
জনসম্মুখে বক্তৃতা দিচ্ছেন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও নোবেল বিজয়ী অং সান সুচি। ছবি তুলেছেন কামায়ুত মিডিয়া। অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।
৮ নভেম্বর ২০১৫-এ মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০১০ সালে গণতন্ত্রের দিকে যাত্রা শুরুর পর মিয়ানমারে এটা দ্বিতীয় সাধারণ নির্বাচন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে স্থির হবে সেনা সমর্থিত সরকার আরো বেশি সংস্কারের পথে এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরোধী দলের নেতাদের আরো বেশি ভুমিকা রাখার সুযোগ দিবে কিনা।
মিয়ানমার ৫০ বছর সামরিক শাসনের অধীনে ছিল। ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিরোধী দলসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে অংগ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়। সরকার কিছু রাজনৈতিক সংস্কারও করে। সংস্কারগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি, মিডিয়ার সেন্সরশিপ বাতিলের মতো বিষয়ও রয়েছে। যদিও তখন থেকেই ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে সরকারের সকল শাখায় অবসরপ্রাপ্ত এবং সিনিয়র সেনা কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়া হয়।
মাল্টিমিডিয়া প্লাটফর্ম এনগেজ মিডিয়া কিছু ভিডিও আপলোড করেছে, যেখানে চলতি বছরের নির্বাচন নিয়ে নানা বিতর্কিত দিক উঠে এসেছে। যার প্রথমটিতেই মিডিয়া আউটলেট হিসেবে পরিচিত ডেমোক্রেটিক ভয়েস অব বার্মা’র কথা উঠে এসেছে।
নিচের ভিডিওতে “প্রটেকশন অব রেস অ্যান্ড রিলিজিয়ন লজ” পাস হওয়ার পর জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ গ্রুপ মা বা থা’র উদযাপনের দৃশ্য উঠে এসেছে। এই আইন পাসের ফলে মিয়ানমারের মুসলমানরা নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না। তাছাড়া ভোটার লিস্টে ভুল থাকায় ৪ মিলিয়ন নাগরিক ভোট দেয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।
৮ নভেম্বরের নির্বাচনে বিরোধী দলের নেত্রী ও নোবেল বিজয়ী অং সান সুচি পুনর্নির্বাচিত হওয়ার চেষ্টা করছেন। রাখাইন রাজ্য থেকে তিনি প্রচারাভিযান শুরু করেছেন। এটি দাঙ্গাকবলিত একটি এলাকা। এখানে কট্টরপন্থী বৌদ্ধদের সাথে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের দাঙ্গা হয়েছিল। এতে বেশ কিছু মুসলমান বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগই মুসলিম। মিয়ানমারের সরকার তাদের রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেছে। রোহিঙ্গাদের ৮ নভেম্বরের ভোট প্রদান থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে।
সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়ক টক শো ডেটলাইন ইরাবতীতে সরকারি দল এবং বিরোধী দলের প্রচার কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেই আলোচনায় ধর্ম ও রাজনীতি যে একে অপরের পরিপূরক তার অনিবার্য দিকগুলো উঠে এসেছে। গত বছর এই অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ জানালো হয়েছিল। সেখানে তিনি নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন।
উপরের ভিডিওগুলো যদি কোনো ইঙ্গিত দিয়ে থাকে তা হলো,গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে মিয়ানমারকে এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে এবং সে পথ যথেষ্ট জটিলও।