জাপানে গ্রীষ্মের আতশবাজি উৎসব

Kobe Fireworks

২০১৩ সালে কোবে-তে অনুষ্ঠিত “ফ্লোটিং ফায়ারওয়ার্ক ফেস্টিভ্যাল”-এর আতশবাজি। ফ্লিকার ব্যবহারকারী জিয়াওজুন ডেং-এর সৌজন্যে ছবিটি পাওয়া। সিসি বিওয়াই ২.০ লাইসেন্সের আওতায় ব্যবহার করা হয়েছে।

জুলাই ও আগস্ট মাস গরমকাল হিসেবে পরিচিত। ছাত্র-ছাত্রীরা এ সময়ে গ্রীষ্মের ছুটি পান। ছুটি কাটাতে তারা পৈত্রিক বাড়িতে চলে যান। এ সময়ে পুরো জাপান জুড়েই বিপুল উৎসব শুরু হয়ে যায়।

গ্রীষ্মের এই সময়ে সবচে’ বেশি দেখা যায় আতশবাজি। পুরো জাপান জুড়েই আতশবাজি উৎসবের আয়োজন করা হয়। কোনো কোনো উৎসব একঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে।

কখনো কখনো আতশবাজি উৎসবে প্রতিযোগিতার আয়োজনও থাকে। তখন শিল্পীরা তাদের দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ পান।

福井花火。

A photo posted by Fujio Kojima (@fujiwo) on

Fireworks in Fukui Prefecture. (August 1st, 2015)

ফুকাই এলাকায় আতশবাজি উৎসব। (১ আগস্ট ২০১৫)।

家族で福井花火。

A photo posted by Fujio Kojima (@fujiwo) on

The family went to see the fireworks display. (August 1st, 2015)

পরিবারের সবাই মিলে আতশবাজি প্রদর্শনী দেখতে গিয়েছিলাম। (১ আগস্ট ২০১৫)

আপনি যদি জাপানের আতশবাজি উৎসবের ইতিহাস নিয়ে একটু খোঁজ-খবর নেন, তাহলে আশ্চর্য হয়ে যাবেন! এটির শুরু ১৬শ’ শতকে, ইউরোপিয়ানদের হাতে। তারাই জাপানিদের আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার শিখিয়েছিল।

এডো-হিরোশিজের সুমিদা নদীর রিয়োগোকু সেতুতে আতশবাজি উৎসব। উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে ছবিটি নেয়া হয়েছে।

কিছু গবেষক অবশ্য বলছেন, জাপানে ব্যাপক আতশবাজির প্রচলন ঘটেছিল ১৭শ’ শতকে, এডো-তে (বর্তমান টোকিও)। সে সময়ে দুর্ভিক্ষ এবং কলেরা আক্রান্তদের স্মরণে এটি অনুষ্ঠিত হতো।

এমনিতে গ্রীষ্মকাল জাপানে আনন্দের সময় হিসেবে পরিচিত। তখন নানা ধরনের উৎসবের আয়োজন হয়। কিছু কিছু আয়োজন অনুষ্ঠিত হয় সমুদ্র সৈকতে। আতশবাজি উৎসবও অনুষ্ঠিত হয়। তবে এটা সাধারণত ও-বোন এর সময়ে অথবা কাছাকাছি সময়ে আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ সময়ে অনেক জাপানি পরিবার মৃতদের স্মরণ করে।

অনেক সময় ও-বোন অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবেই আতশবাজি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়ে থাকে।

নিচের ভিডিওতে মধ্য আগস্টে অনুষ্ঠিত ও-বোন অনুষ্ঠানের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা তোরো নাগাশি’র জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এতে কাগজের প্রদীপ বানিয়ে নদীর স্রোতের ভাসিয়ে দেয়া হয়। এই প্রদীপগুলোকে মৃত আত্মার গাইড বলা হয়। এরা মর্ত্যলোকে আত্মার পথ-প্রদর্শকের ভূমিকা নিবে।

এই আয়োজনে অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে জাপানিরা যেন পরিবারের পূর্বপুরুষদের কাছে চলে যায়।

তবে সবসময় যে আগস্টের ও-বোন এর ছুটিতে আতশবাজির আয়োজন করা হয়, তা কিন্তু নয়। জাপানে জুলাই-আগস্ট মাস জুড়েই আতশবাজি উৎসব হয়ে থাকে।

PLA Art of Fireworks festival, Tondabayashi, Osaka.

ওসাকার তন্দাবায়াশির আতশবাজি উৎসবের পিএলএ শিল্পকর্ম।

জাপানের কিছু কিছু অংশে “ফায়ার উৎসব” অনুষ্ঠিত হয়, যা আসলেই বিস্ময়কর। যেমন উত্তর কিয়োটো থেকে দু’ঘণ্টার দূরে সমুদ্র উপকুলে বাস করা ওআই (Oi) সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ করা যায়। তারা প্রতি বছর আগস্ট মাসে এই উৎসবের আয়োজন করে থাকে। উৎসবে তারা পেল্লাই সাইজের কাঠের মশাল তৈরি করে। সেখান থেকে যে আলোকচ্ছটা বের হয়, তা দেখতে সত্যিই মনোমুগ্ধকর।

ও-বোনের ছুটিতে পরিবারের সবাই মিলে আতশবাজি উৎসব দেখার একটা ঝোঁক দেখা যায়। মৃত আত্মাদের জন্য আয়োজিত ও-বোন উৎসবে অংশ নিতে পরিবারের সবাই পৈত্রিক ভিটায় ফিরে আসেন। পরিবারের সবার একত্রিত হওয়ার সময়ও গ্রীষ্মকাল। আর তখন পরিবারের সবাই মিলে আতশবাজি দেখা স্মৃতির মণিকোঠায় একটা উল্লেখযোগ্য সঞ্চয় হয়ে থাকে।

#花火 #江戸川 #花火大会 #綺麗だった

A photo posted by Eri Hirakawa (@eringiccho) on

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .