
২০১৩ সালে একটি সমাবেশ চলাকালীন একজন প্রতিবাদকারী আমি বাহরাইনকে ভালবাসি লেখা সম্বলিত একটি ঘোষণাপত্র বহন করছে। ছবি মোহাম্মদ সাঈদ-এর সৌজন্যে। মুদ্রণস্বত্ব: ডেমোটিক্স
সৌদী আরব এবং কুয়েত-এ শিয়াদের বিরুদ্ধে প্রচুর সংখ্যাক ব্যক্তিকে হত্যা করা ও শত শত ব্যক্তিকে আহত করা আইসিসের আক্রমণের পর বাহরাইনের দিকে জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোর নজর থাকা আশ্চয্যজনক নয়। বাহরাইনের মসজিদগুলো আইসিসের পরবর্তী আক্রমণের তালিকায় থাকতে পারে বলে করা অনুমান সামাজিক মাধ্যমগুলোতে প্রচারিত হচ্ছে।
গত মাসে পূর্ব সৌদী আরবের শিয়া মসজিদের উপর দু'টি পৃথক আক্রমণ, এবং সর্বশেষ শুক্রবারে কুয়েত শহরে শিয়াদের সর্ববৃহৎ মসজিদ ইমাম সাদিক মসজিদের উপর আক্রমণের দায় স্বীকার করেছে আইসিস।
আইসিসের সদস্য ওয়াদ্দা আলাজদি টুইটারে সরাসরি একটি হুমকি প্রদান করে বাহরাইনকে আগামী শুক্রবার একটি হামলার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলে:
ان شاء الله الجمعة الجايه بالبحرين .. يقولون الكوكتيل كويس ^__^ #تفجير_معبد_الصادق_بالكويت #الدولة_الإسلامية
— وضّاح الأزديّ (@89_waddah) June 26, 2015
ঈশ্বর চাইলে আগামী শুক্রবার (একটি জঙ্গী আক্রমণের কথা বলা হয়েছে) বাহরাইনে হবে। তারা বলে এটি একটি সুন্দর সংমিশ্রণ।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও উগ্রপন্থী উপসাগর-এর লেখক টবি ম্যাথিয়েসেন তার উদ্বিঘ্নতা প্রকাশ করেছেন:
I fear that the #Kuwait bombing means that IS really will try to target all Shia in the Arabian Peninsula. Are #Bahrain, #Dubai, #Oman next?
— Toby Matthiesen (@TobyMatthiesen) June 27, 2015
আমি শঙ্কিত যে #কুয়েত-এ বোমা মারার অর্থ এই যে আইএস সত্যিকার অর্থেই আরব উপদ্বীপে অবস্থিত সকল শিয়াদেরকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করার চেষ্টা করবে। এর পর কি #বাহরাইন, #দুবাই, #ওমান এর পালা?
ফেসবুক ও টুইটারে প্রকাশিত মুহাররক সংবাদ-এর একটি প্রকাশনা অনুযায়ী বাহরাইনীয় সরকার কর্তৃক সম্প্রতি নাগরিকত্ব বাতিল করা ৭২ ব্যক্তির মধ্যে থাকা একজন আইসিসের বাহরাইনীয় নেতা তুর্কী আল-বিনআলি ঘোষণা দিয়েছে যে আগামী শুক্রবার ২০১৫ সালের জুলাই মাসের ৩ তারিখে বাহরাইনে পরবর্তী আক্রমণ চালানো হবে:
عاجل| تركي مبارك البنعلي يعلن ان العمليةالقادمة بعد تفجير مسجد في الكويت ستكون في البحرين الجمعة القادمةتاريخ٢٠١٥/٧/٣ pic.twitter.com/W44Xu6lemt
— أخبار المحرق (@Muharraq_news) June 26, 2015
জরুরী: তুর্কী মুবারক আল-বিনআলি ঘোষণা করছে যে কুয়েতের একটি মসজিদে বোমা ফাটানোর পর পরবর্তী আক্রমণ আগামী শুক্রবার ০৩/০৭/২০১৫ তারিখে বাহরাইনে করা হবে।
এই ঘোষণাটি আনুষ্ঠানিক কিনা তা নিশ্চিত নয় তবে এই সংবাদটি ছোট ছোট আরবীয় সংবাদ সাইটগুলোতেও প্রকাশিত হয়েছে।
বাহরাইনে জঙ্গী আক্রমণ পরিচালনার বিষয়ে আইসিসের করা এটিই প্রথম ভুয়া হুমকি নয়, যার ফলে কোন কোন ব্যক্তি এবিষয়ে সন্দিহান। তার মানে এই না যে বাহরাইন তাদের সক্রিয়তা দেখাবে না এবং যে কোন সম্ভাব্য আক্রমণ থেকে মসজিদ ও জনগণকে রক্ষা করার জন্য কোন প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না।
