনিয়া’ নামের ফেইসবুক পেইজটি খোলা হয় যেখানে পরিষ্কারভাবে ইসলাম সম্পর্কে ভীতি ছড়ানো হয়। তবে এই পেইজটি যিনি খুলেন তার সাথে জার্মান রাজনৈতিক আন্দোলন ‘পেডিগা’র (পশ্চিম এর ইসলামীকরণ বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক ইউরোপীয়দের আন্দোলন) সঙ্গে সরাসরি সংযোগ আছে না শুধু তার অনুকরণকারী তা স্পষ্ট নয়। অনেকে এই পেইজটির বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেছেন এবং তাদের বন্ধুদেরকে ও অনুরোধ করছেন। পূর্বে, এইসব পেইজ সম্পর্কে রিপোর্ট করা হলেও খুব একটা ইতিবাচক ফলাফল দেখা যায়নি, তাই রিপোর্টকারীরা পেইজটির বন্ধের ব্যাপারে অনেকটা নিরাশাবাদী ও নিষ্ক্রিয় ছিলেন।

‘পেগিডা মেসিডোনিয়া’ নামের ফেইসবুক পেইজটির প্রোফাইল ছবি।
অসংখ্য রিপোর্ট সত্ত্বেও, ফেসবুক বলেছে সংশ্লিষ্ট পেইজটি সমাজ মানদণ্ড লঙ্ঘন করেনি, কিন্তু ব্যবহারকারীরা অব্যাহতভাবেই অপ ব্যাবহারের অভিযোগে রিপোর্ট করেছেন, এবং ট্যাগিং মাধ্যমে যারা পৃষ্ঠাটি পছন্দ করেছেন তাদেরকে সরাসরি জানিয়েছেন।
ফেসবুকে সংশ্লিষ্ট পেইজটিকে রিপোর্ট করার সংখ্যা নববর্ষের পর এবং ২৬ জানুয়ারী ২০১৬ থেকেই বেড়ে যায়। ফলে একপর্যায়ে “পেডিগা মেসিডোনিয়া” পেইজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যবহারকারী, যিনি এই পেইজ নিয়ে ঘৃণাত্মক বক্তব্যের জন্য রিপোর্ট করেছেন, তিনি ফেসবুক সংশ্লিষ্ট পেইজটি সমাজ মানদণ্ড লঙ্ঘন করেছে ব্যাখ্যা করে একটি বিজ্ঞপ্তি পেয়েছেন।

যারা পেইজটি সমাজ মানদণ্ড লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ করেন তাদের অভিযোগ ভিত্তিতে পাওয়া ফেসবুকের বিজ্ঞপ্তি ।
ফেসবুকে বিজ্ঞপ্তি দেখে ব্যবহারকারীদের আশাবাদিতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে যে, সম্মিলিত প্রচেষ্টা ইতিবাচক ফলাফল আনতে পারে। বেশ কিছু ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বিজ্ঞপ্তিটির স্ক্রিন শট নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। এটি অনেকের কাছে একটি প্রতীক, সমাজে কোন ঘটনার মান যা সময়ের তাগিদেই উন্নীত হওয়াকে প্রতিনিধিত্ব করছে।
উপরন্তু, স্থানীয় কিছু ম্যাসেডোনীয় মিডিয়া এবং প্রচারণা যা ঘৃণাত্মক বার্তাকে প্রতিহত করেছে ইন্টারনেটে ম্যাসেডোনীয় ফেসবুক ব্যবহারকারীদের এই অর্জনকে ইতিবাচক ফলাফল হিসেবে লিখছে।
আপনাদের লেখা গুলো খুবই ভালোলাগে ধন্যবাদ গ্লোবাল ভয়েস