হিডালগোর পাচুকা শহরের অবস্থিত একটি ছোট লোকালয়ের কেন্দ্রে ২০০ বাড়ীর সমন্বয়ে তৈরী একটি পটভূমিতে আঁকা মেক্সিকোর সব থেকে বড় প্রাচীরচিত্রটি জুলাই মাসে উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট মাত্রার দারিদ্র ও অপরাধযুক্ত প্রধানত পল্লী লোকালয় হিসেবে খ্যাত পাহাড়ী জেলা লাস পালমিতাসকে এই ‘প্রকাণ্ড প্রাচীরচিত্রটি’ শুধুমাত্র রঙিন করা ছাড়াও আরও বেশী কিছু প্রদান করেছে।
এই যৌথ প্রচেষ্টা লাস পালমিতাসকে এর প্রকল্প নেতৃত্বস্থানীয়দের ভাষায় ‘প্রথম যাদুকরী লোকালয়’ — পর্যটন গন্তব্য হিসেবে ‘যাদুকরী শহর’ (পুয়েব্লোস মাজিকোস)-এর প্রসার করায় মেক্সিকো সরকারের একটি পৃথক উদ্যোগ — হিসেবে পরিণত করে কর্মসংস্থান করেছে, কিশোর সহিংসতা হ্রাস করেছে, এবং একটি সমাজ উদ্দীপনামূলক বোধ সৃষ্টি করেছে।
এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়েছে স্বতন্ত্র মেক্সিকীয় সংঘ হার্মেন ক্রু (বীজ কর্মীদল) যার সাথে সংশ্লিষ্ট রয়েছে গ্রাফিটি শিল্প, প্রাচীরচিত্র শিল্প এবং শব্দচিত্রমূলক তথ্যচিত্রে বিশেষায়িত শিল্পীরা। এই দলটির লক্ষ্য হলো গণ ও সড়ক চিত্রের মাধ্যমে জনগণের জন্য উন্মুক্ত স্থানগুলোকে একটি নতুন তাতপর্য দেয়া ও এখানে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জন্য একটি সামাজিক কাঠামো ফিরিয়ে আনা। তাদের ফেসবুকের পাতায় নীচের কথাগুলো লেখা আছে:
Nuestro trabajo es una ofrenda artística para nuestras ciudades ya que mediante colores formas texturas y técnicas mixtas compartimos nuestra forma de hacer y entender el arte, buscamos detonar la semilla de lo posible fortaleciendo el corazón y el entusiasmo de quien vive en los lugares que intervenimos, queremos refuncionalizar el espacio público haciéndolo más útil para quienes lo habitan, un lugar que eduque, motive, ayude aporte y germine una nueva relación de los ciudadanos con su entorno y las expresiones que ahí convergen.
আমাদের কাজ হলো আমাদের শহরের জন্য একটি শৈল্পিক উৎসর্গ। আমরা যেভাবে চিত্রকলা তৈরী করি ও সেটিকে বুঝি তা আমরা রঙ, আকার, বিন্যাস ও মিশ্র মাধ্যমের সাহায্যে প্রকাশ করি। আমরা যে সমস্ত জায়গায় যাই সেই সমস্ত জায়গায় বসবাসকারী লোকেদের হৃদয় শক্তিশালী ও উৎফুল্লতাকে জোরদার করার মাধ্যমে আমরা সম্ভবনার বীজ অঙ্কুরিত করার প্রচেষ্টা চালাই। জনগণের জন্য উন্মুক্ত জায়গাগুলোকে তার অধিবাসীদের জন্য আরও কার্যকর করে তোলার মাধ্যমে আমরা সেখানে নতুন অভিপ্রায় প্রদান করতে চাই, যে জায়গাগুলো আশপাশের নাগরিকদের সাথে ও সেখানে কেন্দ্রীভূত হওয়া অভিব্যক্তিগুলোর সাথে নতুন সম্পর্ক স্থাপন ও বিস্তারে সহায়তা করতে শিক্ষা দেয়, অনুপ্রাণিত ও সাহায্য করে।