মে মাসের ২২ তারিখে একজন আত্মঘাতী বোমারু সৌদি আরবের পূর্ব দিকের প্রদেশ কাতিফ-এর ইমাম আলি মসজিদের ভিতর নিজেকে উড়িয়ে দিয়ে ২৩জন ব্যক্তিকে হত্যা করে এবং ১০২ জনকে আহত করে। তার পরবর্তী শুক্রবার, মে মাসের ৩১ তারিখে, এই আত্মঘাতী বোমায় তিন জন লোক মারা যায়, যার দায় স্বীকার করে নিয়েছে আইসিস-এর সৌদি শাখা ওয়ালাইয়াত নাযদ্, এবং দাম্মামের কাছাকাছি একটি শিয়া মসজিদের বাইরে একজন আত্মঘাতী বোমারু নিজেকে উড়িয়ে দিলে প্রায় ১০ জন লোক আহত হয়।
এবং গত বছর নভেম্বরে পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশেরই আল আহসাতে ৮ জন লোক নিহত হয় যখন একজন বন্দুকধারী একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলাকালীন একটি শিয়া কম্যুনিটি সেন্টার আক্রমণ করে।
অনেকেই অনুভব করেন যে আল আহসা আক্রমণ, এবং কুয়েতে আক্রমণের পর সৌদি আরবের শিয়া মসজিদগুলোতে লক্ষ্য করে এই দু'টি আত্মঘাতী বোমা হামলাগুলো ঘটা ব্যহত করা যেত যদি কর্তৃপক্ষ এগুলো বন্ধ করার জন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতো।
জঙ্গী হামলা ঘটানোর জন্য বাহরাইন রাজনৈতিকভাবে একটি আদর্শ জায়গা। জনগণ কর্তৃক আরও বেশী রাজনৈতিক সংস্কারের দাবী করা ২০১১ সালের গণজাগরণের পর দেশটি ইতোমধ্যেই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনায় বিভাজিত হয়েছে। সরকার বিরোধটিকে সুন্নি নেতৃত্বের কাছ থেকে শিয়াদের ক্ষমতা দখলের লড়াই হিসেবে চালিয়ে দিয়েছিলো, সেই একই কাহিনী আমরা আন্তর্জাতিক মাধ্যমগুলোতেও প্রায়শ প্রতিধ্বনিত হতে দেখি। এছাড়াও বাহরাইন সৌদী আরব এবং কুয়েত উভয়ের থেকে আলাদা কারণ শিয়ারা এই ছোট উপসাগরীয় দ্বীপে সংখ্যাগরিষ্ঠ হবার প্রায় কাছাকাছি চলে গেছে এবং তাদেরকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করা সহজ কারণ চার বছর পূর্বে প্রতিবাদ শুরু হবার পর থেকে সরকার প্রায় প্রাত্যহিকই শিয়া প্রতিবাদকারীদের সাথে সড়ক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে।
যাইহোক, সকল নাগরিককে সমভাবে নিরাপত্তা প্রদান করার দায়িত্ব প্রথমত সরকারের তারপর জনগণের, এবং তা সাম্প্রদায়িক বা রাজনৈতিক আনুগত্যের উপর ভিত্তি করে নয়। যে সম্প্রদায়েরই হোক না কেন সকল বাহরাইনীয়দের জীবন নিরাপত্তা প্রদান করার অপারগতা নিজেই একটি সাম্প্রদায়িক বক্তব্য।
প্রশ্ন হলো বাহরাইনের মতো একটি দেশ কিভাবে আইসিসের বিরুদ্ধে আরও বড় একটি লড়াই চালিয়ে যাবে, যেখানে সম্প্রদায়ের উপর ভিত্তি করে নিয়মতান্ত্রিক ধারা গভীরভাবে প্রথিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মাধ্যমগুলো যেখানে দেশের মধ্যে বিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উসকে দিচ্ছে সেখানে জনগণ কিভাবে একতাবদ্ধ থাকতে পারে? আমরা কি আদৌ আইসিসকে তাদের অযৌক্তিক চরমপন্থার জন্য দায়ী করতে পারি যেখানে বাহরাইনের ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, গণমাধ্যম, এবং আইনগুলো এই কাজ করে যাচ্ছে?
