গত দুই সপ্তাহ ধরে তুরস্ক সিরিয়ার সিমান্তের কাছে অবস্থিত কূর্দি অধ্যুষিত সিজরে শহরে তুরস্ক সরকার প্রথমে কারফিউ আরোপ করে, আবার সেই আরোপ তুলে নেয়, তারপর আবার কারফিউ আরোপ করে, এরপর আবার সেই কারফিউর তুলে নয়, এই শহরটি নির্মম আই এস আই এস নামক দল নিমন্ত্রিত মধ্য পূর্ব অঞ্চলের কাছে অবস্থিত।
নিষিদ্ধ ঘোষিত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)-এর কার্যক্রমের বিরুদ্ধে লড়াই-এর জন্য এই কারফিউ আরোপ করা হয়, যা দলটির সাথে একদা আঙ্কারা দুর্বল শান্তি চুক্তি করেছিল, কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যে দলটি আবার এক শত্রু হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে।
কুর্দিশ পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (এইচডিপি) পন্থীদের মতে সিজরে শহরে এই কারফিউ আরোপের পর ইতোমধ্যে অন্তত ২১ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছে।
A curfew has been in place in the province of #Cizre last week where 21 civilians have been killed #CizreUnderAttack pic.twitter.com/5WewE2LvQ5
— HDP English (@HDPenglish) September 10, 2015
গত দুই সপ্তাহ ধরে সিজরে প্রদেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে যেখানে ২১ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছে।
সরকার বলছে নিহত সকল ব্যক্তির পিকেকে-এর যোদ্ধা।
জুনে তুরস্কে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে এইচডিপি সংসদে প্রবেশের জন্য অর্জিত ভোট অর্জনে সক্ষম হয়, দলটি মোট ভোটের ১৩ শতাংশ অর্জনে সক্ষম হয় এবং সংসদে ক্ষমতাসীন জাস্টিস এন্ড রুলিং পার্টির (একেপি)-এর মূল্যবান একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় আঘাত হানে।
এইচডিপি-এর সংসদে অবস্থান সত্ত্বেও তারা জোটবদ্ধ হওয়ার চুক্তি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, যার ফলে ১ নভেম্বরে অন্তর্বতী নির্বাচনের নির্ধারণ করা হয়েছে।
জুনের নির্বাচনের ঠিক পর পরই ২০ জুলাই তারিখে এক আত্মঘাতি বোমা হামলায় সুরুক নামক শহরে ৩২ জন ব্যক্তি নিহত হয়। যাদের বেশীর ভাগ তরুণ কুর্দিশ একটি ভিস্ট যাদের বেশীর ভাগই সিরিয়ার কুর্দি অধুষ্যিত কোবানে শহরের ত্রাণ সরবরাহের সমন্বয়ের কাজ করছিল, যে সমস্ত কুর্দিরা স্থানীয় বিদ্রোহী এবং আইএসআইএস এর মাঝে লড়াই-এ ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে।
এই ঘটনা ক্ষোভ এবং এই অভিযোগকে শক্তিশালী করে যে আইএসআইএস–এর বিরুদ্ধে লড়াই–এ একেপি হচ্ছে সবচেয়ে নিষ্ক্রিয় শক্তি, বিশ্বাস করা হয় সুরুক-এর হামলার পেছনে আইএসআইএস রয়েছে।
বোমা বর্ষণের ঘটনার পর, পিকেকে এর জবাবে তুরস্কের দুজন সেনাকে হত্যা করে।
আর এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তুর্কি সরকার একই সাথে ইরাকে আইএসআইএস এবং পিকেকে-এর যেখানে অবস্থান শক্তিশালী সেখানে বোমা বর্ষণ করে। ২০১২ সালের শেষের দিকে যখন সেখানে শান্তি প্রক্রিয়া বজায় ছিল সে সময় চালানো হামলার পর এটাই তুরস্কের আবার প্রথম বোমা হামলা।
তুরস্কের অভ্যন্তরে, রাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমশ বাড়তে থাকে, এইচডিপির অফিস সমূহে ব্যাপক হামলার সংবাদ ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
আঙ্কারায় পার্টির সদর দপ্তরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়, দেশের অন্য বেশ কয়েকটি অফিসেও একই ঘটনা ঘটে।
VIDEO – Turkey: Nationalist protesters destroy pro-Kurdish HDP headquarters in Ankara http://t.co/1MfqLSni9T pic.twitter.com/xcooHcTDdn
— FRANCE 24 English (@France24_en) September 9, 2015
ভিডিও- তুরস্কঃ জাতীয়তাবাদীরা আঙ্কারার কুর্দি-পন্থী এইচডিপি এর সদর দপ্তর ধ্বংস করে।
এই ঘটনা সত্ত্বেও, এইচডিপি-এর একদল সদস্য সিজরে–এতে গিয়ে হাজির হয়, যাতে এই কারফিউ তুলে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালায়।
Here are some photos from the march: pic.twitter.com/CXMEL4MYcw
— HDP English (@HDPenglish) September 9, 2015
এই যাত্রার কিছু ছবি এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
এই অস্থিরতা এবং সংঘাতের সময়ে, বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে বের করে দেয়া হয়েছে, যার মধ্যে হল্যান্ডের ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ফ্রেডরিক গ্রেডিঙ্ক-এ রয়েছেন, যাদের কুর্দি সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের দায়ে বের করে দেয়া হয়েছে।