- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমি জুড়ে আদিবাসীরা যোগাযোগের জন্য যে হাতের ইশারার ব্যবহার করে তার চল্লিশটি ইশারা শিখুন

বিষয়বস্তু: নাগরিক মাধ্যম, রাইজিং ভয়েসেস

এক বন্ধুর অঞ্চল ও রুক্ষ আবহাওয়ার পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট স্যান্ডি ডেজার্ট [1] নামে পরিচিত এই মরুময় প্রান্তর বসবাসের জন্য হতে পারে এক সীমাবদ্ধ এলাকা। জনবিরল এই এই এলাকায় যারা জীবনকে এগিয়ে নিয়ে চলে, তখন এখানে বসবাসরত এই ব্যক্তিরা যখন তাদের প্রতিবেশীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে চায়, তখন অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মরুভূমি থেকে প্রতিবেশীদের এই দূরত্ব তাদের জন্য এক চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভুত হয়।

বালগো, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া।

Hand আদিবাসী জনতা, যারা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই ভূমিতে বাস করে আসছে, মোবাইল এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির আগমনের পূর্ব থেকে তারা ঐতিহ্যগত তারা হাতের ইশারাকে যোগাযোগের এক মাধ্যম হিসেবে ব্যাবহার করে আসছে।

এই বিশেষ ধরণের যোগযোগ ব্যবস্থাকে চিহ্নিত করার জন্য, স্থানীয় এক রেডিও প্রোডিউসার উইলি ল্যাম্পার্ট, বালগো [2] সম্প্রদায়ের একদল উৎসাহী আদিবাসী নারী সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন, তারা একসাথে মিলে একটি ভিডিও তৈরি করেছে যা হাতের ইশারায় প্রকাশিত হয় এমন ৪০টি ভাবের কাহিনী তুলে ধরেছে।

ল্যাম্পার্ট যখন এই এলাকায় কাজ করেন তখন এই বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করার জন্য এক ভিডিও নির্মাণের ধারণা তার মাথায় আসে। এই সমস্ত হাতের ইশারার গুরুত্বের তিনি ব্যাখ্যা প্রদান করেন [3]:

এদিকে কয়েকজন অতিথি দ্রুত “এখন কি হবে”? ইশারায় যে আদর্শ রূপে প্রকাশ করা হয় তা শিখে ফেলেছে। বৈচিত্র্যময় বিভিন্ন ধরণের যে ডজন খানেক হাতের ইশারা যা ভাব বিনিময়ের সময় সূক্ষ্ম রূপে প্রকাশিত হয় সেগুলোকে গুলিয়ে ফেলা খুব সহজ। ভাষার ক্ষেত্রে কিছু উপাদান ঐতিহ্যগত ভাবে চলে আসছে,আর এর কিছু উপাদান সাম্প্রতিক উদ্ভাবন…হাতের ইশারা কেবল যোগাযোগের ক্ষেত্রে কেবল এক তথ্য আদান প্রদান নয়, একই সাথে সামগ্রিক ভাবে দেহের অঙ্গভঙ্গি, হাস্যরস এবং ব্যক্তিগত ব্যক্তিত্বের প্রকাশ।

এবিসি ওপেন এবং ফাস্ট ল্যাঙ্গুয়েজ অস্ট্রেলিয়া আয়োজিত মাতৃভাষা প্রকল্পের [4] এক অংশ এই ভিডিওতে একই সাথে এটি স্থানীয় কুকাৎজা [5] ভাষা তুলে ধরা হয়েছে, এটি ক্রমশ বিলুপ্ত বা ক্ষয়িষ্ণু হতে থাকা ভাষা, যে ভাষায় এখন ১,০০০ জনেরও কম ব্যক্তি কথা বলে থাকে। এই ভিডিওতে যে নারী হাতের ইশারায় যে ভাব প্রকাশ করছে কুকাৎজা ভাষায় তার অর্থ বিশ্ব, আর এটি নিচে ইংরেজিতে অনুবাদ করে দেওয়া হয়েছে।

লামপ্রে এক ব্লগ পোস্টে লিখেছে যে ভিডিওটি তৈরি করার সময় [6] সে এবং ওই মহিলা কতটা মজা করেছে।

এই ভিডিওতে তুলে ধরা পায়ি পায়ি এবং মানাইয়ার [7] মত প্রবীণ মহিলারা নিজ সম্প্রদায়ের মাঝে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কাপুলুলানগু নারী ও সংস্কৃতি কেন্দ্রের এক সদস্য হিসেবে, কি ভাবে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে এই বিষয়টি নিয়ে যাওয়া হবে সেটি নির্ধারণে তারা অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছে। এই কেন্দ্রের ওয়েবসাইটে [8] বিবৃতি প্রদান করা হয়েছে “কাপুলুলানগু যদি কিছু না ঘটে থাকে তাহলে বয়োবৃদ্ধদের ছাড়াও তা হতে পারে”।

কাপুলুলানগু প্রবীণের মরুভূমিতে জন্মগ্রহণ করেছে, সেখানে বেড়ে উঠেছে এবং পুরোনো পদ্ধতিতে প্রশক্ষিণ গ্রহণ করেছে পূর্বপূরুষের ভূমিতে কারতিয়া/আদিবাসী নন এমন ব্যক্তিদের আসার পূর্বে। এই বিষয়টি তাদের এক প্রাচুর্যে ভরা কাহিনীর মত সম্পদ, দক্ষতা এবং সংস্কৃতিক জ্ঞানের রক্ষণাবেক্ষণ কারী হিসেবে গড়ে তুলেছে, তারা তাদের সম্পদ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চায় [ …] প্রবীণের চায় তাদের তরুণ প্রজন্ম গড়ে উঠবে শক্তিশালী এবং প্রাণবন্ত হিসেবে, তারা গর্বিত এবং জ্ঞান সম্পন্ন হয়ে উঠবে ঠিক তাদের পূর্বপুরুষদের মত, তারা তাদের নাগরিকদের আইন এবং সংস্কৃতি জ্ঞান রক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করবে, যাতে তারা বদলাতে থাকা পৃথিবীতে আরো ভাল ভাবে টিকে পারে। একজন ব্যক্তির নিজস্ব আইন এবং সংস্কৃতি এমন এক আঠা যা জীবনকে একসাথে ধরে রাখে।

নিজেদের কাহিনী নিজেদের ভাষায় তুলে ধরার জন্য স্থানী প্রডিউসারদের সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে এক দল তৈরি করার মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীর এক সম্প্রদায় নিশ্চিত করছে যে তাদের সমৃদ্ধ জ্ঞান পরবর্তী প্রজন্মের কাছে প্রদান করা হচ্ছে।