বাহরাইনের সাংবাদিক খালিল বোহাজ্জা বাহরাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী খালিদ আলখালিফার সাথে এ বিষয়ে একটি আলোচনা শুরু করেছে:
@khalidalkhalifa ما هي الرسالة التي توجه للدواعش حين تنتهك حرمات مذهب معين من قبل مؤسسات الدولة، أليس السماح باستهدافهم
— Khalil Bohazza (@Khalil_Bohazza) June 26, 2015
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দ্বারা একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর পবিত্রতা যখন লঙ্ঘন করা হয় তখন আইসিসের কাছে গোষ্ঠীটিকে লক্ষ্য করে আক্রমণ শুরু করা ব্যাতীত আর কোন বার্তা পৌঁছায়?
আমার ভাই খালিল আপনি আমাকে খুব ভালভাবে চেনেন, আপনি কি ভেবেছিলেন যে আমি আইসিসের জঙ্গীবাদকে নিন্দা জানাই না। বাস্তবে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং তাদের নাগরিকত্ব রদ করা হয়েছে।
বোহাজ্জা বাহরাইনের সাম্প্রদায়িক চর্চা যেগুলোর কারণে দেশটি সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের ক্ষেত্রে একটি সহজ লক্ষ্যে পরিণত হচ্ছে সে সম্পর্কে আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন:
حين يُسب أبناء طائفة بالتلفزيون الرسمي، وتوظف الصحف المدعومة من الدولة للتعريض بمذهبهم، فهي موافقة الدولة ع استهدافهم من قبل الدواعش وغيرهم
— Khalil Bohazza (@Khalil_Bohazza) June 26, 2015
যখন একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষকে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে অভিশাপ দেয়া হয়, এবং রাষ্ট্র সমর্থিত সংবাদপত্রগুলোকে যখন তাদের সম্প্রদায়কে অপমান করার জন্য নিয়োজিত করা হয় তখন তা আইসিস ও অন্যান্যদের কাছে তাদেরকে আক্রমণ করার রাষ্ট্র কর্তৃক একটি অনুমোদন হিসেবে বিবেচিত হয়।
আরবী দৈনিক আল-ওয়াসাত সংবাদপত্রের প্রধান সম্পাদক মনসুর আলজামরি একটি পৃথক টুইটে বোহাজ্জার বার্তার উপর গুরুত্বারোপ করেছে:
سيندحر الارهاب عندما تصمت ابواق الكراهية. الارهابيون الذين فجروا مسجد الصادق بالكويت استمدوا قوتهم من فتاوى التكفير والتحريض العلني.
— Mansoor Al-Jamri (@MANSOOR_ALJAMRi) June 26, 2015
বিদ্বেষ পরিবর্ধকগুলো যখন বন্ধ করা হবে তখন সন্ত্রাসবাদ পরাজিত হবে। কুয়েতের আল-সাদিক মসজিদ উড়িয়ে দিয়েছিল যে সন্ত্রাসীরা তারা তাদের শক্তি পেয়েছে শিয়াদেরকে অবিশ্বাসী বলে ঘোষণা করা ফতোয়া এবং গণ প্ররোচনা থেকে।
বাহরাইনে গোষ্ঠীতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করা একটি নীতি হতে হবে, এটি একটি নমনীয় চয়ন হলে চলবে না। একটি দেশে যেখানে মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিকদের সরকারের সমালোচনা করা বা ‘সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে অপমান’ করার কারণে গ্রেফতার করা হয়, সেখানে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা দেশের মধ্যে অবস্থিত অন্য দলের মানুষদের বিরুদ্ধে যখন সহিংস ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানায় তখন কি তা আরও বেশী মারাত্মক হয় না? কোন কারণে সাম্প্রদায়বাদীদেরকে বাহরাইনের জন্য মাটির আরও গভীরে কবর খননের জন্য শাস্তি প্রদান করা হচ্ছে না?
