রাশিয়ায় এই অস্কার বিজয়ী ‘ডোনাল্ড ডাক’ নামক কার্টুনের প্রদর্শন অবৈধ

Screen capture: Walt Disney, "Der Fuehrer's Face" (1942) / YouTube

ইউটিউবে রাখা ওয়াল্ট ডিজনির ১৯৪২ সালে নির্মিত “ডের ফুয়েরার ফেস” নামক কার্টুনের স্ক্রিনশট।

অনলাইনে অবৈধ উগ্রবাদী উপাদান ছড়িয়ে দেয়ের তোমস্কে দুজন ব্যক্তি অভিযুক্ত হয়েছে, যারা শ্বেত এক আধিপত্যবাদী ব্যান্ডের গান এবং একই সাথে ১৯৪২ সালে নির্মিত ওয়াল্ট ডিজনির ফ্যাসিবাদ বিরোধী কার্টুন-ছবি “ডের ফুয়েরের ফেস” আপলোড করেছিল, যে কার্টুনের তারকা হচ্ছে ডোনাল্ড ডাক এবং সেটি ওই একই বছর সেরা কার্টুন হিসেবে অস্কার পুরস্কার লাভ করে

উভয় ব্যক্তি তাদের দোষ স্বীকার করেছে এবং এই ঘটনায় তারা অনুতপ্ত, তারা দাবী করেছে যে ২০১৩ সালের গ্রীষ্মকালে তারা এক রসিকতা হিসেবে এই লিঙ্ক তুলে ধরে। বিচারক তাদের উভয়কে ৩,০০০ রুবেল (প্রায় ৪০ ডলার) জরিমানা করে এবং ১৫ দিনের কারাবাস প্রদান করে, যা রাশিয়ার অপরাধ দমন আইনের ২০.২৯ ধারা অনুসারে উগ্রবাদী কোন কন্টেন তৈরি করা কিংবা সেগুলোর বিতরণ করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি।

ডিসেম্বর ২০১০ থেকে রাশিয়ায় ডোনাল্ড ডাক-এর কার্টুন প্রদর্শন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়, এই ঘটনা তখন ঘটে যখন কামচাটকার এক আদালত অন্য ডজন খানেক বর্ণবাদী ভিডিওর সাথে এই কার্টুনকে অবৈধ উগ্রবাদী উপাদান হিসেবে জাতীয় এক তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করে, এতে আবিস্কৃত হয় যে দৃশ্যত এগুলো সের্গেই সেমানভ নামের এক ব্যক্তি প্রদর্শন করেছে। (দুর্ঘটনাক্রমে তোমাস্কের সরকারি আইনজীবী ডোনাল্ড ডাক-এর নামের এক ভিন্ন অনুবাদ করে ফেলে,উক্ত নামটিও কেন্দ্রীয় উগ্রবাদী উপাদানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, এতে কার্যত মনে হয় যে ভিন্ন নামের দুটি ভিন্ন কার্টুন তালিকায় অর্ন্তভুক্ত)।

Screen Shot 2015-09-06 at 1.25.17 PM

“জাপানি শত্রু” হিসেবে কার্টুনে আঁকা বর্ণবাদী চিত্র। ইউটিউবে আপলোড করা ১৯৪২ সালে নির্মিত ওয়াল্ট ডিজনির “ডের ফুয়েরার ফেস” নামক কার্টুন-এর স্ক্রিনশট।

মস্কো ভিত্তিক এক অপরাধ পর্যবেক্ষক সংগঠন শোভার মতে সেমেনভের অন্যান্য সংগৃহীত উপাদানের সাথে ডিজনির এই কার্টুন নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়া হচ্ছে এর প্রমাণ যে মনে হয় না নিষিদ্ধ করার আগে কর্তৃপক্ষ সেমেনভের সংগৃহীত প্রতিটি ভিডিও দেখেছে। শোভার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে এই ঘটনা আরো একবার প্রদর্শন করল যে অপ্রয়োজনীয়তা এবং এমনকি কেন্দ্রীয় তালিকার বিপদ সম্বন্ধে, যা কিনা এক পদ্ধতি হিসেবে আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে সবচেয়ে সেরা সমাধান হচ্ছে একসাথে সবগুলোর উপর চড়াও হওয়া।

ডের ফুয়েরার ফেস নামক চলচ্চিত্রে দেখানো হয় যে ডোনাল্ড ডাক এক একনায়কের রাজ্যে বাস করছে এবং তাকে বন্দুকের মুখে একটি কারখানায় বোমা বানানোর কাজ করতে হয়। মৃত্যুর মত হুমকির কারণে সে এ্যাডলফ হিটলারের প্রতিটি ছবিতে স্যালুট প্রদান করতে বাধ্য হয়। একই সাথে এই কার্টুনে জাপানকে এক বর্ণবাদী চেহারায় আঁকা হয়েছে, যা যুদ্ধকালীন সময়ে দুটি রণাঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচারণার প্রচেষ্টার বিষয়টি তুলে ধরে। এই চলচ্চিত্রের শেষ দৃশ্যে ডোনাল্ড ডাক এই উপলব্ধি নিয়ে জেগে ওঠে এতক্ষন যা ঘটেছে এ সবই ছিল তার স্বপ্ন, এবং বাস্তবতা হচ্ছে সে যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছে, এরপর সে স্ট্যাচু অব লিবার্টির এক ক্ষুদ্র সংস্করণকে আলিঙ্গন করে, এবং শেষ কথাটি উচ্চারন করে “আমি আনন্দিত যে আমি যুক্তরাষ্ট্রের এক বাসিন্দা”।

1 টি মন্তব্য

এই জবাবটি দিতে চাই না

আলোচনায় যোগ দিন -> muniaamoni

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .