এই পোস্টটি ইরানভয়েসেস ডট ওআরজি তে প্রথম প্রকাশিত হয় এবং ইংরেজিতে অনুবাদ কড়া হয়। প্রচারসূচী শেয়ার চুক্তির একটি অংশ হিসেবে এখানে এটি প্রকাশিত পুনরায় প্রকাশিত হল।
ইরানের কুর্দিস্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে কুর্দি ভাষা ও সাহিত্য নামে নতুন একটি বিভাগ খোলা হয়েছে। বিভাগটির নতুন চেয়ারম্যান বখতিয়ার সাজ্জাদি গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, এই বিভাগে ৪০ জন শিক্ষার্থী আগামী অক্টোবর মাস থেকে তাঁদের পড়াশুনা শুরু করবেন।
কুর্দ প্রেসকে সাজ্জাদি বলেছেন, বিজ্ঞান, গবেষণা ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে বিভাগটি চালু করা হয়েছে। কুর্দিস্তান বিশ্ববিদ্যালয়টি কুর্দিস্তান প্রদেশের বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়, যা ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
এই প্রথম কোন ইরানি বিশ্ববিদ্যালয় ইরানের ভিতরে অধ্যয়নের একটি পোস্ট-মাধ্যমিক স্তর হিসেবে কুর্দি ভাষা বিষয়টি পড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। তুর্কমেনী, বেলুচ, এবং আজেরির পাশাপাশি, ইরানের অনেক সংখ্যালঘু ভাষার মধ্যে কুর্দি একটি। এই ভাষাতে কথা বলার, শেখানোর এবং প্রকাশ করার স্বাধীনতার জন্য রীতিমত পাল্লা দিতে হচ্ছে।
ইরানের উপজাতি কুর্দিরা প্রধানত উত্তর-পশ্চিম ইরানে, ইরাকি ও তুর্কি সীমানার খুব কাছে বসবাস করে থাকে। হিসাব অনুযায়ী, ইরানে প্রায় ৬ থেকে ৭ মিলিয়ন উপজাতি কুর্দি রয়েছে। ইরানের কুর্দিদের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিতর্ক করার ইতিহাস রয়েছে। সেই কর্তৃপক্ষ, যারা মাঝে মাঝেই বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতাসমূহ অস্বীকার করে থাকে।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সংখ্যালঘুদের ভাষাগুলো কায়েম করার ওয়াদা করে মধ্যপন্থী প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ক্ষমতায় বসেছেন। ইরানের শিক্ষা ব্যবস্থায় সাধারণত ইরান আত্তীকরণ নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। কুর্দি কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবিত কুর্দি ভাষা ও সাহিত্যে পোস্ট-মাধ্যমিক শিক্ষা প্রবর্তনের পূর্ববর্তী অনুরোধটি একসময় প্রত্যাখ্যাত করা হয়েছিল। বিবিসি ফার্সি অনুযায়ী, যেহেতু বিরোধীদল বিতর্ক করে বলেছিল যে সংখ্যালঘু ভাষায় শিক্ষা প্রদান জাতীয় পরিচয়কে বিপন্ন করে তুলবে, তাই এটি পরবর্তীতে বিবাদের বিষয়ে পরিণত হয়।
রুহানির সংশ্লিষ্ট ফেইসবুক পেইজে গত ২৪ জুলাই তারিখে কুর্দি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ প্রবর্তনের খবর ঘোষণা করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রুহানির এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কেউ কেউ সমালোচনা করেছেন, আবার কেউ কেউ উৎসব উদযাপন করেছেন। প্রেসিডেন্টের পেইজে ইরানিদের অনেকে তুর্কি ভাষার অধিকারের জন্য একই ধরণের উদ্যোগ না নেয়ার জন্য সরকারের সমালোচনা করেছেন। অপরদিকে ব্যবহারকারীদের কেউ কেউ উল্লেখ করেছেন যে সরকার কুর্দি ইরানিদের বেকারত্ব পরিস্থিতির উন্নয়নে খুব সামান্যই কাজ করেছে। তবে, অন্যান্যরা নির্বাচনী ইশতেহারে দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য প্রেসিডেন্টের প্রশংসা করেছেন।