লেখক ও কবি আলী আল সাঈদ আমার উদ্বেগ, এবং আরও অনেকের উদ্বেগের সাথে একাত্মতা পোষণ করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছে:
Time for #Bahrain to be genuine about tackling extremism/terrorism. There are hate-preachers that must be stopped and held accountable.
— Ali Al Saeed (@alialsaeed) June 28, 2015
চরমপন্থা/সন্ত্রাসবাদ সামাল দেয়ায় আন্তরিক হতে বাহরাইনের জন্য এখনই সময়। এখানে অনেক বিদ্বেষ-প্রচারণাকারী রয়েছে যাদেরকে থামাতে হবে এবং দায়ী করতে হবে।
কিন্তু সে সন্দিহান রয়ে যায়:
But govt looks away when it comes to certain factions/individuals, allowing #sectarianism to fester and grow. #bahrain
— Ali Al Saeed (@alialsaeed) June 28, 2015
কিন্তু যখন বিচ্ছিন্ন দল/ব্যক্তির বিষয়ে আসে তখন সরকার #সাম্প্রদায়িকতাকে পুঞ্জিভূত হতে ও বৃদ্ধি পেতে সুযোগ দিয়ে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মনে হয় আমার চিন্তাগুলোকে শুনতে পেয়েছে এবং দু'দিন আগে টুইট করেছে:
General Diroctor of Anti-corruption & Electronic Security: legal procedures against anyone misusing social media 2promote sectarian sedition
— Ministry of Interior (@moi_bahrain) June 26, 2015
দূর্নীতি দমন এবং ইলেক্ট্রনিক নিরাপত্তার সাধারণ পরিচালক: যে কেউ সামাজিক মাধ্যমগুলোকে সাম্প্রদায়িক বিদ্রোহ প্রসার করার কাজে অপব্যবহার করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে
PT: public could report misuse of social media cases by calling the hotline 992
— Ministry of Interior (@moi_bahrain) June 26, 2015
পিটি: জনগণ সামাজিক মাধ্যমগুলোর অপব্যবহারের ঘটনাগুলো সম্পর্কে ৯৯২ হটলাইন ব্যবহার করে নালিশ জানাতে পারবে
এই জাতীয় ব্যবস্থাগ্রহণের একনিষ্ঠতার বিষয়ে কেউ একজন সন্দিহান হতেই পারে, এবং বিস্ময় প্রকাশ করতে পারে যে সামাজিক মাধ্যমগুলোকে ব্যবহার করে বাহরাইনের সাম্প্রদায়িক সমস্যাকে গভীরতর করার চেষ্টা করায় যাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে তাদেরকে কি আদৌ সমভাবে শাস্তি প্রদান করা হবে, না কি তাদের গোষ্ঠীর উপর ভিত্তি করে করা হবে।
মানবাধিকার কর্মী সাইদ ইউসিফ সেই সন্দিহানদের মধ্যে একজন:
ما قيمة بيانات النظام بمحاربة الإرهاب و النظام يطبع على نفقته كتب تكفيرية تحمل فكر و عقيدة #داعش ليصنع لنا دواعش جدد pic.twitter.com/xOoIdDFTkN
— S.Yousif Almuhafdah (@SAIDYOUSIF) June 6, 2015
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা বিষয়ক সরকারের বিবৃতির কী মূল্য আছে যেখানে তারা তাদের নিজেদের খরচে ধর্মাবমাননার পুস্তক ছাপিয়ে এমন ধর্মোপদেশ উপস্থাপন করে যার মাধ্যমে আইসিস-এর নতুন সদস্যভুক্তি বৃদ্ধি পায়
