
মালয়েশিয়াতে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়া অন্যতম জনপ্রিয় একটি ছবি। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, ৭ শত মিলিয়ন মার্কিন ডলার সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর পরই ছবিটিতে তাঁকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
মালয়েশীয়ার জনগণ ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি অনুসন্ধানী রিপোর্টে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। রিপোর্টে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের দুর্নীতির বিষয়টি উঠে এসেছে। ফলশ্রুতিতে এ সম্পর্কিত #১এমডিবিমুভিস নামের একটি টুইটার হ্যাশট্যাগ ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এটি মূলত ১টি মালয়েশিয়া উন্নয়ন বারহাদ (১এমডিবি) নামের একটি রাষ্ট্র-পরিচালিত বিনিয়োগ কোম্পানির সাথে জড়িত আর্থিক জগাখিচুড়িকে বোঝাচ্ছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন অস্বাভাবিক আর্থিক লেনদেনের সাথে জড়িত রয়েছে।
গত ২ জুলাই তারিখে মার্কিন সংবাদপত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করে, ১এমডিবি এর মাধ্যমে নাজিবের ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (২.৬ বিলিয়ন রিঙ্গিত) স্থানান্তর করা হয়েছে।
নীচে কয়েকটি জনপ্রিয় #১এমডিবিমুভিস, যেখানে অনেক মালয়েশীয় উপহাস করেছেনঃ
epic siot poster ni! #1mdbmoviespic.twitter.com/tNhgLZn1Lk
— Zhu M (@zhukl) July 8, 2015
মহাকাব্যিক পোস্টার! রিঙ্গিতের রাজা!
রিঙ্গিত মালয়েশিয়ার মুদ্রা
#1MDBMovies: Maleficent Rosmah pic.twitter.com/bUgByenX8y
— GuruChat (@Guruchat) July 6, 2015
#১এমডিবিমুভিসঃ অপরাধী রোস্মাহ
রোস্মাহ হচ্ছেন নাজিবের স্ত্রী এবং এই দুর্নীতির অভিযোগের সাথে সম্পর্কিত।
Fantastic 4 : Rise of the RON95, toll, and many more #1MDBmoviespic.twitter.com/lI7ZNQVvxG
— Syükri Kháiri (@SY7KRI) July 6, 2015
কল্পনাপ্রসূত ৪: আরওএন, উপশুল্ক এবং আরো অনেক কিছুর উত্থান
আর্থিক কেলেঙ্কারীর অভিযুক্ত প্রধান ষড়যন্ত্রকারী উপরে প্রদর্শিত হয়েছে।
#1MDBMovies: Man of Steal. pic.twitter.com/ydqAiTR1gP
— GuruChat (@Guruchat) July 6, 2015
#১এমডিবিমুভিসঃ লৌহ মানব
নাজিব তাঁর ফেইসবুকে লিখেছেন, মিথ্যা প্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। এটিকে তিনি সরকার পতনের উদ্দেশ্যে বিদেশীদের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের একটি চক্রান্ত বলে অভিযোগ করেছেনঃ
বানোয়াট এই অভিযোগের পক্ষে কোনো পর্যায়েই কোনো প্রমাণ নেই। আমরা যেসব অভিযোগ শুনেছি তাঁর সবই ফাঁস হওয়া নথিপত্র এবং নামবিহীন তদন্তকারীরা উপর ভিত্তি করে তৈরি। ফাঁস হওয়া এসব নথিপত্রের উৎস একবারও কোথাও দেখানো হয়নি। এমনকি এসব নথিপত্র বৈধ কর্তৃপক্ষের কাছে যাচাই বাছাইয়ের জন্যও পাঠানো হয়নি।
প্রতিবেদনটির সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে তার আইনজীবীরা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন এবং নাজিব সংবাদপত্রটির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করতে পারেন বলে আভাস দিয়েছেনঃ
১৪ দিনের ভেতর আমরা এই চিঠির উত্তর চাই এবং দয়া করে আমাদের জানান আপনারা আইনি প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণ করতে মালয়েশিয়ায় কোন আইনজীবী নিয়োগ করেছেন কিনা?
নাজিবের বিরুদ্ধে ফাঁস হওয়া তথ্য প্রকাশ পাওয়ার কয়েকদিন পর ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকাটি কিছু নথিপত্র প্রকাশ করেছে যা এই প্রতিবেদন লেখার মূল ভিত্তি হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছেঃ
The documents showing alleged transfers of almost $700 million to Najib’s bank accounts http://t.co/0cfxTOBsWfpic.twitter.com/ff4PWnuQIO
— Wall Street Journal (@WSJ) July 7, 2015
এই নথিপত্রে নাজিবের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ৭ শত মিলিয়ন মার্কিন ডলার স্থানান্তরের অভিযোগ দেখানো হয়েছে।
#১এমডিবিমুভিজ হ্যাশট্যাগটি অনলাইনে আলোড়ন তোলার পর পরই মালয়েশিয়ার যোগাযোগ এবং মাল্টিমিডিয়া কমিশন এই মিথ্যা প্রতিবেদনের প্রচার থামাতে জনগণকে সতর্ক করে দিয়েছেঃ
হোয়াটসএ্যাপ এ্যাপ্লিকেশন সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ১এমডিবি এর তদন্তের উপর কোনো ধরণের মিথ্যা খবর অথবা ভাবনাচিন্তা, বানোয়াট ছবি শেয়ার করা বন্ধ করতে জনগণকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
মুক্ত মত প্রকাশের ক্ষেত্রে বিবৃতিটি একটি হুমকি বলে অনেকেই মনে করেন, যদিও সংস্থাটি পরে ব্যাখ্যা দিয়েছে যে বিদ্রুপ বা প্যারডি অবৈধ নয়।
নাজিব ১এমডিবি ঋণ কেলেঙ্কারির একটি নিরপেক্ষ তদন্ত সম্পন্ন করার অঙ্গীকার করেছেন, তবে বিরোধীদল ইতিমধ্যে তার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে। এরপর মালয়েশিয়ার ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা প্রমাণ করেছেন যে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, এবং কুশাসনের মতো গুরুতর রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে তারা কার্যকরভাবে ব্যঙ্গকৌতুক করতে পারেন।