উপকরণের চাহিদা পূরণে সহায়তাকারী স্থানীয় ও রাষ্ট্রীয় সরকারের সহযোগিতা ছাড়াও এই প্রকল্পটির একটি বিরাট রসদ হিসেবে কাজ করেছে লাস পালমিতাসে বসবাসকারী ৪৫২ পরিবারের (প্রায় ১,৮০৮ জন) সক্রিয় অংশগ্রহণ। প্রকল্পের মেয়াদ কাল পুরো তিন মাস ধরেই এর অধিবাসীদের কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে, এবং তারা বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে যেগুলো সেই একই সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে: কর্মশালা, বক্তব্য, এবং ভ্রমণ যার সবগুলোর উদ্দেশ্য ছিল কিশোর অপরাধ হ্রাস করা।
‘এত সাদৃশ্য ও সহাবস্থান’
উপরের ভিডিওটিতে লণ্ঠন বেলুনের উপর একটি কর্মশালার দলিলায়ন করা হয়েছে, লাস পালমিতাসে বসবাসকারীরা মন্তব্য করেছে যে শৈল্পিক কর্মকাণ্ডগুলো এলাকার উপর ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করেছে:
Para nosotros es un día de fiesta en nuestra colonia, porque estamos viviendo cosas que nunca antes habíamos vivido.
আমাদের জন্য এটি আমাদের জেলার একটি উৎসব দিবস, কারণ আমরা এমন জিনিসের অভিজ্ঞতা অর্জন করছি যার অভিজ্ঞতা আমরা আগে কখনো পাই নি।
Veo que hay mucha armonía y convivencia, más que nada en las familias. Yo creo que con estos eventos mi colonia va a mejorar bastante y siento que no va a haber delincuencia.
আমি সর্বোপরি আমাদের পরিবারগুলোর মধ্যে এতো সাদৃশ্য ও সহাবস্থান দেখতে পাই। আমি বিশ্বাস করি এই অনুষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে আমার এলাকা বহুলাংশে উন্নত হবে এবং তেমন আর অপরাধ থাকবে বলে আমি মনে করি না।
প্লানিসফেরিও নামের পরিকল্পনা বিষয়ক পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বীজ কর্মীদলটি ব্যাখ্যা করে যে প্রাতিষ্ঠানিক জায়গা নয় বরং জনগণের জন্য উন্মুক্ত চত্বর, বাজার, এবং এমন কি যথেষ্ট হারে অপরাধ সংঘঠিত হওয়া প্রান্তিক এলাকাগুলোতে অংকনে উপর আলোকপাত করাই তাদের পন্থাকে উদ্ভাবনী করেছে। একই সময়ে তারা বলে যে তাদের যৌথ প্রচেষ্টা ও দলীয় গতিময়তার ফলই হলো তাদের সাফল্য।
‘মেক্সিকোর প্রথম যাদুকরী লোকালয়’
‘রঙ হলো যাদু’ এই অভিব্যক্তিটি একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও চালু করে যেখানে লাস পালমিতাসের একটি প্রাণবন্ত, রঙিন জনগোষ্ঠীতে পরিণত হবার প্রামান্যচিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
১৩ বছরেরও বেশী সময় ধরে বিদ্যমান কর্মীদলটি মেক্সিকো শহরের জামাইকীয় বাজারে; মেক্সিকোর একাটেপেক-এর নতুন শহরগুলোর গড়ের মাঠে; এবং হুয়াদালাহারার মিরাভাল্লেসহ আরও অনেকগুলো জায়গায় প্রকল্প গ্রহণ করেছে। বর্তমানে তাদের ভাষায় ‘মেক্সিকোর প্রথম যাদুকরী লোকালয়’ হিসেবে লাস পালমিতাসকে পরিবর্তন করার তাদের লক্ষ্য অর্জন করেছে, এবং যার সবকিছু থেকে বোঝা যাচ্ছে যে এধরনের প্রকল্প আরও হবে।
বীজ কর্মীদলের কাজ সম্পর্কে আরও তথ্য তাদের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম-এর পাতায়, এবং ইউটিউব-এ তাদের চ্যানেলে পাওয়া যাবে।