এই টুইটটি হলো ‘সুন্নহ্-এর আলো এবং বৈধর্ম্যের আধার’ শীর্ষক একটি পুস্তকের প্রচ্ছদ এবং এটির পৃষ্ঠপোষকতা করেছে বাহরাইনের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান নির্দেশক। বাহরাইনে এখনো পর্যন্ত কাউকেই শাস্তি প্রদান করা হয় নি যারা শিয়া ধর্মের অনুসারীদেরকে বৈধর্ম্য পালনকারী হিসেবে অভিযুক্ত করছে এবং তাদেরকে ‘রাওয়াফেদ’ বলে ডাকছে, যেটি রাষ্ট্র-সমর্থিত মাধ্যম এবং মসজিদের বেদী থেকে উচ্চারিত শিয়াদেরকে বর্ণনা করার জন্য একটি মর্যাদাহানিকর নাম।
হুমকী পাওয়ার পর কী ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে সে সম্পর্কে বাহরাইনীয় কর্তৃপক্ষের বিবৃতি খুঁজতে গিয়ে আমি ব্যার্থ হয়েছি। তারা যে সকল বাহরাইনীয় নাগরিকদের জন্য উদ্বিঘ্ন এবং নিরাপত্তা শুধুমাত্র সড়কে প্রতিবাদকারীদেরকে শাস্তি দেবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয় তা প্রমাণ করতে এটিই বাহরাইনীয় কর্তৃপক্ষের জন্য যথার্থ সুযোগ।
আল সাঈদ এখনও বিস্ময়ের মধ্যে আছে যে সরকার সত্যিই সম্ভাব্য আক্রমণ রোধ করার জন্য কোন কিছু করছে কি না:
What will my government do to ensure shia mosques are protected now that #isis announced next attack in #Bahrain? #pt
— Ali Al Saeed (@alialsaeed) June 27, 2015
#বাহরাইনে পরবর্তী আক্রমণ হবে #আইসিস-এর এই ঘোষণার পর আমার সরকার এখন শিয়া মসজিদগুলোকে রক্ষা করার জন্য কী করবে?
আইসিসি যদি সকল মুসলমানদের শত্রু হয়, তবে বাহরাইনীয়দের একত্রিত হয়ে পারষ্পারিক শত্রুদের মোকাবেলা করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। যেহেতু শিয়াদের মসজিদগুলোকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করা হচ্ছে, আমরা কেন সকলের জন্য সুন্নি মসজিদগুলোকে উন্মুক্ত করে দেই না, এবং একত্রে প্রার্থনা করি না। বাহরাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রীরও একই ধারণা ছিল:
@robaa85111 @Fahad الخطأ التاريخي هو ان يكون هناك مسجد للسنة و مسجد للشيعة المسجد واحد لجميع المسلمين ، اما الاختلافات فهي فقهية تم تسييسها
— خالد بن احمد (@khalidalkhalifa) June 26, 2015
সুন্নিদের জন্য একটি মসজিদ এবং শিয়াদের জন্য একটি মসজিদ থাকা ঐতিহাসিকভাবে ভুল হয়েছে। একটি মসজিদ থাকবে এক এবং তা সকল মুসলমানদের জন্যই, পার্থক্যগুলোকে রাজনৈতিকীকরণ করা হয়েছে।
বাহাজ্জা এটিকে যা তাই হিসেবে উল্লেখ করেছে:
محاربة التطرف ليس بالشعارات، بل بتأسيس دول قائمة ع حكم القانون والمواطنة الكاملة #مسجد_الإمام_الصادق #تفجير_إرهابي_في_الكويت
— Khalil Bohazza (@Khalil_Bohazza) June 26, 2015
আমরা চরমপন্থাকে নীতিবাক্য দ্বারা মোকাবেলা করতে পারি না, বরং আইনের শাসন এবং পূর্ণ নাগরিকত্বের ভিত্তিতে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে পারি
বাহরাইনের সরকার সাম্প্রদায়িক বিভেদটিকে বোঝে, কারণ তারা এটিকে আরও জোরদার করার জন্য ভূমিকা পালন করেছে। কেন আমরা মসজিদগুলোকে একতাবদ্ধ করতে এবং চরমপন্থিদের বের করে দিতে একটি একটি নীতিমালা তৈরী করতে পারি না?
আমি এই ছবিটি একটি ব্যক্তিগত ইনস্টাগ্রাম হিসেব থেকে পেয়েছি যেটিকে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে প্রচারিত করা হয়েছে:
বাহরাইন সংবাদের উদ্ধৃতি দেয়া এই লেখাটিতে বলা হয়েছে, বাহরাইনে আইসিস-এর পক্ষে একটি সন্ত্রাসী হামলা চালানো কঠিন। লেখাটি বলে যে সারা দেশব্যাপী নিরাপত্তা চৌকিকেন্দ্রগুলোতে শক্তিবৃদ্ধি করা হয়েছে, এবং পরিস্থিতি পরীবিক্ষণ করতে সকল মসজিদের চারপাশে স্বশস্ত্র নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। বাহরাইন সংবাদ আরও ঘোষণা করে যে শুল্ক বিভাগ আইসিসের সাথে সংশ্লিষ্ট একটি সন্ত্রাসী দলকে গ্রেফতার করেছে, এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা যে ‘লক্ষ্যকৃত জায়গাগুলোকে’ অধ্যায়ন করতে প্রস্তুতি গ্রহণ করছিল তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। এটাই নিশ্চিত করে যে আইসিসের পরিকল্পনায় কুয়েতের পর এবার বাহরাইনের পালা।
যদিও নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্ব গিয়ে পড়ে সম্পূর্ণরুপে সরকারের উপর, তারপরও নিজেদের মসজিদ এবং দর্শনার্থীদের দিকে নজর খোলা রেখে নিজেদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করার মাধ্যমে তাদের ঐক্য ও সংহতি প্রদর্শন করার ভার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্ঠীগুলোর উপরই। আরও বৃহৎ পরিসরে, সাম্প্রদায়িক বার্তা প্রদান বন্ধ করা, ও শুধুমাত্র ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসারী হওয়ার কারণে সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে বিদ্বেষ উসকে দেয়া রদ করা তাদেরই দায়িত্ব।
আইসিস ইরান নয়, এটি সৌদী আরব নয়, এটি কোন দেশ নয়। আইসিস কর্তৃক কেউ কেউ খুন হবে কি না তা মূল্যায়ন করার জন্য আমাদের রাজনৈতিক পছন্দ অপছন্দগুলো কোন বিবেচ্য বিষয় হওয়া উচিত নয়।
বিষ্ফোরণের পর কুয়েত সুন্নি ও শিয়াদের মধ্যে একটি অবিশ্বাস্য সংহতি দেখিয়েছে। উভয় সম্প্রদায় থেকেই কুয়েতীয়রা তাদের নাগরিকদের মৃত্যুতে শোক পালন করতে পাশাপাশি প্রার্থনা করেছে।
সৌদী কৌতুকাভিনেতা ফাহাদ আলবুতাইরি এই ভিডিওটি টুইট করেছে:
بعد #تفجير_إرهابي_في_الكويت، يقف الكويتيون سنة وشيعة صفًا واحدًا في مسجد الإمام الصادق، المسجد الذي حصلت فيه الجريمة. pic.twitter.com/mok6xRRiul
— Fahad Albutairi (@Fahad) June 26, 2015
কুয়েতে আক্রমণের পর, যেখানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সেই ইমাম আল-সাদিক মসজিদে সুন্নি ও শিয়ারা একত্রে কুয়েতীয় হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
সত্যিকার অর্থে বিদেশী সন্ত্রাসীর হুমকির মুখে বাহরাইন কি ঐক্যবদ্ধ হয়ে একত্রে দাঁড়াবে নাকি আমরা একটি সুস্পষ্ট ভন্ডামীর আশ্রয় নেব যেখানে আমরা অন্য কোন জায়গায় সংঘটিত সহিংস কার্যাবলীর নিন্দা জ্ঞাপন করবো, কিন্তু আমাদের নিজেদের মাঠে সেটিকে ন্যায়সংগত প্রমাণ করবো?
আমরা জানি না যে আল-বিনআলির ঘোষণাটি কোন ফাঁকা হুমকি ছিল কি না, কিন্তু যদি তা না হয়ে থাকে তবে কী হবে? বাহরাইন কি প্রস্তুত?